Bankura : নেতিয়ে পড়ছে শিশু, ওঝার কাছে ছুটল পরিবার, হাসপাতালে যেতে দেরি না হলে…

Snake Bites : শিশুটিকে সাপে কামড়েছে বুঝতে পারেনি পরিবার। অসুস্থ শিশুকে নিয়ে ওঝার কাছে নিয়ে যায় তারা। পরে যখন হাসপাতালে নিয়ে যায়, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।

Bankura : নেতিয়ে পড়ছে শিশু, ওঝার কাছে ছুটল পরিবার, হাসপাতালে যেতে দেরি না হলে...
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 01, 2022 | 5:29 PM

বাঁকুড়া :সদা চঞ্চল ছেলে কেমন যেন নেতিয়ে পড়ছে। কী হয়েছে বুঝতে পারেননি বাবা-মা। এলাকার এক মহিলা ওঝার (exorcist) কাছে ছেলেকে নিয়ে গেলেন। শিশুটির বাবা-মার বক্তব্য, প্রিয়াঙ্কা মল্লিক ওরফে নন্দিনী নামে ওই মহিলা ওঝা তাঁদের ছেলের কপালে সিঁদুরের তিলক এঁকে দেন। বলেন, শিশুটিকে খারাপ আত্মায় ধরেছে। সন্ধ্যায় শিশুটিকে ফের আনার কথা বলেন। বাড়িতে নিয়ে আসার পর শিশুর শরীর আরও খারাপ হতে থাকে। তারপর এক হাসপাতাল ঘুরে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হল চার বছরের শিশুর। মৃত শিশুর নাম সঞ্জয় হাঁসদা। ঘটনাটি বাঁকুড়ার ইন্দাস থানার আকুই অঞ্চলের বুনকি গ্রামের। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুটিকে সাপে কামড়েছিল। আগে নিয়ে এলে বাঁচানোর চেষ্টা করা যেত।

বুনকি গ্রামের লক্ষ্মী হাঁসদা ও রেবতী হাঁসদার দ্বিতীয় সন্তান সঞ্জয়। গতকাল সকালে সাপে কামড়ায় বছর চারেকের ওই শিশুকে। অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। কিন্তু, তাকে যে সাপে কামড়িয়েছে তা বুঝতে পারেননি লক্ষ্মী ও রেবতী। ছেলে নেতিয়ে পড়ছে দেখে স্থানীয় ওঝা প্রিয়াঙ্কার কাছে নিয়ে যান তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, ওঝা প্রিয়াঙ্কা মল্লিক বলেন, তাঁদের ছেলেকে খারাপ আত্মায় ধরেছে। ওই আত্মাকে ছাড়ানোর জন্য ঝাড়ফুঁকের প্রয়োজন। সেজন্য সন্ধ্যেবেলায় সঞ্জয়কে তাঁর কাছে ফের নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন।

ওঝার কাছ থেকে বাড়িতে আনার পর দুপুরের দিকে সঞ্জয় আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন তাকে ইন্দাস ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের লোকজন। ইন্দাস ব্লক হাসপাতাল তড়িঘড়ি তাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে রেফার করে। কিন্তু বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়ার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়।

মৃত শিশুর মা রেবতী হাঁসদা বলেন, “সকালে ঘুম থেকে উঠে ছেলে বলেছিল খিদে পেয়েছে। ওকে ভাত দিয়েছিলাম। একটুখানি খেয়ে আর খেতে পারেনি। বলে, মা আমার পেটে জ্বালা করছে। কানটা ব্যথা করছে। বলতে বলতে চোখ বন্ধ হয়ে আসে। আমরা ওঝার কাছে নিয়ে যাই। ওঝা বলে, কিছুই হয়নি। খারাপ আত্মায় ধরেছে। সন্ধ্যেয় নিয়ে এসো, ছাড়িয়ে দেব।” ওঝার কাছে যাওয়া নিয়ে তিনি বলেন, তাঁদের শরীর খারাপ হলে ওঝার কাছেই সাধারণত যান।

Bankura

মৃত শিশুর মা রেবতী হাঁসদা

মৃত শিশুর পরিবারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই মহিলা ওঝা। তিনি দাবি করেন, শিশুটিকে যখন তাঁর কাছে আনা হয়, তখনই শরীর খুব খারাপ অবস্থায় ছিল। তিনিই শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। খারাপ আত্মায় ধরেছে, এমন কথা বলেননি বলে দাবি করেন ।

যুক্তিবাদী সমিতির তরফে সৌম্য সেনগুপ্ত বলেন, সাপের কামড়ের সঠিক লক্ষণ না জানা ও ওঝার উপর মানুষের অন্ধ বিশ্বাসের কারণেই শিশুটিকে হারাতে হল। এ ব্যাপারে আরও সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে।