HC On Bagtui Massacre: বগটুই কান্ডে তদন্তভার নিতে প্রস্তুত সিবিআই, জানাল কেন্দ্র, সিটের রিপোর্ট তলব আদালতের
HC On Bagtui Massacre: "যে ধরণের ঘটনা, সেটা নিঃসন্দেহে জনমানসে প্রভাব ফেলছে। তাই নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত। তদন্ত বিশদে করা উচিত যাতে সত্য উদঘাটন হয়।"
কলকাতা: বগটুই কান্ডে তদন্তভার নিতে কি আদৌ প্রস্তুত সিবিআই? কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলকে প্রশ্ন করে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। তদন্ত করতে যে সিবিআই প্রস্তুত, সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই বগটুই কান্ডে সিবিআই তদন্তের দাবি উঠেছে। আদালতের এদিনের পর্যবেক্ষণের পর এই বিষয়টি আরও জোরাল হল। রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। বুধবার স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করে আদালত। এদিনই শুনানির সময়ে আদালত স্পষ্ট করে, উপযুক্ত প্রমাণ সংগ্রহ করতে হবে। ডিজি, আইজিপি, পূর্ব বর্ধমান জেলা জজের পরামর্শে ওখানকার গ্রামবাসী, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনহারাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। সব ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করতে হবে। বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে সিটকে বগটুই কান্ডের রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এই ঘটনাকে সিরিয়াস ক্রাইম বলে উল্লেখ করেছেন।
প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব বলেন, “যে ধরণের ঘটনা, সেটা নিঃসন্দেহে জনমানসে প্রভাব ফেলছে। তাই নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত। তদন্ত বিশদে করা উচিত যাতে সত্য উদঘাটন হয়।” প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, একইসঙ্গে এই ঘটনার সমস্ত প্রমাণ সুরক্ষিত রাখতে হবে। যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে সিসিক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সব রেকর্ড করতে হবে। একটুও সময় নষ্ট না করে সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (CFSL) কে ওই জায়গায় যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। তবে এরপরও স্বজনহারাদের স্পষ্ট বক্তব্য, পুলিশের ওপর তাঁদের আস্থা নেই। পুলিশ এক্ষেত্রে নীরব দর্শক। তাই সঠিক তদন্ত পুলিশ করতে পারবে না বলেই অভিযোগ তাঁদের।
বগটুই কান্ডে আজ হাইকোর্ট যে নির্দেশগুলি দিয়েছে
১. এখনও পর্যন্ত তদন্তের কী অগ্রগতি, তা বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে সিটকে জমা দিতে হবে আদালতে।
২. কেন্দ্র ও রাজ্যের ফরেনসিক টিম- এলাকায় যাবে ও নমুনা সংগ্রহ করবে।
৩. সিসিটিভি দিয়ে পুরো এলাকা ঘিরে ফেলা হবে। যাতে কোনও ভাবেই তথ্য প্রমাণ লোপাট করা না যায়।
৪. গোটা প্রক্রিয়া হবে পূর্ব বর্ধমানের জেলা বিচারকের তত্ত্বাবধানে।
৫. উপযুক্ত প্রমাণ সংগ্রহ করতে হবে। ডিজি, আইজিপি, পূর্ব বর্ধমান জেলা জজের পরামর্শে ওখানকার গ্রামবাসী, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনহারাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
বগটুই কান্ডে যাঁরা মামলা দায়ের করেছেন, তাঁদের বক্তব্য, সিটের তদন্তে থাকা দুই অফিসার জ্ঞানবন্ত সিং ও সঞ্জয় সিংয়ের পূর্ব রেকর্ড রয়েছে। জ্ঞানবন্ত সিং একটি মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন, সঞ্জয় সিংকে নির্বাচন কমিশন শোকজ করেছিল, তাহলে তাঁদের কীভাবে সিটে রাখা হল? এই বিষয়টি আদালতে জানান মামলাকারীরা। এরপরই প্রধান বিচারপতি অ্যাডকোভেট জেনারলেন এস এন মুখোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করেন, আজই যদি এই তদন্ত সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়, তাহলে রাজ্যের কোনও আপত্তি রয়েছে কিনা। এ বিষয়ে এজি জানান, যেহেতু সিট কাজ করছে, তাই এখনই সিবিআই নয়। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টোর মধ্যেই রাজ্যকে তদন্তের কেস ডাইরি বা রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
ইতিমধ্যেই বগটুই কান্ডে ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে আদালতে পেশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত তাঁরা লুকিয়ে ছিলেন গোপন আস্তানায়, বুধবার সকালে বেরিয়ে এসে তাঁরা করছেন ভয়ঙ্কর অভিযোগ। দমকলকে গ্রামে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় প্রথমে। দীর্ঘক্ষণ গ্রামে ঢুকতেই পারেনি দমকল। এক্ষেত্রে প্রশ্ন, দমকলকে কারা আটকেছিল? প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, পুলিশের সামনেই ভাদু বাহিনী তাণ্ডব চালিয়েছে। কেন দর্শক পুলিশ? সে প্রশ্নও থাকছে। আপাতত বৃহস্পতিবারই বগটুই যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এই ঘটনার নেপথ্যে বিরোধীদের চক্রান্তের তত্ত্বই খাঁড়া করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee On Bagtui Massacre: ‘ল্যাংচা খেয়ে ল্যাংড়াতে ল্যাংড়াতে ওরা যাচ্ছে ওখানে’, ‘রেডি’ থেকেও আজ বগটুই গেলেন না মুখ্যমন্ত্রী