TOKYO OLYMPICS 2020 : বর্শায় বিঁধল সোনা, ইতিহাস নীরজের
পেশিবহুল ডান বাহুতে জ্যাভলিন ধরা শক্ত করে। মাথার ফেট্টির উপর দিয়ে উড়ছে চুল। দৌড়চ্ছেন নীরজ। প্রথম থ্রো। উড়ন্ত জ্যাভলিন নড়ছে শূন্যে। আর মাধ্যাকর্ষণের নিয়ম মেনে যখন গাঁথল ৮৭.০৩ মিটার দূরে, তখন ভারত বুঝে গিয়েছে, সোনার মেডেল আর নীরজ চোপড়ার মধ্যে দূরত্ব কিছু সময়ের।
টোকিওঃ দুটো ব্যাসার্ধ। একটায় লেখা পঁচাশি। আরেকটায় নব্বই। ভারতীয় সময় বিকেল পৌনে পাঁচটায় সবুজ মখমলের মত ঘাসে যখন বর্শা গাঁথল ৮৭.০৩ মিটার দূরত্বে, তখন আসমুদ্র হিমাচল স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে, জ্যাভলিনে সোনা আসবেই। ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়েছেন নীরজ। পৌঁনে ছটায় যখন ষষ্ঠ ও শেষ থ্রো করলেন নীরজ, তখন গোটা ভারতের একটাই ছবি। নীল আকাশে মুষ্টিবদ্ধ হাত ছুঁড়ে দিয়েছে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা। সোনা জিতে ইতিহাস গড়লেন নীরজ চোপড়া। ব্যক্তিগত ইভেন্টে দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে এই কীর্তি গড়লেন নীরজ ।
পেশিবহুল ডান বাহুতে জ্যাভলিন ধরা শক্ত করে। মাথার ফেট্টির উপর দিয়ে উড়ছে চুল। দৌড়চ্ছেন নীরজ। প্রথম থ্রো। উড়ন্ত জ্যাভলিন নড়ছে শূন্যে। আর মাধ্যাকর্ষণের নিয়ম মেনে যখন গাঁথল ৮৭.০৩ মিটার দূরে, তখন ভারত বুঝে গিয়েছে, সোনার মেডেল আর নীরজ চোপড়ার মধ্যে দূরত্ব কিছু সময়ের। চেক প্রজাতন্ত্র থেকে জার্মানি। তাবড় থ্রোয়ার রা তখন নীরজের ধারেপাশে নেই প্রথম থ্রোয়ের শেষে।
দ্বিতীয় থ্রোয়ের আগে একি করলেন নীরজ? জ্যাভলিন হাতে গ্যালারি শো। আত্মবিশ্বাস তখন এভারেস্টের চূড়ায়। পদক যেন জিতেই ফেলেছেন। খেলার দুনিয়ায় একটা চালু কথা রয়েছে, জেতার আগে কখনও ভেবোনা জিতে গিয়েছো। নীরজ সেই পথ মাড়াননি। আত্মবিশ্বাস তখন স্ফুটনাঙ্কের চরম সীমায়। এবার নীরজের বর্শা ছুঁল ৮৭.৫৮ মিটার দূরত্বে। ধারে কাছে থাকা প্রতিপক্ষরা তখন কয়েকশো মাইল দূরে। এককথায়, নেই কেউ। ভারতের মননে তখন নীরজের আত্মবিশ্বাস। টগবগ করে ফুটছে। তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ থ্রোতে নীরজ কি করলেন বা কি করলেন না, সেটা নিয়ে না ভাবলেও চলে। দুটো থ্রোতেই পদক নিশ্চিত। তবুও বলে রাখা ভাল ।তৃতীয় থ্রোতে ৭৬.৭৯ মিটার দূরত্বে থ্রো করেন নীরজ। চতুর্থ ও পঞ্চম থ্রো বাতিল। ষষ্ঠ থ্রোতে ৮৪.২৪।
ইতিহাস। মিলখা সিং, পারেননি। পিটি উষা পারেননি। পারেননি কেউই। পরাধীন ভারতে ব্রিটিশ নরম্যান প্রিচার্ডই ছিলেন ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে পদক আনা শিবরাত্রির একমাত্র সলতে। সেটাই ইতিহাস বইয়ে বছরের পর বছর পড়ে এসেছেন শিক্ষার্থীরা। এবার বদলাবে। ১০০ বছরের ইতিহাস বদলালো। বর্শায় বদলে গেল ইতিহাস। হরিয়ানার ভারতীয় সেনাকর্মীর পেশীবহুল হাত এনে দিল সোনা। অভিনব বিন্দ্রার পর এবার নীরজ চোপড়া। মাঝের সময় ১৩ বছর। কখনও কখনও ১৩টাও ‘লাকি’ সংখ্যা হয়। অন্তত আরও একটা সোনার অপেক্ষার সময়ে।