Amaryta Sen: মমতার নির্দেশে ‘প্রতীচি’র পাশে আন্দোলনের তোড়জোড়, বন্ধ করতে মহকুমা শাসককে চিঠি বিশ্বভারতীর
Amaryta Sen: নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে রেখেছেন, একথা উল্লেখ করে জমি ফেরত চেয়ে ৩ টি চিঠি দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
বোলপুর: অমর্ত্য সেনের বাড়ির কাছে শুরু হচ্ছে আন্দোলনের প্রস্তুতি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে অবস্থানে বসতে চলেছেন বাউল শিল্পী ও বিশিষ্টজনেরা। শুরু হয়েছে মঞ্চ তৈরির কাজও। সেই আন্দোলনে আপত্তি জানিয়ে বোলপুরের মহকুমা শাসককে চিঠি দিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। ক্যাম্পাসের পরিবেশ বিঘ্নিত হবে, এই মর্মে বোলপুর মহকুমা শাসককে চিঠি দেওয়া হয়েছে বিশ্বভারতীর তরফে। শুধু তাই নয়, উপাচার্যের প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগও দায়ের করেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদের হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে বলে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদমূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে সম্প্রতি। এতেই প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ। উল্লেখ্য, অধ্যাপক অমর্ত্য সেনের ‘প্রতীচি’ বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ১৪৫ ধারা জারি করা রয়েছে। তারপরও কেন অবস্থানের কর্মসূচি চলছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিশ্বভারতী।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে রেখেছেন, একথা উল্লেখ করে জমি ফেরত চেয়ে ৩ টি চিঠি দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। জমি খালি করার নির্দেশ দিয়ে শান্তিনিকেতনের ‘প্রতীচি’ বাড়িতে নোটিসও লাগিয়ে দেয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। ৬ মে-র মধ্যে ওই ১৩ ডেসিমেল জমি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে সে নোটিসে।
তার আগে ‘প্রতীচি’ বাড়ির পাশে অমর্ত্য সেনের মামাতো ভাই শান্তভানু সেনের বাড়িতে একটি অবস্থান মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। প্রতিবাদে সামিল হওয়ার কথা কবীর সুমন, পরিচালক গৌতম ঘোষ, চিত্র শিল্পী যোগেন চৌধুরী, শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য প্রমুখের। তার আগে ৫ মে মানববন্ধন করেও প্রতিবাদ করার উদ্যোগ নিয়েছেন শান্তিনিকেতনের বেশ কিছু মানুষজন। এর আগে গত ২ মে অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদের হুঁশিয়ারির প্রতিবাদে শান্তিনিকেতনের রাস্তায় ‘প্রতীচি’ বাড়ি পর্যন্ত মশাল মিছিল করেছিল তৃণমূল নেতৃত্ব।
বৃহস্পতিবারই বোলপুর মহকুমা শাসককে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব মানবেন্দ্রনাথ সাহা একটি চিঠি দিয়েছেন। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, অধ্যাপক অমর্ত্য সেনের জমি সংক্রান্ত বিষয় বিচারাধীন। ‘প্রতীচি’ বাড়ির কাছে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট ১৪৫ ধারা জারি করেছে। কিন্তু, সদ্য ২ মে মশাল মিছিল হয়েছে প্রতীচী বাড়ি পর্যন্ত। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি। তাঁর আরও দাবি, ৫ মে একটি ধরনা, বিক্ষোভ, অবস্থান হওয়ার কথা লিফলেটে রয়েছে। এতে বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসে পঠন-পাঠন বিঘ্নিত হবে। বিশ্বভারতীর পরিবেশ রক্ষার্থে এই ধরনা, অবস্থান বন্ধ করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নির্দেশ দিয়েছিলেন, অমর্ত্য সেনের বাড়ির সামনে অবস্থান করতে হবে। উচ্ছেদ রুখতে তৃণমূল নেতৃত্বকে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছিলেন তিনি। বাউলদের নিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে বসতেও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে, বৃহস্পতিবারই কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, ৬ মে অমর্ত্য সেন জায়গা না ছাড়লেও বিশ্বভারতীয় কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না।