Suri Bank: কোটি টাকার লেনদেন! শুনেই আকাশ থেকে পড়ছেন মমতা, সুন্দরীরা; ‘ভূতে’ করল সই?
Suri Bank: কেলেঙ্কারির তালিকায় নয়া সংযোজন এই সিউড়ি সমবায় ব্যাঙ্ক। বৃহস্পতিবারই সেই ব্যাঙ্কের ১৭৭ টি অ্যাকাউন্ট সিল করে দিয়েছে সিবিআই।
বীরভূম : সই করা তো দূরের কথা, নিজের নামটাও পড়তে পারছেন না বীরভূমের (Birbhum) হরিহরপুরের সুন্দরী বসাকি। আর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট? সুন্দরী বলছেন, তাঁর একটাই অ্যাকাউন্ট আছে, তবে সেটা সিউড়ি সমবায় ব্যাঙ্কে (Suri Co Operative Bank) নয়। আর মাটির ঘরে বসে কোটি টাকার লেনদেন সুন্দরী দেবীর কাছে যেন ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখার মতো। তাহলে সিউড়ির ওই ব্যাঙ্কে সুন্দরী বসাকির নামে অ্যাকাউন্ট খুলল কে? শুধু সুন্দরী নন, হরিহরপুর বা পুরন্দরপুরের মতো গ্রামের একাধিক বাসিন্দা বড় বিভ্রান্তিতে পড়েছেন। একটা দুটো নয়, সিউড়ি সমবায় ব্যাঙ্কে ১৭৭ টি অ্যাকাউন্ট বেনামে খোলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। আর সে সব অ্যাকাউন্ট যাঁদের নামে, তাঁদের মধ্যে অনেকেই দাবি করেছেন, এসব কিছুই জানেন না তাঁরা। এমনকী মৃত ব্যক্তির নামে থাকা অ্যাকাউন্টও চালু আছে এখনও।
গরু পাচার থেকে শুরু করে বালি পাচার, গত কয়েক মাসে যে ছবি উঠে এসেছে, তাতে বলাই যায়, দুর্নীতির আখড়া হয়ে উঠেছে বীরভূম। আর সেই কেলেঙ্কারির তালিকায় নয়া সংযোজন এই সিউড়ি সমবায় ব্যাঙ্ক। বৃহস্পতিবারই সেই ব্যাঙ্কের ১৭৭ টি অ্যাকাউন্ট সিল করে দিয়েছে সিবিআই। সবকটি অ্যাকাউন্টে একজনেরই সই আছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের। সুন্দরী বসাকি বা ভগীরথ ঘোষদের নামে কীভাবে অ্যাকাউন্ট খোলা হল? নথিই বা মিলল কী করে? তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
মৃত ভাইয়ের নামে অ্যাকাউন্ট
ভগীরথ ঘোষ নামে এক বাসিন্দার ও তাঁর ভাইয়ের নামে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে ওই ব্যাঙ্কে। ভগীরথ জানান, তিন বছর আগে তাঁর ভাই মারা গিয়েছেন। ভাইয়ের একটাই অ্যাকাউন্ট ছিল স্টেট ব্যাঙ্কে। মৃত্যুর পর সেটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, অ্যাকাউন্ট কী ভাবে খোলা হল কী করে জানব? চালু আছে মৃত ভাইয়ের নামে থাকা অ্যাকাউন্টও।
সুন্দরী বসাকির নামে সই করল কে?
যাঁরা সই করতেই জানেন না, তাঁদের সইও আছে ব্যাঙ্কের বইতে। তেমনই একজন সুন্দরী বসাকি। সেই বৃদ্ধা বলেন, ‘আমার আর কোনও অ্যাকাউন্ট নেই। সইও করতে পারি না। টিপ সই দিয়ে টাকা লেনদেন করেন তিনি। তাহলে ব্যাঙ্কে দেওয়া মোবাইল নম্বরটা কার? সুন্দরী হেসে ফেলেন। বলেন, কোনও মোবাইলই নেই আমার।’
মমতা মৃদ্ধা নামে আরও এক মহিলাও জানান, সমবায় ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলেননি তিনি। আর যে সই আছে, সেটা তাঁর নয় বলেই দাবি করেছেন মমতা। কেউ কেউ ইতিমধ্যে সিবিআই-এর নোটিসও পেয়েছেন। তাঁরা বলছেন, সিবিআই অফিসে যাবেন, উত্তরও দেবেন।
কী বলছেন নুরুল ইসলাম?
এই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বর্তমানে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। তাঁর ব্লকের অনেক বাসিন্দার সঙ্গেই এমন ঘটনা ঘটেছে। তাঁর দাবি, এই ব্যাঙ্কে অনুব্রত মণ্ডলের কোনও অ্যাকাউন্ট নেই। তিনি জানান, অনুব্রতর অ্যাকাউন্টের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়েছিল। তাঁরা সবরকমভাবে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে সহযোগিতা করতে চান বলেও জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, প্রত্যেকের কেওয়াইসি আছে, ফলে কোনও কেলেঙ্কারি হওয়ার কথা নয়। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই এই সব অভিযোগ সামনে আনা হচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি।