কোভিড আক্রান্ত হলেই মিলবে বিনামূল্যে চিকিৎসা, সুস্থ হলেই ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে দিতে হবে প্লাজমা, শর্তসাপেক্ষে ‘নিজধর্ম’ পালনে রত চিকিৎসক

টেলিকলিংয়ের মাধ্যমে মোবাইলেই রোগীর সমস্যা শুনে নিচ্ছেন ড. বর্গী। তারপর নিজে হাতে প্রেসক্রিপশন লিখে ছবি তুলে হোয়াটস্যাপে পাঠিয়ে দিচ্ছেন প্রেসক্রিপশন। জরুরি অবস্থায় পাঠিয়ে দিচ্ছেন পাড়ার ছেলেদের।

কোভিড আক্রান্ত হলেই মিলবে বিনামূল্যে চিকিৎসা, সুস্থ হলেই ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে দিতে হবে প্লাজমা, শর্তসাপেক্ষে 'নিজধর্ম' পালনে রত চিকিৎসক
ড. ইন্দ্রনীল বর্গী, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 09, 2021 | 12:26 PM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: রোজ নিয়ম করে বাড়ছে করোনা (Corona) সংক্রমণের গ্রাফ। ক্রমবর্ধমান কোভিডে এ বার নয়া নজির গড়লেন বারুইপুরের সাউথ গড়িয়ার চিকিৎসক ড. ইন্দ্রনীল বর্গী। কোভিড আক্রান্ত হলেই বিনামূল্যে পরিষেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন ড. বর্গী। কিন্তু আছে একটা শর্ত। রোগী সুস্থ হয়ে ওঠার পরেই নিকটবর্তী সরকারি হাসপাতালে গিয়ে দিয়ে আসতে হবে প্লাজমা (Plasma) বা রক্ত। একমাত্র এই শর্তেই মিলবে চিকিৎসা পরিষেবা।

বারুইপুরের চিকিৎসক ড. ইন্দ্রনীল বর্গী গোসাবার ব্লক স্বাস্থ্য়কেন্দ্রের আধিকারিক হিসেবে কর্মরত। কিছুদিন আগে নিজেই করোনায় আক্রান্ত হয়ছিলেন চিকিৎসক। তারপর থেকে একান্তবাসেই আছেন তিনি। কিন্তু, প্রতি মুহূর্তে অনুভব করেছেন কোভিড রোগীর যন্ত্রণা। গোটা দেশে যেখানে শয্যার আকাল, টিকা (Vaccine) নেই, এমনকী নেই প্রাণদায়ী অক্সিজেনও, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্য়ুহার, সেখানে আশার আলো নিয়ে এলেন চিকিৎসক। সস্ত্রীক শুরু করলেন কোভিড রোগীর জন্য বিনামূল্যে পরিষেবা প্রদান।

টেলিকলিংয়ের মাধ্যমে মোবাইলেই রোগীর সমস্যা শুনে নিচ্ছেন ড. বর্গী। তারপর নিজে হাতে প্রেসক্রিপশন লিখে ছবি তুলে হোয়াটস্যাপে পাঠিয়ে দিচ্ছেন প্রেসক্রিপশন। জরুরি অবস্থায় পাঠিয়ে দিচ্ছেন পাড়ার ছেলেদের। সেই স্বেচ্ছাসেবকের দল পৌঁছে যাচ্ছে রোগীর দুয়ারে। প্রয়োজনে রোগাী পাচ্ছেন ওষুধ, অক্সিজেন ও অন্যান্য পরিষেবা। ড. ইন্দ্রনীলের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তাঁর বন্ধুরাও। ডাক্তার বন্ধুর নির্দেশমতো তাঁরাও ছুটে যাচ্ছেন এখানে-ওখানে। শুধু গোসাবা-বারুইপুর নয়, রাজ্যের বিভিন্ন জেলা এমনকী ভিন রাজ্য থেকেও আসছে ফোন। ধীরেসুস্থে  সমস্যা শুনে তখনই উপায় বাতলে দিচ্ছেন ড. ইন্দ্রনীল বর্গী। কিন্তু, কেন নিজে এই দায়িত্ব নিলেন চিকিৎসক? উত্তরে বললেন, “ডাক্তার হিসেবে প্রতিজ্ঞা করেছি মানুষের প্রাণ বাঁচাব। নিজধর্ম পালন করছি। এর বেশি আর কিছুই নয়। ভারতের প্রত্যেক ঘরে প্রাথমিক স্বাস্থ্যজ্ঞান নেই। চেষ্টা করছি সেই প্রাথমিক স্বাস্থ্যচেতনা ছড়িয়ে দেওয়া। যাতে, করোনা নিয়ে মানুষ আতঙ্কিত না হয়ে, সতর্ক হতে পারেন, তবেই এই যুদ্ধ জয় করা যাবে।”

আরও পড়ুন: মর্গে নেই জায়গা, কেবল নিমতলাতেই স্তূপাকারে জমে ৩০০ লাশ! তৃতীয় ঢেউয়ে তোলপাড় কলকাতা