Bagtui Massacre: ‘করুক সিবিআই তদন্ত…’, হাইকোর্টের রায় নিয়ে চ্যালেঞ্জ করবে না রাজ্য
Bagtui Massacre: রাজ্য প্রশাসনকে মামলার সব নথি ও ধৃতদের সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে হবে।
কলকাতা: বগটুইকান্ডে (Bagtui Massacre) হাইকোর্টে (Calcutta High Court) ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। চারদিনের মাথায় আদালত নির্দেশ দিল নৃশংস এই হত্যালীলার তদন্ত করবে সিবিআই। বিরোধীরা তো এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে বটেই, তাৎপর্যপূর্ণ শাসকদলের অবস্থানও। রাজ্য সরকার হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাই এবার খতিয়ে দেখবে গোটা ঘটনা। প্রসঙ্গত, বগটুই ‘গণহত্যা’র ঘটনায় সিট গঠন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে হাইকোর্ট রাজ্য পুলিশের তদন্তে আস্থা রাখতে পারেনি। তাই এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করে আদালত। এরইসঙ্গে যুক্ত হয় আরও পাঁচটি জনস্বার্থ মামলা। দ্রুত শুনানি শেষ করে হাইকোর্ট শুক্রবার বলে, সুবিচার, নিরপেক্ষতা ও সমাজের আস্থায় সিবিআই তদন্ত জরুরি। একইসঙ্গে এদিন আদালত জানায়, তদন্তে রাজ্য প্রশাসনকে সিবিআইয়ের সঙ্গে সবরকমভাবে সহযোগিতা করতে হবে। রাজ্য প্রশাসনকে মামলার সব নথি ও ধৃতদের সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে হবে। রাজ্য পুলিশ বা সিট আর কোনও সমান্তরাল তদন্ত চালাতে পারবে না।
জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন অনিন্দ্যসুন্দর দাস। তাঁর আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি এদিন আদালতের বাইরে জানান, “একজন অভিযুক্তকে ১৪ দিনের বেশি পুলিশি হেফাজতে রাখা যায় না। তাই সিবিআইকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জিজ্ঞাসাবাদপর্ব শুরু করতে হবে। যেই সিবিআই কেস ডায়েরি পাবে, ধৃতদেরও সিবিআইয়ের হেফাজতে দিয়ে দিতে হবে।”
সিবিআই প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, “সিট কাজ করছিল। আজও বিভিন্ন চ্যানেলে দেখেছি ওখানকার পরিবার বলছে মুখ্যমন্ত্রীর উপর আস্থা আছে, সিটের উপর আস্থা আছে। তারপরও কেন সিবিআই হল এটা জানি না। আদালতই শেষ কথা। তবে এটাও বারবার প্রমাণ হয়েছে সিবিআই পক্ষপাতের উপরে নয়।”
এই রায় প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র বলে তো কিছু নেই। সেখানে এই ধরনের রায় আমাদের মরুদ্যানের অনুভূতি দেয়।” প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, “কোর্টের তত্ত্বাবধানে সিবিআই তদন্ত চাই আমরা। পশ্চিমবঙ্গে যারা সিটের মাথায় বসে, তারা নিজেরাই এক একজন রেজিস্ট্রার্ড ক্রিমিনাল।”
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের কথায়, “কয়লা পাচার কান্ডে তো ভাইপোর জেলে থাকার কথা। অফিসাররা তদন্ত সবই করেছে। কিন্তু পলিটিকাল ক্লিয়ারেন্স না হলে তারা তো কিছু করে না। দেখা যাক মুখ্যমন্ত্রী কবে দিল্লি যান, কার কার সঙ্গে কথা বলেন।” যদিও বিরোধীদের সমস্ত বক্তব্যকে উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “সিবিআই কোনওদিনই নিরপেক্ষ নয়। ওরা বিজেপির পক্ষে। ভালই হয়েছে। রাজ্যের দিকে কেউ আর প্রশ্ন তুলতে পারবে না। দেখুক ওরা।”
এদিন বগটুইয়ের ঘটনা নিয়ে সংসদেও সরব হন বাংলার দুই সাংসদ। রাজ্যসভায় এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন রাজ্যসভায় বিজেপি সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানিয়ে রাজ্যসভায় তিনি বলেন, বগটুইয়ে গণহত্যা চলছে। মানুষ ঘরবাড়ি ছেলে পালাচ্ছেন। এ রাজ্য আর বসবাসের যোগ্য নয়। অন্যদিকে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় লোকসভায় দাঁড়িয়ে বলেন, ক্ষতিপূরণ দিয়ে মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী, যাতে আসল সত্য বেরিয়ে না আসে।