Samudrayaan 2022: সমুদ্রের অতল গভীরে যাবেন ৩ ভারতীয় বিজ্ঞানী, দেশের নয়া অভিযান ঘিরে চর্চা তুঙ্গে
Samudrayaan: ‘মৎস্য ৬০০০’-এর ব্লু-প্রিন্ট তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছেন ইসরো, আইআইটি মাদ্রাজ এবং ডিআরডিও-র বিজ্ঞানীরা। গোটা প্রজেক্টের তত্ত্বাবধানে রয়েছে কেন্দ্রের ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রক।
মহাকাশে ভারত পাড়ি দিয়েছে বহুদিন আগেই। এবার পৃথিবীতেই এক নতুন দিগন্তে পাড়ি জমাচ্ছেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। কথা হচ্ছে সমুদ্রকে নিয়ে। চন্দ্রযান, মঙ্গলযানের পর আলোচনার কেন্দ্রে ‘সমুদ্রযান’। সমুদ্রের ৬০০০ মিটার গভীরে মানুষ পাঠিয়ে প্রকৃতির রহস্য উন্মোচনে ব্রতী বিজ্ঞানীরা। মহাসমুদ্রের অতলে মানুষকে যে যানটি নিয়ে যাবে, তার নাম ‘মৎস্য ৬০০০’। ইতিপূর্বে রাশিয়া, জাপান, আমেরিকা, চিন ও ফ্রান্স এ ধরনের অভিযান চালিয়েছে। যদি ভারত সফল হয়, তাহলে ঐতিহাসিক তালিকায় ঢুকে পড়বে ভারতও!
সূত্রের খবর, ৩ জন মানুষ নিয়ে সমুদ্রের গভীরে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। আপাতত ‘মৎস্য ৬০০০’-এর কর্মক্ষমতা বিচার করে এই সিদ্ধান্তই নিয়েছেন গবেষকরা। জলযানটিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, নানাবিধ সেন্সর ও যন্ত্রপাতি থাকবে বলে খবর। সমুদ্রতলে সহজে খননকার্য চালানোর জন্য যন্ত্র থাকবে জলযানের বাইরে।
গবেষকদের রিপোর্ট মোতাবেক, মহাসমুদ্রের গভীরে জলের চাপ মারাত্মক বেশি। বিপুল জলরাশির চাপে সহজেই অতি কঠিন ধাতুর মোটা পাতও বেঁকে দুমড়ে যেতে পারে। সেই চাপ সামলানোও বিশাল চ্যালেঞ্জ প্রযুক্তিবিদদের সামনে। বিজ্ঞানীদের সূত্রে খবর, একটানা ১২ ঘণ্টা জলের তলায় থাকতে সক্ষম এই যান। আপৎকালীন পরিস্থিতির ক্ষেত্রে টানা ৯৬ ঘণ্টা ‘মৎস্য ৬০০০’ জলের নীচে থাকতে পারবে।
‘মৎস্য ৬০০০’-এর ব্লু-প্রিন্ট তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছেন ইসরো, আইআইটি মাদ্রাজ এবং ডিআরডিও-র বিজ্ঞানীরা। গোটা প্রজেক্টের তত্ত্বাবধানে রয়েছে কেন্দ্রের ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রক। মন্ত্রক সূত্রে খবর, ২০২০-২১ থেকে ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে এহেন সমুদ্রাভিযান চালানোর জন্য প্রায় ৪০৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রথম ধাপে ২০২৪ সাল পর্যন্ত গবেষণায় বরাদ্দ হয়েছে ২৮২৩.৪ কোটি টাকা।
আমাদের এই নীলগ্রহের উপরিভাগের ৭০% সমুদ্র। অন্যদিকে গভীর সমুদ্রের প্রায় ৯৫%-ই মানুষের অজানা। ভারতের উপকূলের দৈর্ঘ্য প্রায় ৭,৫১৭ কিলোমিটার। ফলত এই অভিযানে বাড়বে সমুদ্র সম্বন্ধে জানার আগ্রহ। মহাসাগরের অতলে বসবাসকারী জীবদের দেখার সুযোগও তৈরি হবে অদূর ভবিষ্যতে, জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। ফলত এই অভিযান যে অর্থনীতির দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হবে, সে বিষয়ে আশাবাদী কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা। মারিয়ানা খাত হোক বা অন্যান্য গিরিখাত, সমুদ্রের তলদেশে থাকা নানা রহস্য এবং প্রাণী সম্পর্কে এখনও সঠিক তথ্য জানা নেই মানুষের। এ ধরনের অভিযান যে সেই দিকে কিছুটা হলেও দিশা দেখাবে, সে প্রসঙ্গে ইতিবাচক কথাই বলছেন সমুদ্রবিজ্ঞানীরা।