প্রাণের অস্তিত্বের খোঁজে এবার নিজেই ‘ড্রাইভ’ করবে নাসার পারসিভেয়ারেন্স!

বর্তমানে নাসার রোভারটি যে জায়গার গবেষণার কাজ চালাচ্ছে, সেই জায়গাটি কোটি বছর আগে একটি বিশাল হ্রদ ছিল। সেই হ্রদে প্রচুর জল ছিল, ছিল প্রাণের অস্তিত্ব।

প্রাণের অস্তিত্বের খোঁজে এবার নিজেই 'ড্রাইভ' করবে নাসার পারসিভেয়ারেন্স!
লাল গ্রহের মাটিতে নাসার পারসিভেয়ারেন্স রোভার!
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 02, 2021 | 12:06 PM

সফলভাবে মঙ্গল গ্রহের বুকে নামার পর থেকে বেশ কিছু ছবি পাঠাতে শুরু করেছে নাসার মহাকাশযান পারসিভেয়ারেন্সের অত্যাধুনিক রোবট। লাল গ্রহের বিষু অঞ্চলের জেযেরো গহ্বরে এই রোবটটিকে অবতরণ করা হয়েছিল। ছয় চাকার এই রোবটযান আগামী ২ বছর ধরে গ্রহের নমুনা সংগ্রহের কাজ করবে। প্রাচীন হ্রদের এই এলাকাগুলিতে মাটি-পাথর খনন করে প্রাণের অস্তত্বের সন্ধানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে এই রোবটযান। বৃহস্পতিবার নাসার পক্ষ থেকে জানানো হয়, গহ্বর ছাড়িয়ে গ্রহের মাটিতে এবার নিজের রাস্তা নিজেই বের করবে এই রোভারটি।

ঐতিহাসিক এই যাত্রা শুরু করার আগে ন্যাশানাল অ্যারোনেটিক্যাল স্পেস এজেন্সি থেকে জানানো হয়েছে, রোভার পরিচালনার দলটি এবার আরও গভীরে গিয়ে পরীক্ষা চালানোর জন্য নেভিগেশন রুটের পরিকল্পনা শুরু করবে। নির্দেশনার খসড়া, স্পেশাল থ্রিডি গ্লাস লাগিয়ে সেই ম্যাপ তৈরি কাজ শুরু করা হবে। আর এই নেভিগেশন রুটের জন্য শক্তিশালী অটো-নেভিগেশন সিস্টেম ব্যবহার করে রোভারটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ড্রাইভ করবে বলে জানা গিয়েছে। এই অত্যাধুনিক সিস্টেমটিকে অটোনাভ (AutoNav) বলা হয়ে থাকে। এই সিস্টেমটি গ্রহের মাটিতে থ্রিডি মানচিত্র গঠন করতে, আসন্ন বিপদগুলি ও রুট তৈরির বিপদ চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে। এছাড়া পৃথিবী থেকে পরিচালনা করার বাইরেও এই রোভার সিস্টেমের মাধ্যমে গ্রহের মাটিতে নিজের রুট তৈরির পরিকল্পনা করতে পারে।

আরও পড়ুন: Greenhouse Effect: ক্রমশ শীতল হচ্ছে মেসোস্ফিয়ার, প্রতি দশকে ৬০০ ফুট পর্যন্ত হচ্ছে সংকোচন!

দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরির সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার ভান্দি ভর্মা জানিয়েছেন, রোভারের চাকা এবার অটোনমাস ড্রাইভে করার চিন্তাভাবনা চলছে। জেজোরো কার্টারের মাটিতে প্রথম বৈজ্ঞানিকভাবে রোভারের সাহায্যে অটোনাভের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি পর্যবেক্ষণ করা হবে। লাল গ্রহের মাটিতে পরীক্ষা নিরীক্ষা ও রুট তৈরির কাজে অটোনাভের উপর দায়িত্ব দেওয়া হলেও , প্রয়োজনে এই মিশনের সঙ্গে দল হস্তক্ষেপ করতে পারে।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে নাসার রোভারটি যে জায়গার গবেষণার কাজ চালাচ্ছে, সেই জায়গাটি কোটি বছর আগে একটি বিশাল হ্রদ ছিল। সেই হ্রদে প্রচুর জল ছিল, ছিল প্রাণের অস্তিত্ব। এমনটাই মন বিজ্ঞানীদের। নাসার বিজ্ঞানীরা জনিয়েছিলেন, রোবটযানটি জেযেরোর ব-দ্বীপের মত চেহারার একটি অংশের দুই কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবতরণ করেছে। এই এলাকাতেই পারসিভেয়ারেন্স তার সন্ধান কাজ চালাবে। জেযেরোতে বিভিন্ন ধরনের পাথর রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে মাটিপাথর এবং কার্বোনেটস। এ ধরনের পাথরের যেকোন রকম অণুজীবের অস্তিত্ব সংরক্ষণের ক্ষমতা রয়েছে। ফলে সূদুর অতীতে এই গ্রহে যদি প্রাণের অস্তিত্ব থেকে থাকে, তাহলে এই পাথরের মধ্যে তার ইঙ্গিত মেলার আশা করছেন তারা।