Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

সিরিজ জেতার জন্য ঝাঁপাক রাহানেরা

মেলবোর্নে জয় হো। ভারতের ঐতিহাসিক জয় নিয়ে TV9 বাংলা ডিজিটালের জন্য কলম ধরলেন প্রাক্তন জাতীয় ক্রিকেটার শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়।

সিরিজ জেতার জন্য ঝাঁপাক রাহানেরা
Follow Us:
| Updated on: Dec 29, 2020 | 4:15 PM

অস্ট্রেলিয়া ১৯৫ ও ২০০ ভারত ৩২৬ ও ৭০-২

শরদিন্দু মুখার্জি

মেলবোর্নের ম্যাচটা দেখতে দেখতে কয়েক বিষয় মাথায় আসছিল। সেগুলোই পর পর সাজালাম।

ক্যাপ্টেন রাহানে

প্রতিটা মানুষের মতো ক্যাপ্টেনও আলাদা হয়। বিরাট আগ্রাসী। রাহানে শান্ত, ধীরস্থির। তবে ওর এই শান্ত ব্যাপারটার মধ্যে একটা আগ্রাসী ব্যাপার লুকিয়ে আছে, চাপের মুহূর্তগুলোতে বোঝা যায়। একটা টিম ১০ দিন আগে ৩৬ রানের বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছিল। তারাই যখন ঘুরে দাঁড়ায়, বুঝতে হবে আগের অঘটন ছিল। রাহানে ওর ধীরস্থির স্বভাব দিয়ে টিমের মনোবলটা ফিরিয়ে এনেছে। টেস্ট তো সেশন অনুযায়ী হয়, তাই প্রতিটা সেশনের জন্য পরিকল্পনা করতে হয়। রাহানে প্রতিটা সেশনে ওর ক্যাপ্টেন্সির চমৎকার ছাপ রেখেছে। দারুণ স্ট্র্যাটেজি, স্মিথ-লাবুসেনদের জন্য আলাদা পরিকল্পনা তারই ঝলক।

ব্যাটসম্যান রাহানে

রাহানের মধ্যে মুম্বই ব্যাটিং ঘরানাকে নতুন করে আবিষ্কার করলাম। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে কী ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়, দেখাল। ও বিশ্বের সব প্রান্তেই রান করেছে। দারুণ টেকনিক, লড়াকু মানসিকতা, মাটি কামড়ে পড়ে থাকা, স্কোরিং এবিলিটি ওকে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। মেলবোর্নেও ও কিন্তু ছ’ঘণ্টার একটা ইনিংস খেলেছে। যেটা ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।

শুভমন

আগে থেকে বলছি, এই ছেলেটাকে খেলানো উচিত। বিদেশের মাটিতে ওপেনারের যে টেকনিক দরকার, সেটা ওর আছে। রানের তীব্র খিদে আছে, কিন্তু তাড়াহুড়ো নেই। ভালো বল যেমন রাখতে পারে, খারাপ বল মাঠের বাইরে পাঠাতে জানে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চাপ সামলানোর মানসিকতাও আছে ছেলেটার। মেলবোর্নের ৪৫ আর নট আউট ৩৫ ভালো শুরু।

সিরাজ

অস্ট্রেলিয়া সফরের শুরুর দিকেই শুনেছিলাম, সিরাজের বাবা মারা গিয়েছে। ওর বাবা চেয়েছিল সিরাজ ক্রিকেটার হোক। দেশের হয়ে খেলুক। বাবার ইচ্ছেটা পূরণ করতে ও থেকে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ায়। আজ মেলবোর্ন টেস্ট জেতার পর নিশ্চয় সিরাজ তৃপ্তি পেয়েছে। দুই ইনিংস মিলিয়ে পাঁচ উইকেট দিয়ে শুরু করল টেস্ট কেরিয়ার। ছেলেটা অনেক লম্বা যাবে, সন্দেহ নেই।

জাডেজা আর অশ্বিন

দুই স্পিনার ভারতের অন্যতম ধারাল অস্ত্র, লোয়ার অর্ডারেও ভরসা। জাডেজাকে আমার বেশ কিছু ধরে ব্যাটসম্যান বলেই মনে হচ্ছে। ওর মতো এফেক্টিভ ক্রিকেটার খুব কম আছে। অশ্বিন আজও যে ম্যাচ উইনার, প্রথম টেস্ট থেকেই সেটা দেখাচ্ছে। উমেশ যাদব যদি খেলতে না পারে, একটা বদল তো হবেই। নভদীপকে খেলাক।

রোহিত আসুক

দুটো বদল এই টিমে দরকার। রোহিত আর রাহুল আসুক। ওরা দু’জনেই ওপেন করতে পারে, মিডল অর্ডারেও ব্যাট করতে পারে। জানি না টিম ম্যানেজমেন্ট কী করবে, শুধু রোহিতকেও যদি খেলায় ভারতীয় টিমের ব্যাটিং গভীরতা যে বাড়বে, সন্দেহ নেই।

ভারতের ভাবনা

০-১ থেকে ১-১ করার পর ভারতের মনোবল তুঙ্গে। অস্ট্রেলিয়াকে যে ভারতীয় বোলিং ভেঙে দিতে পারে, দুটো টেস্টে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। ভারতের ঘুরে দাঁড়ানোটা কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার উপর চাপ বাড়াচ্ছে। শুনলাম, ডেভিড ওয়ার্নার ফিরছে তৃতীয় টেস্টে। ব্যাটিং ব্যর্থতা ঢাকার জন্য এ ছাড়া আর উপায় নেই। তার পরও বলব, চোট সারিয়ে এসেই ওয়ার্নার বড় করে দেবে, আশা করা ঠিক নয়। এই পরিস্থিতিতে ভারত যদি চাপ বাড়ায়, তা হলে কিন্তু অজিরা আবার ভেঙে পড়বে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: অস্ট্রেলিয়া (দ্বিতীয় ইনিংস) ২০০ (গ্রিন ৪৫, ওয়েড ৪০, লাবুসেন ২৮, সিরাজ ৩-৩৭, জাডেজা ২-২৮, বুমরা ২-৫৪, অশ্বিন ২-৭১)। ভারত (দ্বিতীয় ইনিংস) ৭০-২ (শুভমন নট আউট ৩৫, রাহানে নট আউট ২৭, স্টার্ক ১-২০, কামিন্স ১-২২)।