ARG vs AUS FIFA Match Report: মেসির সহস্রতম ম্যাচে আর্জেন্টিনার ‘নাটকীয়’ জয়
FIFA World Cup Match Report, ARGENTINA vs AUSTRALIA : এনজো ফার্নান্ডেজের ডিফ্লেকশনে বল জালে জড়ায়। প্রাথমিক ভাবে গুডউইনের গোল দেওয়া হলেও, পরে নিশ্চিত করা হয় এটি এনজোর আত্মঘাতী গোল। দ্বিতীয়ার্ধে প্রচুর গোলের সুযোগ তৈরি করে আর্জেন্টিনা। যদিও স্কোরলাইনে তার ছাপ নেই।
দোহা : শক্তির বিচারে নিঃসন্দেহে আন্ডারডগ অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে নকআউটে পৌঁছনো দলকে হালকা নেওয়া যায় না। লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনাও নেয়নি। প্রথমার্ধে তাই অতি সতর্ক ফুটবল। দু-দলের খেলার মধ্যে প্রথমার্ধে তেমন কোনও পার্থক্যই ধরা পড়েনি। গোলে কোনও শট নেই, তেমন কোনও সুযোগ তৈরি হওয়া নেই। ছিল শুধু মেসিকে আটকানোর চাপ। ৩৩ মিনিটে এমন একটা মুহূর্তই যেন তাতিয়ে দিল লিওনেল মেসিকে। বল নিয়ে ডান দিক দিয়ে এগোচ্ছিলেন হাজারতম ম্যাচ খেলতে নামা লিও মেসি। বল দখলের লড়াইয়ে ব্যর্থ হয়ে মেসির জার্সি ধরে টানলেন। বিরক্ত মেসি। বক্সের ডান দিকে ফ্রি-কিক পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। মেসিই ফ্রি-কিক নেন। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। এরপরই ম্যাজিক। বিস্তারিত রিপোর্ট TV9Bangla-য়।
ফ্রি-কিক বাঁচালেও বল দখলে রাখতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ম্যাক অ্যালিস্টার পাস দেন নিকোলাস ওটামেন্ডিকে। তাঁর ছোট্ট পাস মেসিকে। বল ধরে আর অপেক্ষা নয়। মেসির বাঁ পায়ের নীচু শট অজি ডিফেন্ডারের পায়ের ফাঁক এবং ডাইভ দেওয়া গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে জালে। ৩৫ মিনিটে দলকে এগিয়ে দেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। কেরিয়ারের পঞ্চম তথা শেষ বিশ্বকাপে খেলছেন। এই প্রথম বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে গোল করলেন মেসি। বিশ্বকাপের মঞ্চে নবম গোল। সংখ্যায় ছাপিয়ে গেলেন কিংবদন্তি দিয়েগো মারাদোনাকে। হাজার ম্যাচের মাইলফলক স্মরণীয় করলেন গোলে। ১-০ এগিয়ে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।
আর্জেন্টিনা ২ (লিওনেল মেসি ৩৫’, জুলিয়ান আলভারেজ ৫৭’)
অস্ট্রেলিয়া ১ (এনজো ফার্নান্ডেজ ৭৭’-আত্মঘাতী)
দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্য়েই পরিবর্তন। আলেজান্দ্রো মার্টিনেজের পরিবর্তে লিজান্দ্রো মার্টিনেজকে নামান স্কালোনি। কিছুক্ষণের মধ্যেই মেসি ফের শটের সুযোগ পান। বক্সের সামান্য বাইরে থেকে এ বারও নীচু শট। যদিও গোল হয়নি। নিকোলাস ওটামেন্ডির ভুলে উপহার পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে ব্য়াক পাস করেন ওটামেন্ডি। অজি স্ট্রাইকার পৌঁছনোর আগে কোনওরকমে পরিস্থিতি সামাল দেন আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক। প্রতিপক্ষ ঠিক একই ভুল করে। অজি গোল রক্ষক রায়ানকে পাস দেন তাঁরই সতীর্থ। বল ধর পাস দিতে যান রায়ান। ততক্ষণে তাঁর সামনে পৌঁছে গিয়েছেন জুলিয়ান আলভারেজ। বল ধরে জালে শট। ৫৭ মিনিটে আর্জেন্টিনার পক্ষে স্কোরলাইন ২-০ করেন জুলিয়ান। টানা দুই ম্য়াচে গোল।
গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হেরেছিল আর্জেন্টিনা। বাকি দুই ম্যাচে ক্লিনশিট রাখে তারা। দুই ম্যাচেই জয়ের ব্যবধান ছিল ২-০। এ দিন অবশ্য ক্লিনশিট রাখতে পারল না। বরং শেষ দিকে মরণ কামড়ের চেষ্টায় দেখা গেল অজিদের। পরিবর্ত হিসেবে নামা গ্রেগ গুডউইন ৭৭ মিনিটে জোরালো শট করেন আর্জেন্টিনার গোলে। এনজো ফার্নান্ডেজের ডিফ্লেকশনে বল জালে জড়ায়। প্রাথমিক ভাবে গুডউইনের গোল দেওয়া হলেও, পরে নিশ্চিত করা হয় এটি এনজোর আত্মঘাতী গোল। দ্বিতীয়ার্ধে প্রচুর গোলের সুযোগ তৈরি করে আর্জেন্টিনা। যদিও স্কোরলাইনে তার ছাপ নেই। নির্ধারিত সময়ের ২ মিনিট আগে বক্সের মধ্যে মেসির পাস, লাওতারো মার্টিনেজ সহজ একটা সুযোগ নষ্ট করেন। অ্যাডেড টাইমে মেসির থেকে আরও একটা পাস। এ বারও গোলকিপারের গায়ে মারেন লাওতারো।
শেষ মুহূর্তে আর্জেন্টিনা শিবিরে আতঙ্ক। ৭ মিনিট অ্যাডেড টাইম দেওয়া হয়েছিল। সে সময়ই একটি ক্রস ধরে আর্জেন্টিনা বক্সে কুওল। গোল আর তাঁর মাঝে আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। পরিবর্ত হিসেবে নামা কুওল নিচু শট নেন। বাঁ হাতে অনবদ্য দক্ষতায় গোল বাঁচান এমিলিয়ানো। না হলে স্কোর লাইন ২-২ এবং অতিরিক্ত সময়ে গড়াতে পারত ম্যাচ। সেই পরিস্থিতি আসতে দেননি এমিলিয়ানো। গোল বাঁচানোর পরই সতীর্থরা তাঁর উপর ঝাপিয়ে পড়েন, অনবদ্য সেভের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস।