ভোট মিটতেই ‘ঘরওয়াপসি’! তারকেশ্বরে ২০০ জন বিজেপি কর্মী ফিরলেন ঘাসফুলে
শনিবার, তারকেশ্বরের বলিগড়ি এক নম্বর পঞ্চায়েতের লোকনাথ মন্দির এলাকায় বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও করোনা মোকাবিলায় বৃক্ষরোপণ উৎসব ও রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। সেখানেই এলাকার ওই ২০০ জন বিজেপি কর্মী তৃণমূলে যোগদান করে।
হুগলি: ভোট পর্ব মিটতেই (Post Poll) একদিকে যেমন জারি রাজনৈতিক সন্ত্রাস, তেমনই হিড়িক ‘ঘরে ফেরার’। বঙ্গ নির্বাচনের মুখে, তৃণমূলের একাধিক হেভিওয়েট নেতৃত্ব শিবির বদলে বিজেপিতে যোগ দেন। ভোটে বিজেপির (BJP) ভরাডুবির পর তাঁদের অনেকেই নিজেদের ‘ভুল’ বুঝতে পেরে পুরনো ঘরে ফিরতে চেয়েছেন। সরলা মূর্মূ থেকে সোনালী গুহ, মুখ্য়মন্ত্রীর কাছে আবেগঘন চিঠি লিখে পুরনো দলে ফিরতে চাওয়ার আবেদনকারীর সংখ্যা কম নয়। এ বার, হুগলির তারকেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) রামেন্দু সিংহ রায়ের হাত ধরে বিজেপি থেকে ২০০ জন কর্মী তৃণমূলে (TMC) যোগ দেন।
শনিবার, তারকেশ্বরের বলিগড়ি এক নম্বর পঞ্চায়েতের লোকনাথ মন্দির এলাকায় বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও করোনা মোকাবিলায় বৃক্ষরোপণ উৎসব ও রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। সেখানেই এলাকার ওই ২০০ জন বিজেপি কর্মী তৃণমূলে যোগদান করে। তৃণমূলের দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বিজেপি কর্মীদের অনেকেই ২০১৯-এ লোকসভা ভোটের পর বিজেপিতে (BJP) যোগদান করেছিলেন। পরে, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের মুখেও অনেকে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন। ভোটপর্ব মেটার পরেই, পুরনো দলেই ফেরার ইচ্ছে প্রকাশ করেন ওই বিজেপি কর্মীরা। এ প্রসঙ্গে, বিধায়ক রামেন্দু সিংহ রায় বলেন, “আজ যাঁরা তৃণমূলে যোগদান করলেন তাঁরা আগে এই দলেরই কর্মী ছিলেন। মাঝে বিজেপিতে যোগদান করেন। তবে ভোটের পর তাঁরা দলে ফিরতে পারবেন কি না তা নিয়ে সমস্ত ব্লক ও পঞ্চায়েত প্রধান উপপ্রধান ও দলের কর্মীদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করা হয়েছে। সকলের সম্মতি নিয়েই এই প্রাক্তনীদের দলে ফেরানো হয়েছে।”
উল্লেখ্য, বঙ্গভোটের পর থেকেই সুর বদলাতে শুরু করেন বিজেপিতে (BJP) যাওয়া দলবদলু নেতৃত্বের একাংশ। তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক সোনালী গুহ, সরলা মূর্মূ, ডলিরানি, অমল আচার্য্যদের এই ‘সুর বদল’ ভাল চোখে দেখেনি বঙ্গ বিজেপি। পাশাপাশি, আদি-নব্য বিজেপি সংঘাতও অব্যাহত। ফলে, দল ধরে রাখতে তৃণমূলস্তরীয় কর্মীদের আটকাতে সচেষ্ট হয় রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ। সম্প্রতি হুগলিতেই, দলের আদি-নব্য় বিজেপির ‘কোন্দল’ সামলাতে গিয়ে বিজেপি কর্মীদের রোষের মুখে পড়েন খোদ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় জানান, দলের সমস্যা দলে মেটানো হবে। প্রয়োজনে কর্মীদের শো-কজ করা হতে পারে। এমনিতেই, শেষ নির্বাচনে এত বড় পরাজয় মানতে পারেনি বিজেপি কর্মীদের একাংশ। আসন্ন ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচনেও যে এর ফল বিজেপিকে ভুগতে হতে পারে বলে আশঙ্কা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের। এই অবস্থায়, বুথস্তরীয় কর্মীদের এইভাবে এক যোগে দল ছেড়ে যাওয়া মোটেও ভাল সংকেত নয় বলেই মনে করছে রাজ্য বিজেপি। শনিবার, তারকেশ্বরে বিজেপি কর্মীদের এই যোগদান প্রসঙ্গে যদিও মুখ খোলেননি স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।