Visva Bharati: ‘মুখ্যমন্ত্রীর আশীর্বাদ না থাকলে সুবিধা, আমরা প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে চলি’, বিবৃতি বিশ্বভারতীর লেটারহেডে

Visva Bharati news: কড়া ভাষায় বিশ্বভারতীর লেটারহেডে প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'আপনার আশীর্বাদ না থাকলে আমাদের সুবিধা, কারণ আমরা প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে চলতে অভ্যস্ত।'

Visva Bharati: 'মুখ্যমন্ত্রীর আশীর্বাদ না থাকলে সুবিধা, আমরা প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে চলি', বিবৃতি বিশ্বভারতীর লেটারহেডে
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 01, 2023 | 11:20 PM

বোলপুর: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক বিবৃতি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Visva Bharati University) লেটারহেডে। বিশ্বভারতীর লেটারহেডে প্রকাশিত ওই তিন পাতার একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির নীচে সই রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। সেখানে শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কান দিয়ে দেখেন। কারণ, তাঁকে তাঁর স্তাবকরা যা শোনান, তিনি তাই বিশ্বাস করেন এবং টিপ্পনি করেন।’ বিশ্বভারতীর অধ্যাপক ও পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করার পর তিনি জনসমক্ষে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য’ করেছেন বলেও দাবি করা হয়েছে ওই প্রেস বিবৃতিতে। আরও কড়া ভাষায় লেখা হয়েছে, ‘আপনার আশীর্বাদ না থাকলে আমাদের সুবিধা, কারণ আমরা প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে চলতে অভ্যস্ত।’

পাশাপাশি নাম না করে অনুব্রত মণ্ডলের প্রসঙ্গও টেনে আনা হয়েছে ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে। লেখা হয়েছে, ‘আপনার প্রিয় শিষ্য যাঁকে না হলে আপনি বীরভূম ভাবতে পারেন না, তিনিও জেলে। কবে বেরোবেন কেউ জানে না। আগে সাবধান করলে আপনি দুর্নাম থেকে বাঁচতে পারতেন।’ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের লেটারহেডে প্রকাশিত এই প্রেস বিজ্ঞপ্তির পর ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন মহলে। বিশেষ করে রাজ্যের প্রথম সারির এক বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে এহেন বিস্ফোরক মন্তব্য ঘিরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

প্রেস বিবৃতিতে দাবি করা হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপককে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে যে কথা বলা হচ্ছে, তাও ‘সর্বৈব ভুল’। তাদের বক্তব্য, ওই অধ্যাপককে শাস্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল এবং সেটি নিয়ে ওই অধ্যাপক মামলা করেছেন। অর্থাৎ, বিষয়টি এখনও বিচারাধীন বলেই দাবি বিশ্বভারতীর। পাশাপাশি ছাত্ররাও যদি ক্ষমা চাইত, তাহলে শাস্তি মুকুব হয়ে যেত বলেই বক্তব্য বিশ্বভারতীর।

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় লেটারহেডে প্রকাশিত ওই প্রেস বিবৃতিতে এই বিস্ফোরক মন্তব্য প্রসঙ্গে টিভি নাইন বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বিশ্বভারতী যদি কোনও প্রেস রিলিজ করে থাকে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে, তাহলে বিষয়টির আদালত মীমাংসা করুক। মুখ্যমন্ত্রী অমর্ত্য সেনের পাশে যেভাবে দাঁড়িয়েছেন, তা ঠিকই করেছেন। এরকম একজন মনীষীর পাশে সবার দাঁড়ানো উচিত। দলমত নির্বিশেষে এটি করা উচিত। কিন্তু জমি সংক্রান্ত বিষয়টি আমাদের মতো সাধারণ লোকের পক্ষে বলা সম্ভব নয়। তবে এই ধরনের তির্যক মন্তব্য বা অপমানসূচক মন্তব্য উপাচার্যের করা উচিত নয় বলেই আমি মনে করি।’ পবিত্র সরকারের কথায়, উপাচার্য যেন আইনের উপর বিষয়টি ছেড়ে দেন এবং অপেক্ষা করেন। তাঁর বক্তব্য, উপাচার্য বাঙালিকে যতটা বোকা ভাবেন, বাঙালি তার থেকে অনেক বেশি চালাক।

তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারও কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন বিশ্বভারতীর এই প্রেস বিবৃতির। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেভাবে তৈরি করেছেন বা জওহরলাল নেহরু যেভাবে গঠনতন্ত্র তৈরি করেছেন, সেগুলির সঙ্গে বিশ্বভারতীর বর্তমান অবস্থান কোনওভাবেই খাপ খায় না বলেই মনে করছেন তিনি। বিশ্বভারতীর গৈরিকীকরণ করে বিজেপির অফিস হিসেবে কাজ করার চেষ্টা চলছে বলেই মত জয়প্রকাশের। বললেন, মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করা বিশ্বভারতীর যদি মনে হয় সাধু রুচি… আচার্য যদি উপাচার্যকে না আটকান, তাহলে আচার্যের উপরেই আঙুল উঠবে।’

তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও বলছেন, ‘যখন বিশ্বভারতী বিশ্বকবির মার্গদর্শনে চলে না লিখে, লেখা হয় প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে চলতে অভ্যস্ত, তাতেই বোঝা যায় এটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নয়, বিজেপির আখড়ায় তৈরি রাজনৈতিক চিরকুট। এতে যে শালীনতা থাকবে না, সেটাই স্বাভাবিক। সমস্ত মুখোশ খুলে এরা যেভাবে বিজেপির শাখা সংগঠনের মতো আচারণ করছে, তা অত্যন্ত দুঃখের।’