Pooja Vastrakar: গলি ক্রিকেট থেকে এশিয়ান গেমসের ফাইনালে, পূজা বস্ত্রকারের এই সফর কেমন ছিল?

Asian Games 2023, Cricket: পূজা বস্ত্রকার (Pooja Vastrakar), তিনি ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট টিমের সঙ্গে বর্তমানে হানঝাউতে রয়েছেন। গলি ক্রিকেট খেলে এক সময় কাটত পূজার। সেই পূজা এ বারের এশিয়ান গেমসে ভারতকে ফাইনালে তুলতে সাহায্য করেছেন। তাঁর জীবনের কাহিনি অনুপ্রেরণা দেবে সকলকেই।

Pooja Vastrakar: গলি ক্রিকেট থেকে এশিয়ান গেমসের ফাইনালে, পূজা বস্ত্রকারের এই সফর কেমন ছিল?
Pooja Vastrakar: গলি ক্রিকেট থেকে এশিয়ান গেমসের ফাইনালে, পূজা বস্ত্রকারের এই সফর কেমন ছিল?Image Credit source: Twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 25, 2023 | 12:02 AM

হানঝাউ: গলি থেকে রাজপথে… ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটার পূজা বস্ত্রকারের (Pooja Vastrakar) জন্য এ কথা বলতেই হয়। আরও ভালো করে যদি বলা যায়, তা হলে বলতে হয়, গলি ক্রিকেট থেকে এশিয়ান গেমসের (Asian Games 2023) ফাইনালে। সুপার সাব পূজাই ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলকে এশিয়ান গেমসের ফাইনালে তুলেছে। আসলে হানঝাউ গেমসে ক্রিকেটে ভারতের মেয়েদের যে টিম রয়েছে তাতে স্ট্যান্ড বাই প্লেয়ারের তালিকায় রয়েছেন পূজা। সেই পূজাই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। তার সদ্ব্যবহার করেছেন মধ্যপ্রদেশের বিলাসপুরের পূজা। তাঁর দাপুটে বোলিংয়েই বাংলাদেশকে হারিয়ে এশিয়ান গেমসের ফাইনালে উঠেছে ভারত। আজ, ২৫ সেপ্টেম্বর এশিয়ান গেমসে মেয়েদের ক্রিকেটের ফাইনাল। আজকের দিনটা ভারত ও শ্রীলঙ্কা মহিলা টিমের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। পূজার কাছেও আজকের দিনটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আজ তাঁর ২৪তম জন্মদিন। এ বার দেখার সেমিফাইনালে ম্যাচ জেতানো পারফর্ম্যান্সের পর ফাইনালে পূজা সুযোগ পান কিনা। তার আগে TV9Bangla Sports এর এই প্রতিবেদনে জেনে নিন পূজার জীবনের কাহিনি। যা অনুপ্রেরণা দেবে সকলকেই।

এক সময় মধ্যপ্রদেশের বিলাসপুরে গলি ক্রিকেট খেলে সময় কাটত পূজার। পাড়ার মেয়েরা ক্রিকেট খেলত না বলে টিমও ছিল না। তাই ছেলেবেলায় ছেলেদের সঙ্গেই ক্রিকেট খেলতেন পূজা। তাঁর বাবা বন্ধন রাম ছিলেন বিএসএনএলের কর্মচারী। ছেলেবেলা থেকেই পূজা ক্রিকেট অন্ত প্রাণ হলেও, তাঁর বাবা কোনও দিনই পূজার খেলা নিয়ে বিশেষ আগ্রহ দেখাননি। কিন্তু মেয়েকে কখনও নিষেধও করেননি।

সাত ভাই-বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট পূজা। তাঁর দিদি ঊষা অ্যাথলেটিক্সের সঙ্গে যুক্ত। তিনিই বোনের ক্রিকেট খেলাকে সমর্থন করতেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পূজার বাবা বন্ধন বলেন, ‘মাত্র চার বছর বয়স থেকে পূজা ক্রিকেট খেলে। আমি কখনও ভাবিনি ও ভারতের হয়ে খেলবে। অবশ্য ও আমাকে আগে বলেছিল, বাবা দেখবে একদিন আমি ভারতের হয়ে খেলব।’

১০ বছর বয়সে মাকে হারান পূজা। তারপর তিনি ক্রিকেটের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ানো সবে শুরু করেছিলেন। কিন্তু তাঁর দিদি পূজাকে তা করতে দেননি। পূজার দিদি ঊষা বলেন, ‘আট বছর বয়স থেকে গলিতে ছেলেদের সঙ্গেই ক্রিকেট খেলত পূজা। তার পরে আশুতোষ শ্রীবাস্তব স্যার ওকে একদিন মাঠে খেলতে দেখেন। তিনি আমাদের বাড়ি এসে বাবাকে বলেন, পূজাকে ওনার অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করানোর জন্য। মা মারা যাওয়ার পরে পূজা অ্যাকাডেমিতে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। অবশ্য আমি ওকে বোঝাই। তারপর একপ্রকার জোর করে ওকে আবার ক্রিকেটে ফেরাই। তারপর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি ওকে। মন দিয়ে শুধু খেলেছে। আজ ওর কৃতিত্বে আমরা সকলে গর্বিত।’

পূজার কোচ আশুতোষ শ্রীবাস্তব জানান, তিনি শাহদলের এক মাঠে দেখেন এক বাচ্চা টেনিস বলে ছক্কা হাঁকাচ্ছে। তিনি অপর এক বাচ্চাকে ডেকে জানতে চান ওই ছেলেটি কে? সেই বাচ্চাটি জানায় যে এভাবে খেলছে সে ছেলে নয়, মেয়ে। আশুতোষ পূজার পাওয়ার হিটিং ক্ষমতা দেখে অবাক হয়ে যান। এরপরই তিনি পূজাকে নিজের অ্যাকাডেমিতে নিয়ে আসেন। সেখানে কখনও তিনি মেয়েদের সঙ্গে পূজাকে ট্রেনিং দিতেন না। ছেলেদের সঙ্গেই তাঁকে খেলাতেন আশুতোষ। তাঁর কোচিংয়ে পূজা আরও তীক্ষ্ণ হন। এবং তাঁর জাতীয় দলে খেলার স্বপ্নও পূরণ হয়েছে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে পূজা ১৫ লক্ষ টাকার একটি গাড়ি বাবাকে উপহার দিয়েছিলেন। পূজার বাবা অবশ্য মেয়ের এই খরচে খুশি হননি। এরপর মহিলাদের আইপিএলে পূজাকে যখন ১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স কিনেছিল তখনও তাঁর বাবা চেয়েছিলেন, সেই টাকা পূজা যেন ব্যাঙ্কে জমা রাখেন। ফিক্সড ডিপোজিট করেন। এত খরচ যেন না করেন। কিন্তু পূজা নিজের মতো করে চেষ্টা করেন তাঁর বাবাকে সাহায্য করার।