মনিটরের নীচে ফ্লো চার্টে লেখা ছিল অপারেশন সফল না হলে কী বলব: ডক্টর স্বাতী মোহন
শেষের ঠিক সাত মিনিট রীতিমত আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল নাসা বিজ্ঞানীদের। কিন্তু তারপর রোভারের নিখুঁত অবতরণে স্বস্তি মেলে তাঁদের। তবে যদি অসফল হত ল্যান্ডিং, তার জন্যও কি প্রস্তুত ছিলেন স্বাতী?
ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন গবেষক স্বাতী মোহন। জন্মসূত্রে ভারতীয় হলেও পড়াশোনা থেকে কর্মক্ষেত্র গোটাটাই করেছেন মার্কিন মুলুকে। বর্তমানে উত্তর ভার্জিনিয়া-ওয়াশিংটন ডিসি মেট্রো এলাকার বাসিন্দা তিনি।
তবে হঠাৎ কেন তাঁর নাম বারবার শিরোনামে উঠে আসছে? মঙ্গলগ্রহে প্রাণ ও জলের হদিশ চালাচ্ছিল নাসা। এবং দুদিন আগের রাত ঠিক আড়াইটার সময় ক্যালিফোর্নিয়ার প্যাসাডেনায় জেট প্রোপালেশন ল্যাবরেটরিতে শোনা যায় স্বাতীর কন্ঠ। উচ্ছ্বসিত স্বাতী বলেন “পারসিভিয়ারেন্স সফল ভাবে মঙ্গলের মাটিতে নেমেছে। এখন এটি প্রাণের সন্ধান করতে প্রস্তুত।”
Tune into the 10 am @NASAPersevere press briefing today featuring one of my mentors @steltzner and my deputy @aaronstehura – especially, if you like incredible pictures from Mars… #CountdownToMars https://t.co/Hehp9rX294
— Allen Chen (@icancallubetty) February 19, 2021
মঙ্গলের মাটিতে পা রাখল মার্কিন মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্রের রোভার ‘পারসিভের্যান্স’। আর মঙ্গলে পাঠানো রোভারের গাইডেন্স, নেভিগেশন ও কন্ট্রোল অপারেশনস অর্থাৎ জিএনঅ্যান্ডসি এর প্রধান ছিলেন ডক্টর স্বাতী মোহন। তিনি ও তাঁর টিম মিলে এই গোটা অপারেশন সফল করলেন।
এক সাক্ষাৎকারে স্বাতীকে প্রশ্ন করা হয়, একাধারে আপনি গোটা ঘটনাটির ধারাভাষ্য পাঠ করছিলেন, এবং একই সঙ্গে এই গোটা ল্যান্ডিং প্রক্রিয়ার দায়িত্বেও ছিলেন, আপনার মাথায় সেই সময়ে ঠিক কী চলছিল।
The moment that my team dreamed of for years, now a reality. Dare mighty things. #CountdownToMars pic.twitter.com/8SgV53S9KG
— NASA’s Perseverance Mars Rover (@NASAPersevere) February 19, 2021
উত্তরে স্বাতী বলেন, “গোটা টিমের মধ্যে আমিও একজন ছিলাম যাঁরা নিজেদের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ‘পারসিভের্যান্স’কে মঙ্গলগ্রহের মাটি স্পর্শ করাতে পেরেছিলাম। যখন আমি ‘প্লে ব্যাক প্লে’ (ধারাভাষ্য) করছিলাম, আমি ভীষণ ফোকাস ছিলাম, এতাটা সিঙ্ক ছিল গোটা বিষয়ে যে আমি ‘টাচডাউন’ (অবতরণ) -এর আগে পর্যন্ত বুঝতেই পারিনি।”
শেষের ঠিক সাত মিনিট রীতিমত আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল নাসা বিজ্ঞানীদের। কিন্তু তারপর রোভারের নিখুঁত অবতরণে স্বস্তি মেলে তাঁদের। তবে যদি অসফল হত ল্যান্ডিং, তার জন্যও কি প্রস্তুত ছিলেন স্বাতী? তিনি উত্তরে বলেন, “‘পারসিভের্যান্স’-এর সফল ল্যান্ডিংয়ের প্রচেষ্টায় ছিলাম আমরা প্রত্যেকে। কিন্তু এটাও ঠিক তার এ বিষয়টাও মাথায় ছিল যদি এই অপারেশন সফল না হয় তাহলে কী করব। আমার মনিটরের নিচে কাগজের শীট ছিল। ফ্লো চার্ট ছিল। তাতে লেখা ছিল, আমরা কী করব, কী বলব যদি আমাদের অপারেশন সফল না হয়ে উঠতে পারে। তবে অনেক কিছুই হতে পারত, কিন্তু তা হয়নি। ‘টাচডাউন’-এর পর ওই সব কাগজপত্তর আবর্জনায় ফেলার জন্য ভীষণ এক্সাইটেড ছিলাম।”
If you watched the Mars landing today, the voice you heard was @DrSwatiMohan. She immigrated to the US from India at age 1, was inspired by Star Trek at 9, then earned a B.S from Cornell in mechanical and aerospace engineering, and an M.S. and Ph.D from MIT in aeronautics. pic.twitter.com/mHZQmz3iPD
— Paul Rogers (@PaulRogersSJMN) February 18, 2021
২০২০ সালের ৩০ জুলাই আমেরিকার ফ্লোরিডার কেপ কানাভেরাল এয়ার ফোর্স স্টেশন থেকে থেকে অ্যাটলাস ফাইভ লঞ্চ ভেহিকেলে মঙ্গলে পাড়ি দেয় ‘পারসিভের্যান্স’। ৬ মাস ১৮ দিন পর সেই ‘পারসিভের্যান্স’ নামল মঙ্গলের মাটিতে। লাল গ্রহে প্রাণের সন্ধানের পাশাপাশি জলেরও সন্ধান করবে রোভার।