Rinku Singh: রিঙ্কুর ৫ ছক্কা শেষ করে দিয়েছিল জীবন, কী ভাবে মাঠে ফিরলেন সেই ‘ভিলেন’?
Royal Challengers Bengaluru: পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে দুরন্ত বোলিং করেছেন যশ। সেই খারাপ পারফরম্যান্সের পর গুজরাট আর তাঁকে রাখতে চায়নি। নিলামে উঠেছিলেন যশ। সেখান থেকে ৫ কোটি টাকায় তাঁকে কিনেছিল আরসিবি। তখনই প্রমাণ হয়ে গিয়েছিল, প্রতিভায় আস্থা রেখেছে বিরাট কোহলির টিম। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে ২৮ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ১ উইকেট। কিন্তু পঞ্জাবের বিরুদ্ধে উগড়ে দিয়েছেন ভিতরের সব আগুন।
কলকাতা: ময়দানে ঘুরে ফিরে আসে সেই ১৯৭৫ সালের বড় ম্যাচ। মোহনবাগান মাঠে গিয়ে সবুজ-মেরুনের জালে ৫ গোল ভরেছিল ইস্টবেঙ্গল। সে দিন তিনকাঠির তলায় ছিলেন গোলকিপার ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি তখন নেহাতই তরুণ। কিন্তু বিপর্যয় তো আর বয়স দেখে আসে না। ভাস্করের ফুটবল জীবনই শেষ হয়ে যাচ্ছিল অভিশপ্ত ডার্বি ম্যাচের জন্য। পরের বার তাঁকে নিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। সেই লাল-হলুদ আঁকড়েই দেশের সেরা গোলকিপার হয়ে উঠেছিলেন ভাস্কর। শুধু ফুটবল মাঠ নয়, খেলার দুনিয়ায় এমন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন ভাস্কররা। যাঁদের প্রত্যাবর্তন অবাক করে দেয়। যেমন যশ দয়াল। প্রয়াগরাজের ২৬ বছরের বাঁ হাতি পেসারের হারিয়ে যাওয়ারই কথা ছিল। সেখান থেকে ফিরে এলেন প্রবল ভাবে।
যশের সঙ্গে জড়়িয়ে রয়েছেন রিঙ্কু সিং। এই মুহূর্তে কেকেআরের রিঙ্কু ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন সেনসেশন। ফিনিশার হিসেবে ক্রমশ ছড়াচ্ছেন ডালপালা। মহেন্দ্র সিং ধোনির আসনেও বসাতে শুরু করে দিয়েছেন কেউ কেউ। বাঁ হাতি রিঙ্কুর জন্যই আর এক বাঁ হাতির ক্রিকেট জীবনটাই শেষ হয়ে যাচ্ছিল। যশ দয়ালের নাম উঠলেই ভারতীয় ক্রিকেট রিঙ্কুর সেই পাঁচ ছক্কার তাণ্ডবে ফিরে যান। গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে শেষ ওভারে রিঙ্কু পর পর পাঁচটা ছয় মেরেছিলেন যশকে। কেকেআর জিতেছিল। অবিশ্বাস্য উত্তরণ হয়েছিল রিঙ্কুর। কিন্তু যশ চলে গিয়েছিলেন ঘোর অন্ধকারে। ক্রিকেট কেরিয়ারটাই প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছিল। সেখান থেকে প্রবল ভাবে ফিরে এলেন কী ভাবে?
পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে দুরন্ত বোলিং করেছেন যশ। সেই খারাপ পারফরম্যান্সের পর গুজরাট আর তাঁকে রাখতে চায়নি। নিলামে উঠেছিলেন যশ। সেখান থেকে ৫ কোটি টাকায় তাঁকে কিনেছিল আরসিবি। তখনই প্রমাণ হয়ে গিয়েছিল, প্রতিভায় আস্থা রেখেছে বিরাট কোহলির টিম। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে ২৮ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ১ উইকেট। কিন্তু পঞ্জাবের বিরুদ্ধে উগড়ে দিয়েছেন ভিতরের সব আগুন। বোধহয়, যশ মরিয়া ছিলেন নিজেকে প্রমাণ করার জন্য। শিখর ধাওয়ানের টিমের বিরুদ্ধে প্রথম ৩ ওভারে দিয়েছিলেন মাত্র ১০ রান। শেষ পর্যন্ত ৪ ওভার বল করে দিয়েছেন ২৩ রান, নিয়েছেন ১টি উইকেট।
ম্যাচের পর যশ বলেছেন তাঁর সেই সময়ের কষ্টের গল্প। ‘পাঁচটা ছক্কা খাওয়ার পর আমি সত্যিই সমস্যায় পড়ে গিয়েছিলাম। আমাকে অনেকে বলেছিল, সোশ্যাল মিডিয়ায় যেন মন না দিই। কিন্তু নিজেকে দূরে রাখতে পারিনি। আমার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছিলাম ওই ম্যাচটার পর। সে সময় মানুষ যে ভাবে আমাকে নিয়ে ভাবতে শুরু করেছিল, কষ্ট পেতাম তাতে। দু-তিন দিন পর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। একটা জিনিস জানতাম, এমন পরিস্থিতিতে আমি একা পড়িনি। আমি শেষ নই, যার সঙ্গে এমন হল। এটা মাথায় আসার পর থেকেই আমি সব ভোলার চেষ্টা করেছিলাম। আরও বেশি ম্যাচ খেলার চেষ্টা করি, যাতে এমন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারি।’
যুবরাজ সিংয়ের কাছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ছ’বলে ছয় ছক্কা খেলেছিলেন স্টুয়ার্ট ব্রড। সেখান থেকে ফিরেও এসেছিলেন। যশও পারলেন। আরসিবির এই বাঁ হাতি এই মরসুমটা শুরু করেছেন অন্য ভাবে। কে বলতে পারে, কেকেআর ম্যাচে থামিয়ে দেবেন না রিঙ্কুকে?