Babita Sarkar: দীর্ঘ লড়াই শেষে অঙ্কিতার স্কুলে পা রাখলেন ববিতা

Babita Sarkar: চাকরির জন্য দীর্ঘ আইনি লড়াই লড়েছেন ববিতা। অবশেষে মিলেছে নিয়োগপত্র। স্কুলে পা রাখলেন তিনি।

Babita Sarkar: দীর্ঘ লড়াই শেষে অঙ্কিতার স্কুলে পা রাখলেন ববিতা
স্কুলে গেলেন ববিতা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 04, 2022 | 11:49 AM

কোচবিহার: মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা গার্লস হাই স্কুল। মফস্বলের এই স্কুলের নাম এলাকার বাইরে তেমন পরিচিত ছিল না। তবে গত কয়েক মাসের মধ্যে বদলে গেল অনেক কিছুই। আদালতের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে ওই স্কুলেরই শিক্ষিকা অঙ্কিতার। প্রায় বছর চারেক ধরে অঙ্কিতা শিক্ষকতা শুরু করেছেন ওই স্কুলে। এবার পূরণ হল সেই শূন্যস্থান। অঙ্কিতার পদে যোগ দিলেন ববিতা সরকার। তিনি যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে চাকরি থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে, এই দাবিতেই ছিল ববিতার লড়াই। সেই আইনি লড়াইয়ে জয় পাওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই নিয়োগ পত্র পেয়েছেন তিনি। রাজ্য জুড়ে নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগে যে বিক্ষোভ চলছে, তাতে কার্যত অক্সিজেন জুগিয়েছেন ববিতা।

সোমবার প্রথমবার স্কুলে গিয়ে ববিতা বলেন, ‘আমি কারও বিরুদ্ধে লড়াই করিনি। মেধাতালিকা নিয়ে যে বিভ্রাট হয়েছিল, তার বিরুদ্ধেই লড়াই করেছি শুধুমাত্র।’ এ দিন স্কুলে নথিপত্রে সই-সাবুদের কাজ করলেন তিনি। শীঘ্রই শিক্ষকতা শুরু করবেন।

পরেশ চন্দ্র অধিকারী তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর ২০১৮ সালে ২৪ নভেম্বর তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকার পদে নিযুক্ত হন। তখনই হইচই একটু হয়েছিল বটে। কানাঘুষো চলত না এমন নয়! কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব বন্ধ। ধীরে ধীরে অঙ্কিতার নামও ভুলে যেতে বসেছিলেন সবাই৷ ৪১ মাস নিশ্চিন্তেই চাকরি করেন অঙ্কিতা। কিন্তু চলতি বছরে ফের শিরোনামে উঠে আসেন অঙ্কিতা অধিকারী ও ইন্দিরা গার্লস হাইস্কুল।

গত মে মাসের ১৭ তারিখ হাইকোর্ট অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয়। তাঁর বাবা রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী। মন্ত্রীর মেয়ের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠায় পরেশ চন্দ্র অধিকারীকেও সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়। অভিযোগ ছিল, ২০১৭ সালের নভেম্বরে এসএসসি পরীক্ষার দ্বিতীয় মেধাতালিকায় অঙ্কিতার নাম ওঠে। অঙ্কিতাকে দ্বিতীয় তালিকার একেবারে প্রথমে অবৈধভাবে নিয়ে আয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। ওই মেধাতালিকার ২০ নম্বরে যে চাকরিপ্রার্থীর নাম ছিল, তাঁর থেকেও ১৬ নম্বর কম পেয়েছিলেন অঙ্কিতা। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬১। যেখানে ২০ নম্বরে থাকা পরীক্ষার্থী ববিতার নম্বর ছিল ৭৭। অভিযোগ, অঙ্কিতার নাম মেধাতালিকায় ঢোকানোয় ববিতা চাকরির সুযোগ হারান। এনিয়েই ববিতা কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন। সেই মামলার ভিত্তিতে নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। নির্দেশ মত একাধিকবার হাজিরা দিতে হয়েছিল পরেশ অধিকারীকে।

তিনদিন পর ২০ মে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, অঙ্কিতাকে স্কুলের চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে। পাশাপাশি পুরো বেতন ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। চলতি মাসের ২৪ তারিখ কলকাতা হাইকোর্ট ফের নির্দেশ জারি করে। সেখানে বলা হয়, অঙ্কিতার জায়গায় ববিতাকে চাকরি দিতে হবে। অঙ্কিতার ফিরিয়ে দেওয়া টাকাও ববিতাকেকে দিতে হবে।

মন্ত্রী পরেশ চন্দ্র অধিকারীর কন্যার জন্য চাকরি থেকে বঞ্চিত হন শিলিগুড়ির ববিতা সরকার। সেই ববিতা এবার আইনি লড়াইতে জয় হাসিল করলেন। অঙ্কিতার স্কুলেই চাকরিতে যোগ দিলেন সোমবার। ববিতার এই লড়াইয়ে একটি বৃত্ত যেন সম্পূর্ণ হল।