Mohammed Shami-Josh Hazlewood: দু-দলের ব্যাটারদের চ্যালেঞ্জ টেস্ট ম্যাচ লাইন-লেন্থ!
ICC world Cup 2023, IND vs AUS Final: একই চ্যালেঞ্জের সামনে পড়তে হতে পারে ভারতীয় ব্যাটারদেরও। পিচে পেসারদের জন্য কতটা সুবিধা থাকছে, সেটা বড় কথা নয় জশ হ্যাজলউডের জন্য। তাঁরও অস্ত্র টেস্ট ম্যাচের লাইন-লেন্থ। ঠিক যেন সামির মতোই। ইডেনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালটাই ধরা যাক। ৮ ওভারের মধ্যে ৩টি মেডেন! সব মিলিয়ে ১২ রান দিয়ে ২ উইকেট। সেই চাপ থেকে বেরোতে পারেনি প্রোটিয়ারা।
অভিষেক সেনগুপ্ত
মহম্মদ সামির সঙ্গে দু-এক বছর আগেও যেন অজান্তেই একটা তকমা জুড়ে গিয়েছিল, টেস্ট ম্যাচের বোলার। সাদা বলের ক্রিকেটে সুযোগই পাচ্ছিলেন না। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগেও ভাবা হয়নি সামির কথা। জসপ্রীত বুমরার চোট থাকায় ডাকা হয় সিনিয়র পেসার মহম্মদ সামিকে। তেইশের বিশ্বকাপের আগের চিত্রটাও একই ছিল। সুযোগ পেয়েও কামাল করছেন সামি। আর এই সাফল্যের রহস্য কিন্তু ‘টেস্ট ম্যাচের বোলার’ হওয়াটাই। রবিবারের মেগা ফাইনালে দু-দলের ব্যাটারদেরই চ্যালেঞ্জের সামনে পড়তে হবে টেস্ট ম্যাচ বোলিং নিয়েই। অজি টিমেও যে জশ হ্যাজলউড রয়েছেন! বিস্তারিত জেনে নিন TV9 Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে সুযোগই পাননি সামি। সেখানেই কার্যত চিত্রটা পরিষ্কার হয়ে যায়। সাদা বলে তিনি অটোমেটিক চয়েস নন। অথচ গত আইপিএলের পারফরম্যান্স! পাওয়ার প্লে-তে তাক লাগিয়েছিলেন সামি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট যে শুধুই ব্যাটারদের খেলা নয়, কার্যত প্রতি ম্যাচেই বুঝিয়েছেন। আইপিএলে পাওয়ার প্লেতে সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছিলেন সামিই। তাঁর কাছে সহজ ফর্মূলা, সিম সোজা রেখে এমন লাইন-লেন্থে বোলিং করে যাও, যেখানে ব্যাটার দ্বিধায় পড়বেন শট খেলবেন না ব্লক করবেন!
বিশ্বকাপের শুরুর চার ম্যাচেও সুযোগ পাননি সামি। লিগ পর্বের পঞ্চম ম্যাচে হার্দিক না থাকায় টিম কম্বিনেশনে বদল। একাদশে সামি। প্রত্যাবর্তনেই পাঁচ উইকেট। নতুন বলেও যেমন ভয়ঙ্কর, স্লগ ওভারেও। তেইশের বিশ্বকাপে ৬ ম্যাচেই ২৩ উইকেট। তিন ম্যাচে ফাইফার! এর মধ্যে সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৭ উইকেট। ওয়াংখেড়েতে ম্যাচের সেরার পুরস্কার জেতা সামি পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন, তিনি খুব বেশি বৈচিত্রে বিশ্বাসী নন। উইকেট সোজা বল রাখাই পছন্দ। ব্যাটার ভুল করলেই উইকেট। বর্তমানে বিশ্ব ক্রিকেটে নিখুঁত সিমে বল করতে পারেন দু-জন। তাঁর মধ্যে একজন সামি। সিম সোজা রেখে বোলিং, সহজ নয়।
একই চ্যালেঞ্জের সামনে পড়তে হতে পারে ভারতীয় ব্যাটারদেরও। পিচে পেসারদের জন্য কতটা সুবিধা থাকছে, সেটা বড় কথা নয় জশ হ্যাজলউডের জন্য। তাঁরও অস্ত্র টেস্ট ম্যাচের লাইন-লেন্থ। ঠিক যেন সামির মতোই। ইডেনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালটাই ধরা যাক। ৮ ওভারের মধ্যে ৩টি মেডেন! সব মিলিয়ে ১২ রান দিয়ে ২ উইকেট। সেই চাপ থেকে বেরোতে পারেনি প্রোটিয়ারা।
প্রশ্ন উঠতেই পারে, এই টেস্ট ম্যাচ লাইন লেন্থ কী বিষয়? অনেক বেশি টেকনিক্যাল না হয়ে সহজে বোঝার চেষ্টা করা যাক। টেস্ট ম্যাচে সিম বোলাররা মূলত চেষ্টা করেন, ৭ মিটারের লেন্থে বোলিংয়ের। ব্যাটিংয়ের দিকে উইকেট এবং বল যেখানে ফেলা হচ্ছে তারই দূরত্ব। টেস্ট ক্রিকেটে বেশির ভাগ পেসাররাই ২ থেকে ১০ মিটারের এই এলাকা পছন্দ। আরও সহজ করে বললে, উইকেট নেওয়া এবং রান আটকানো দু-ক্ষেত্রেই ভরসা রাখা যায় গুড লেন্থ ডেলিভারিতে। অর্থাৎ ৬-৮ মিটারের এই এলাকা।
এর কার্যকারিতা কী! কোন লেন্থে বল ফেললে, কতটা বাউন্স হবে এবং ব্যাটারের কাছে কতটা দ্রুত পৌঁছবে, ব্যাটার সেটা খেলার জন্য কতটা সময় পাবেন, এতেই কার্যকারিতা নির্ভর করে। ব্যাটারের টাইমিং ভুল হলে বোলারের লাভ। উইকেট পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। টেস্টে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ব্যাটাররা এই লেন্থের ডেলিভারি উইকেটে থাকলে ব্লক করেন, আর স্টাম্পের বাইরে থাকলে ছেড়ে দেন। লোভে পড়ে ড্রাইভ খেলতে গেলে, ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ! নতুন বলে স্লিপ ফিল্ডাররা তো সেই অপেক্ষাতেই। লেন্থ তো হল, আর লাইন! যতটা সম্ভব উইকেট সোজা। তাতেই কেল্লাফতে।
মহম্মদ সামি ও জশ হ্যাজলউড সাদা বলকেও যেন টেস্ট ম্যাচের সেই লাল বলটাই মনে করেন। লাইন লেন্থটাও তেমনই। ব্যাটারের কাছে ভাবার সময় খুব কম। বলে বিপদও বেশি। আমেদাবাদের পিচে প্রথম পাওয়ার প্লে-তে যা ম্যাচের দিকও বদলে দিতে পারে!