OLA S1 Pro Review: পাসওয়ার্ডে ছুটছে ওলার ই-স্কুটার! নিমেষে চার্জিং, কম সময়ে যে কোনও জায়গায় পৌঁছে দেবে
OLA S1 PRO First Ride Review: লঞ্চ হয়েছিল কিছু দিন আগেই। এবার টেস্ট রাইডিংয়ের জন্য উপলব্ধ হল ওলার লেটেস্ট এস১ প্রো ইলেকট্রিক স্কুটার। এই ই-বাইক নিয়ে কী বলছেন রাইডাররা, রিভিউ পড়ে নিন।
ইলেকট্রিক থেকে আইসিই ভেহিকলসের দুনিয়ায় ঝড় তুলে আগমন হয়েছে ওলা এস১ প্রো ইলেকট্রিক স্কুটারের। বিগত কয়েক মাস ধরেই এই ইলেকট্রিক স্কুটার নিয়ে একাধিক তথ্য সামনে এসেছে। লঞ্চও হয়েছিল হাতে গোনা কয়েক দিন আগে। এবার বুকিংও শুরু হয়ে গেল। অনেকের গ্যারাজে ইতিমধ্যেই এই বাইক ঢুকে গিয়েছে। কেউ কেউ আবার টেস্ট রাইডিং করেই Ola S1 Pro ইলেকট্রিক বাইকের লাজবাব রিভিউও প্রকাশ করেছেন। সেই সব রাইডারের শেয়ার করা অভিজ্ঞতাই এককাট্টা করে চমৎকার এই ওলা এস১ প্রো ইলেকট্রিক বাইকের যাবতীয় খুঁটিনাটি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ওলা এস১ প্রো: ডিজাইন –
এক্কেবারে ঝাঁ চকচকে লুক! যা তৈরিই করা হয়েছে ইটারগো অ্যাপস্কুটারের উপরে ভিত্তি করে। গাড়ির অন্দরের লুক নিয়েও রীতিমতো রিসার্চ করেছে কোম্পানি। তবে সামগ্রিক লুকের কথা বলতে গেলে ওলা এবং ইটারগো-র মধ্যে একাধিক মিল রয়েছে। ফ্রন্ট এন্ডেই রয়েছে সিঙ্গেল-সাইডেড সাসপেনশন, যাতে মোনোশক ফিচার্স রয়েছে। ১২ ইন এমআরএফ জ়্যাপার টায়ার্স এবং ডিস্ক ব্রেকও রয়েছে এই ওলা স্কুটিতে। এবিএস নেই তবে কম্বাইনড ব্রেক সিস্টেম রয়েছে। এই ইলেকট্রিক বাইকের ফ্রন্ট শিল্ড খুবই স্মুধ এবং ফিচার্সের মধ্যে রয়েছে ফ্লাশ-ফিট LED ইন্ডিকেটের্স। নজরকাড়া লুক দেওয়া হয়েছে এই স্কুটির হেডল্যাম্পে এবং অত্যাধুনিক লাইটিং প্রযুক্তি দেওয়া হয়েছে।
এই স্কুটারের মস্তিষ্কই হল তার ইনস্ট্রুমেন্টাল প্যানেল যা অনেকটাই অ্যান্ড্রয়েড ট্যাবলেটের মতো। লকিং, আনলকিং, নেভিগেশন-সহ স্পিড এবং রেঞ্জের একাধিক ফাংশনস রয়েছে এই ই-বাইকে। চালকের নিজের পছন্দ অনুযায়ী তা কাস্টোমাইজও করে নেওয়া যেতে পারে। কোনও চাবি ছাড়াই ছুটতে পারে এই ইলেকট্রিক স্কুটার এবং পাসকোডসের সাহায্যেও অপারেট করা যেতে পারে। জিওফেন্সিং এবং অ্যালার্টের উপরে ভিত্তি করে ইউজাররা নিজস্ব ভিন্ন ভিন্ন প্রোফাইলও সেট করতে পারবেন। এই দু’চাকা গাড়ির স্যুইচগিয়ার চমৎকার করা হয়েছে এবং তাতে রয়েছে রিভার্স ফাংশনের মতো দুর্দান্ত ফিচার। ই-বাইকের ফ্রন্ট অ্যাপ্রনে রয়েছে চার্জিংয়ের জন্য একটি ইউএসবি পোর্ট, স্পিকার্স, যা হর্ন, ইন্ডিকেটর বাজ়ার্স ইত্যাদি অপারেট করতে পারে এবং টিউনও প্লে করতে পারে। এই বাইকের সিট ক্যাপাসিটি বেশ বড় এবং অ্যাম্পল স্পেসও অফার করে। সিটের উচ্চতা ৭৯২ মিলিমিটার। ওলা এ১ প্রো-র ফ্লোরবোর্ডস, এর্গোনমিক্স – সবই চমৎকার।
সিটের ঠিক নীচেই আবার বড় জায়গারই বন্দোবস্ত করেছে ওলা। ইউজাররা দাবি করছেন, সিটের নীচে আরামসে দুটি হেলমেট পার্ক করে রাখা যেতে পারে। সব মিলিয়ে এই আন্ডার-সিট বিন ৩৬ লিটারের কার্গো স্পেস অফার করে। বাইকের পিছনে আবার লুকের জন্য ফ্লাশ-ফিট LED রয়েছে এবং সেখানেই চার্জিংয়ের জন্য একটি পোর্টও রয়েছে। একাধিক উজ্জ্বল কালার অপশনে হাজির হয়েছে এই OLA S1 Pro ই-বাইক।
ওলা এস১ প্রো: প্রযুক্তিগত খুঁটিনাটি, ব্যাটারি ও চার্জিং –
OLA S1 Pro ইলেকট্রিক বাইকে রয়েছে টিউবুলার ফ্রেম। এই স্কুটারের পাওয়ারের দিকটি নিশ্চিত করছে ৮.৫KW ইলেকট্রিক মোটর, যাতে ৩.৯৭kWh ফিক্সড ব্যাটারি প্যাক রয়েছে। কোম্পানির তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, মাত্র ৫ সেকেন্ডের চার্জে ১১৫kmph স্পিডে চলতে পারবে এই স্কুটি এবং ৬০kmps জ়িপও করতে পারবে। মোট তিনটি রাইড মোডস দিতে পারবে এই ই-বাইক, নর্মাল, স্পোর্ট এবং হাইপার। একাধিক চার্জিং অপশনস রয়েছে এই ওলা এস১ প্রো ই-বাইকের। হোম চার্জারের সাহায্যে সাড়ে ছয় ঘণ্টার মধ্যেই সম্পূর্ণ চার্জড আপ হয়ে যাবে এই স্কুটি। ফাস্ট চার্জার ব্যবহার করলে ১৮ মিনিটেই ৭৫কিমি পর্যন্ত রেঞ্জে ছুটতে পারবে এই ইলেকট্রিক স্কুটার। পাশাপাশি কোম্পানির তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এক বার চার্জ দিলেই ১৮১ কিমি পর্যন্ত সর্বোচ্চ রেঞ্জ দিতে পারবে এই ই-বাইক।
কী ভাবে চালাবেন –
হালফিলের প্রায় প্রতিটি ইলেকট্রিক স্কুটিই চালানোর ক্ষেত্রে একে অপরের থেকে কিছুটা হলেও আলাদা। কারণ প্রতিটি ই-বাইকের আইসিই-পাওয়ার্ড ইউনিটস আলাদা হয়। তবে এ ক্ষেত্রেই ওলা আলাদা করে কৃতিত্বের দাবি করে। প্রক্সিমিটি সেন্সর বা পাসকোডের সাহায্যেও এই ইলেকট্রিক স্কুটি চালাতে পারবেন গ্রাহকরা। সমগ্র সিস্টেমই ডিজিটাল এবং লকিং ও আনলকিং ফাংশনস রয়েছে। স্কুটার এক বার অ্যাক্টিভেট করলে আপনার কবজির জোড়েই সে এগিয়ে যাবে! স্পিকারের সাহায্যে বিভিন্ন টিউনও চালাতে পারবেন রাইডাররা। তবে এই স্কুটারের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ফিচার্স হল তার হাইপার মোড। তবে এবিএস না-থাকার কারণে অনেক রাইডারেরই পছন্দ না-ও হতে পারে এই ওলা এস১ প্রো।
ইউজাররা কী বলছেন –
এক ইউজার বলছেন যে, তিনি ওলা এস১ প্রো বাইক নিয়ে কন্যাকুমারী থেকে ৮০০ কিলোমিটার লটেস্ট রাইড করেছিলেন। তাঁর মতে, ‘OLA S1 Pro বাইক নিয়ে অগাস্ট মাস থেকে এখনও পর্যন্ত যা হাইপ তৈরি হয়েছে, তার সবই সত্যি। কারণ, এই ই-বাইক খুবই স্বস্তির এবং আরামদায়কও। নানাবিধ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মিশেলে এই ই-বাইক বহু রাইডারের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। দ্রুত স্টার্ট নিতে পারে, ভিড়ভাট্টায় খুব সহজেই এই বাইক চালিয়ে দুরন্ত অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারবেন রাইডাররা।’
এদিকে এলাহাবাদের আর এক রাইডার আবার এই ওলা বাইকের ঝাঁ চকচকে লুক এবং কালার অপশনের বিষয়টি নিয়ে আলোকপাত করেছেন। তাঁর কথায়, এই ই-বাইকের প্রতিটি কালার মডেলই গ্রাহকের মন জিতে নেবে!
ওলা এস১ প্রো কেনা উচিত?
একাধিক নতুন ফিচার্স রয়েছে। আবার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফিচার্সই মিসিং! তবে কম দুরত্বের কোনও জায়গায় দ্রুত পৌঁছে যাওয়ার জন্য ওলা এস১ প্রো-র বিকল্প ই-বাইকের জগৎে এই মুহূর্তে আর কিছু নেই। গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু ফিচার্স না থাকলেও এমন অনেক ফিচারই রয়েছ, যেগুলি তরুণ প্রজন্মের মন জিতবে! পাশাপাশি আবার চমৎকার ডিজাইন এবং সিট ক্যাপাসিটি এই বাইকটিকে একটি ফ্যামিলি বাইকেও পরিণত করেছে। সব মিলিয়ে এই ওলা এস১ প্রো ই-বাইক কিনলে আপনাকে ধরাশায়ী হতে হবে না। তার থেকেও বড় কথা, এবার বিপুল পরিমাণ গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গেই ডেলিভারির কাজটিও শুরু করতে হবে OLA কর্তৃপক্ষকে।
আরও পড়ুন: Ola Electric Scooter: আরও কম দামে নতুন ইলেকট্রিক স্কুটার লঞ্চ করবে ওলা, নাম হবে ‘ওলা সিরিজ এস’
আরও পড়ুন: Hero MotoCorp: আগামী বছর মার্চ মাসের মধ্যে হিরো মোটোকর্পের প্রথম ইলেকট্রিক স্কুটার আসতে চলেছে ভারতে
আরও পড়ুন: Bounce Infinity: ব্যাটারি ছাড়াই কেনা যাবে এই ইলেকট্রিক স্কুটার! ডেলিভারি শুরু আগামী বছর