ভোটে হার, মন খারাপ, তবু ‘আশার আলো’ দেখছেন সায়ন্তিকা, চালু ‘দুয়ারে ডাক্তার’ ও ‘দুয়ারে ওষুধ’

সায়ন্তিকা (Sayantika Banerjee) আরও বলেন, "ভোটের পর মন খারাপ নিয়ে ফিরে গিয়েছিলাম কলকাতায়। কিন্তু, আমি মানুষের পাশে, বাঁকুড়ার পাশে থাকতে চাই। তাই আবার চলে এসেছি।"

ভোটে হার, মন খারাপ, তবু 'আশার আলো' দেখছেন সায়ন্তিকা, চালু 'দুয়ারে ডাক্তার' ও 'দুয়ারে ওষুধ'
বাঁকুড়ায় সায়ন্তিকা, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 02, 2021 | 8:00 PM

বাঁকুড়া: ভোটযুদ্ধ মিটে গিয়েছে। জয়ের মুখ দেখেননি তৃণমূলের (TMC) তারকাপ্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় (Sayantika Banerjee)। কিন্তু, করোনাকালে হার ভুলে বাঁকুড়ার পথে নেমে এলেন সায়ন্তিকা। বুধবার, বাঁকুড়ায় ‘কোভিড কেয়ার ইউনিট’ থেকে শুরু করে, মহামারী মোকাবিলার (Corona) জন্য একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তৃণমূল নেত্রী। এদিন, তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের সম্পাদক পার্থ সারথি মুখোপাধ্যায়, কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্কের সত্যরূপ সিদ্ধান্ত এবং বাঁকুড়া পৌরসভার প্রশাসক অলকা সেন মজুমদার।

বুধবার, তৃণমূলের তারকা নেত্রী(Sayantika Banerjee) জানান, ‘লিভার ফাউন্ডেশন’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও বাঁকুড়ার আইলাকান্দি পিটিটিআই কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্কের যৌথ উদ্যোগে ২০টি শয্যার কোভিড কেয়ার সেন্টার চালু করা হবে। এই সেন্টারে বিনামূল্যে অক্সিজেন পরিষেবা-সহ চিকিৎসক, প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী ও অন্যান্য সুবিধা থাকবে। সরকারি নির্দেশিকা মেনেই করোনা আক্রান্তদের প্রাথমিক চিকিৎসা এই সেন্টারেই চলবে। পরে কোনও রোগীর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হবে। পাশাপাশি, চালু হবে, ‘দুয়ারে ডাক্তার’ এবং ‘দুয়ারে ওষুধ’ প্রকল্প। ‘দুয়ারে ডাক্তার’ প্রকল্পের মাধ্যমে করোনা আক্রান্তরা ঘরে বসেই টেলিমেডিসিনের সুবিধা পাবেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে যাঁরা একান্তবাসে থাকবেন তাঁদের জন্যই মূলত ‘দুয়ারে ওষুধ’ পরিষেবা। ঘরে বসেই করোনা রোগী পেয়ে যাবেন ওষুধ ও প্রয়োজনীয় ‘আইসোলেশন কিট’। আপাতত, তিনমাসের জন্যই চালু থাকবে এই ব্যবস্থা। তবে প্রয়োজনে এই সময়সীমা বাড়ানো হবে বলেই জানান তৃণমূল নেত্রী।

এদিন সায়ন্তিকা (Sayantika Banerjee) আরও বলেন, “ভোটের পর মন খারাপ নিয়ে ফিরে গিয়েছিলাম কলকাতায়। কিন্তু, আমি মানুষের পাশে, বাঁকুড়ার পাশে থাকতে চাই। তাই আবার চলে এসেছি। একমাস পর অনেক আশা নিয়ে বাঁকুড়ায় এলাম। ভোটে হারা জেতা বড় কথা নয়। মানুষের পাশে থাকাই বড় কথা। এটাই আমার অ্যাচিভমেন্ট। লড়াই তো থাকবেই। তবে মহামারীর সঙ্গে যুঝতে হবে আগে।”

একুশের হাইভোল্টেজ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে বাঁকুড়া থেকে তৃণমূলের হয়ে প্রার্থী হন সায়ন্তিকা। আচমকা তাঁর তৃণমূলে যোগদান, প্রার্থী হওয়া বিন্দুমাত্র মেনে নিতে পারেনি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। ভোটের সময়ে সায়ন্তিকার ধারে কাছে দেখা যায়নি তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের। কিন্তু তারপরেও নিজস্ব ‘ক্যারিশ্মায়’ জনসংযোগ বাড়িয়ে সমানে-সমানে গেরুয়া শিবিরকে টক্কর দেন তৃণমূল নেত্রী। যদিও জয় পাননি। কিন্তু, পরাজয়ের পরেও ‘অভিমানে দূরে’ সরে যাননি তিনি। করোনা মোকাবিলায় বাঁকুড়ায় ইতিমধ্যেই চালু করেছেন ‘দুয়ারে খাবার’, ‘দুয়ারে অক্সিজেন’। এছাড়াও, বাঁকুড়া স্টেডিয়ামে একটি সেফ হোম গড়ে তোলার কাজও শুরু হয়েছে তৃণমূল নেত্রীরই উদ্যোগে। প্রসঙ্গত, সায়ন্তিকাই প্রথম নন, পরাজিত আসানসোল দক্ষিণের তারকা প্রার্থী সায়নী ঘোষও নির্বাচনের পর ত্রাণ নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন ‘জনতার দুয়ারে’। কোভিড পরিস্থিতিতেও তৃণমূল প্রার্থী,কর্মী, বিধায়ক বা হেভিওয়েট নেতৃত্বদের এইভাবে ‘সম্মুখ সমরে’ নেমে কাজ করা বোধহয় এর আগে দেখেনি বঙ্গবাসী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই মূলত ছক সাজাচ্ছে তৃণমূল। জনতার বিশ্বাস অর্জনে জোর দিয়ে ভোটব্যাঙ্ক সুরক্ষিত করতেই কৌশলী ঘাসফুল শিবির এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

আরও পড়ুন: ‘দিদি আপনি কেবল তৃণমূলের মুখ্যমন্ত্রী নন…পদক্ষেপ করুন’, কাতর অনুরোধ বিজেপি বুথ সভাপতির