আই লিগে ভারতসেরা বিজয়নের কেরালা

এই প্রথম কোনও আই লিগ হল, যেখানে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ছিল না। কলকাতার দুই প্রধান আইএসএলে চলে গেলেও যে আই লিগ জৌলুস হারায়নি, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

আই লিগে ভারতসেরা বিজয়নের কেরালা
আই লিগে ভারতসেরা বিজয়নের কেরালা
Follow Us:
| Updated on: Mar 27, 2021 | 8:44 PM

কলকাতা: ২৫ বছর আগে এক কেরালাইটে আচ্ছন্ন ছিল ‘ঈশ্বরের রাজ্য’। ১৯৯৬ সালে প্রথম জাতীয় লিগ জয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন আইএম বিজয়ন। পাঞ্জাবের টিম জেসিটিতে সে বার তাঁর সঙ্গী ছিলেন জো পল আনচেরিও। ঠিক তার পরের বছরই কেরালা আবার ছুঁয়ে দেখেছিল ভারত সেরার খেতাব। মোহনবাগানের চ্যাম্পিয়ন কোচ টিকে চাত্তুনির জন্য।

২৫ বছর খুঁজে দেখলে সর্বভারতীয় ফুটবলে এই হল কেরালার ফুটবলের উত্থান, অগ্রসর, সাফল্য। এফসি কোচি হোক, ভিভা কেরালা হোক, আইএসএলের কেরালা ব্লাস্টার হোক, সামগ্রিক সাফল্যে বরাবর পিছিয়ে বিজয়ন, চাত্তুনিদের রাজ্য়। সেই আক্ষেপ মিটল এত দিনে। এই প্রথম আই লিগ (I League) চ্যাম্পিয়ন হল গোকুলম কেরালা ফুটবল ক্লাব (Gokulam Kerala FC)।

ইদানীং আই লিগ যেন ভারতের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর টুর্নামেন্ট। শেষ ম্যাচের আগে কে যে ট্রফি পাবে, বোঝাই যায় না। এ বারও তাই হয়েছে। গোকুলম, চার্চিল ব্রাদার্স আর ট্রাউ ছিল লড়াইয়ে। শেষ ম্যাচে হিসেব এদিক-ওদিক হলেই খেতাব হাতছাড়া করতে হত যে কোনও টিমকে। শেষ পর্যন্ত দুই প্রতিপক্ষকে পিছনে ফেলে চ্যাম্পিয়ন গোকুলমই। অঙ্কটা জলের মতো সহজ ছিল ভিনসেনজো অ্যানেসের কেরালার কাছে। পয়েন্ট এক হলেও চার্চিল আর ট্রাউকে হেড-টু-হেডে হারিয়েছিল গোকুলম। ট্রাউকে হারাতে পারলেই সরাসরি চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেত তারা। কেরালার টিম সেই সহজ কাজটাই দাপটের সঙ্গে করল।

যতটা সহজ শোনাচ্ছে ব্যাপারটা, ততটা সহজ বোধহয় ছিল না। বরং খেতাবের ম্যাচ খেলতে নেমে শুরুতে ০-১ পিছিয়ে পড়েছিল গোকুলম। বিদ্যাসাগর সিংয়ের দুরন্ত গোলে। এই আই লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা হলেন তিনি। ১২ গোল করলেন পাহাড়ি স্ট্রাইকার। বাইচুং ভুটিয়া, রামন বিজয়ন, সুনীল ছেত্রীর পরে কোনও ভারতীয় আই লিগের টপ স্কোরার হলেন।

আরও পড়ুন: ছেলে অগস্ত্যকে কোলে নিয়ে ডান্স ফ্লোর মাতালেন হার্দিক

ট্রাউকে বিদ্যাসাগর এগিয়ে দেওয়ার পরও কিন্তু কেরালা খেলা থেকে হারিয়ে যায়নি। কিন্তু বিপক্ষের চাপে খানিকটা কোণঠাসাই ছিল। সেখান থেকে ভিনসেনজোর ছেলেরা খেলা ঘোরাল ৭০ থেকে ৯৮ মিনিটে। আই লিগ জেতার তীব্র বাসনাই তাঁদের তাড়া করেছিল শেষ পর্যন্ত। ২৮ মিনিটে ট্রাউকে ৪ গোল দিয়ে আই লিগ জিতল গোকুলম।

৭০ মিনিটে শরিফ মহম্মদের গোলে সমতা ফেরায় কেরালার টিম। ৪ মিনিটের মধ্যে এমিল বেনি ২-১ করেন। এর আর রোখা যায়নি গোকুলমকে। তাদের আগ্রাসী ফুটবলের জোয়ারে কার্যত ভেসে যায় পাহাড়ি টিম। ৭৭ মিনিটে ৩-১ ডেনিস অ্যান্টুইয়ের। বিদ্যাসাগর যদি ১২ গোল করে থাকেন, তবে আই লিগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার হলেন অ্যান্টুই, ১১ গোল করে। ৯৮ মিনিটে ৪-১ মহম্মদ রশিদের।

অন্য ম্যাচে পঞ্জাব এফসিকে ৩-২ হারায় চার্চিল ব্রাদার্স। গোয়ার টিমও ২৯ পয়েন্টে পৌঁছলেও হেড-টু-হেড ও গোল পার্থক্যে অনেক এগিয়ে থাকা গোকুলম তাদের ধরাছোঁয়ার বাইরেই ছিল। আই লিগ থেকে নেমে গেল নেরোকা এফসি।

এই প্রথম কোনও আই লিগ হল, যেখানে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ছিল না। কলকাতার দুই প্রধান আইএসএলে চলে গেলেও যে আই লিগ জৌলুস হারায়নি, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। বরং গোকুলম, চার্চিল ব্রাদার্স, টাউয়ের মতো টিমগুলোকে ঘিরে উত্তরোত্তর বাড়ছে।