Bagtui Massacre: ‘রামপুরহাট থানার পুলিশের সামনেই জ্বালিয়ে দিল, ওরা একতরফা, ন্যায়বিচার করে না’
Rampurhat: তৃণমূলের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেনের নির্দেশেই আগুন লাগানো হয়েছে, এমন অভিযোগ সামনে এসেছে।
বীরভূম: আরও একটা আতঙ্কের রাত কাটল বীরভূমের বগটুই গ্রামে। সেখানে এখন শুধুই শশ্মানের নিস্তব্ধতা। স্বজনহারাদের চোখে-মুখে শুধু কান্নার ছাপ। নাওয়া-খাওয়া ভুলেছেন তাঁরা। আর মুখে একটাই নাম ‘আনারুল’। তৃণমূলের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেনের নির্দেশেই আগুন লাগানো হয়েছে, এমন অভিযোগ সামনে এসেছে। যদিও, সেই অভিযোগের কথা শুনে বিন্দুমাত্র বিচলিত নন তিনি। তবে যাঁরা সবটুকু হারিয়েছেন তাঁরা চাইছেন যোগ্য শাস্তি। শুধু তাই নয়, নৃশংস এই ‘হত্যাকাণ্ডে’ সিবিআই তদন্ত চাইছেন স্বজনহারাদের পরিবার।
বুধবার TV9 বাংলার একাধিক প্রতিনিধি পৌঁছে গিয়েছিলেন ঘটনাস্থলে। ক্যামেরার সামনেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন এক যুবতী। সদ্যই নিজের দিদি-জামাইবাবু, মাকে হারিয়েছেন তিনি। কপাল জোরে নিজে সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন না বলে বেঁচে গিয়েছেন। কাঁদতে-কাঁদতে ক্যামেরার সামনে রামপুরহাট থানার পুলিশের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। বললেন, ‘রামপুরহাট থানার পুলিশ কোনও দিন ন্যায় বিচার করে না। একচেটিয়া কাজ করে। রাজ্য পুলিশের প্রতি আর কোনও ভরসা নেই। সিবিআই তদন্ত চাই।’
মৃতার মেয়ে জানান, “আমার বোনের নতুন বিয়ে হয়েছে। নতুন জামাই। বেরাতে এসেছিল। ওদের শরীরে ডিজ়েল জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। বাঁচাও-বাঁচাও করে চিৎকার করল। রামপুরহাট থানার পুলিশ ছিল। তাদের উপস্থিতিতেই জ্বলেছে ওঁরা। তবুও, কেউ উদ্ধার করতে যায়নি। আমার মা জ্বলে গেল পুরো। মা ফোন করে বলছে বিটি বাঁচাও। আমি আহমেদপুরে পার্টির সদস্যদের কাছে গেছি। সবার দরজা বন্ধ। কেউ খোলেনি। রামপুরহাটের ব্লক সভাপতি আনারুল, সে থাকাকালীন এই কাজ করিয়েছে। আনারুল পুলিশকে যা বলে, পুলিশ তাই শোনে। রামপুরহাট থানার পুলিশ কোনও দিন ন্যায় বিচার করে না। একচেটিয়া কাজ করে। ভাদু মরে যাওয়ার পরও গ্রামবাসী তাকেই ভয় করছে। শেষ দেখাও দেখতে পেলাম না মাকে। আমাদের হাতে মৃতদেহ তুলে দেওয়া হল না। আমার মা ওদের হাতে-পায়ে ধরে বলেছিল আমার মেয়ে-জামাইকে ছেড়ে দাও। তাও দেয়নি। সিবিআই তদন্ত চাই। রাজ্য পুলিশের প্রতি আর কোনও ভরসা নেই।
সূত্রের খবর, কোনও শর্ট সার্কিট বা টিভি থেকে আগুন লাগা নয়। প্রত্যক্ষ প্রমাণ রয়েছে পরতে-পরতে। মানুষগুলিকে মেরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে নাকি চারিদিক বন্ধ করে ভিতরে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এদিকে গতকালই মৃতদেহ সৎকার হয়ে যায়। আইন বলছে, পরিবার শনাক্ত করবে। তাহলে কি আইন ভেঙেই মৃতদেহগুলিকে মাটি দিয়ে দেওয়া হল? এখন সেই প্রশ্ন উঠছে গ্রামগুলিতে।