Coochbehar: তুমি যে এ ঘরে… গোটা বাড়ি দৌড়ে বেড়াচ্ছে চিতাবাঘ, হাড়হিম করা দৃশ্য কোচবিহারে

Leopard: বুধবার রাতেই চিতাবাঘটি ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অমরতলার ওই বাড়িটিতে ঢুকে পড়ে বলে অনুমান এলাকার লোকজনের।

Coochbehar: তুমি যে এ ঘরে... গোটা বাড়ি দৌড়ে বেড়াচ্ছে চিতাবাঘ, হাড়হিম করা দৃশ্য কোচবিহারে
এই চিতাবাঘটি নিয়েই হইচই কোচবিহারে। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 27, 2022 | 4:10 PM

কোচবিহার: গৃহস্থের বাড়িতে সাত সকালে হাজির হল ‘অতিথি’। হলুদ গায়ে কালো কালো ছোপ। এ ঘর ও ঘর ঘুরে বেড়াচ্ছে। অতিথি দেখে তো বাড়ির লোকের গলা শুকিয়ে কাঠ। কেন না এ অতিথি চিতাবাঘ। কোচবিহারের কোতোয়ালি থানা এলাকার অমরতলায় এই ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার এই চিতাবাঘ দেখতে ভেঙে পড়ে পাড়া। পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করা হয় পুলিশ। জারি করা ১৪৪ ধারা। হাজির হন বনদফতরের আধিকারিকরা। ঘুমপাড়ানি গুলিতে বশে আনা হয় তাকে। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় খাঁচাবন্দি করা হয়।

বুধবার রাতেই চিতাবাঘটি ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অমরতলার ওই বাড়িটিতে ঢুকে পড়ে বলে অনুমান এলাকার লোকজনের। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা নাগাদ প্রথম কোচবিহার শহরের মানুষ জানতে পারেন, অমরতলায় একটি বাড়িতে চিতাবাঘ ঢুকেছে। মনোজ সরকার নামে স্থানীয় বাসিন্দা প্রথম চিতাবাঘটিকে দেখতে পান। এরপরই বাড়ির বিভিন্ন ঘর, বাথরুম এমনকী বাইরে এসেও ঘোরাঘুরি শুরু করে চিতাবাঘটি। উল্টোদিকের বাড়ি থেকে তাকে মোবাইলবন্দি করা হচ্ছে বুঝে চোখ তুলে দেখেও নেয় কয়েকবার। এদিকে ততক্ষণে লোকজনের ভিড় জমতে শুরু করেছে। হইহই বাড়িটির বাইরে। চিতাবাঘটিও বুঝে গিয়েছে, এবার তার ধরা পড়ার পালা। বনদফতরের কর্মীরা জানান বাঘটিকে বাথরুমের ভিতর থেকে জালে জড়িয়ে বের করে আনা হয়। তবে তার আগে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়। বনকর্মীরা জানান, নিয়মমাফিক চিকিৎসার পর তাকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে।

বাঘ সংরক্ষণ কর্মী জয়দীপ কুণ্ডু বলেন, “নিশ্চয়ই ওয়াইল্ড লাইফ কোথাও বাধা পাচ্ছে। সে কারণেই এভাবে এরা লোকালয়ে চলে আসছে। সেটা তো আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। কোথাও চিতাবাঘ, কোথাও ভাল্লুক, কোথাও হাতি এমনকী বাঘও বেরোচ্ছে। সেটা তো একটা দিক। এ নিয়ে বনদফতর, প্রশাসন নিশ্চয়ই চিন্তিত। তারা পর্যালোচনাও করছে। কিন্তু মানুষ যেভাবে হামলে পড়ে ছবি তোলার জন্য হুড়োহুড়ি করছে তাতে যে কোনও সময় কোনও ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এটা তো সার্কাস নয়! যদি বিপদ হোত তা হলে চিতাবাঘকে সঙ্গে সঙ্গে কাঠগড়ায় তোলা হোত। আমাদেরও তো এগুলো খেয়াল রাখতে হবে। প্রশাসন, বনকর্মীদের দক্ষতায় বাঘ খাঁচাবন্দি তো হল। কিন্তু যদি ওখানকার মানুষ আর একটু সহযোগিতা করতেন, আমার মনে হয় আরও তাড়াতাড়ি কাজটা করা সম্ভব হোত। আমরা সমাজের অঙ্গ। আমাদেরও তো কিছু দায়িত্ব আছে। সে দায়িত্ব নিতে হবে। সবটাই প্রশাসনের আধিকারিকরা দেখবেন তা হয় না।”

অন্যদিকে বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ নীলাঞ্জন রায়চৌধুরী বলেন, “উত্তরবঙ্গে চায়ের বাগান বা বিভিন্ন জায়গায় লেপার্ড থাকে। লেপার্ড প্রায়ই লোকালয় সংলগ্ন এলাকায় ঘোরে। এটাই এদের বৈশিষ্ট্য। কিন্তু এটাও দেখতে হবে আমাদের অরণ্য অনেক কমে এসেছে। এত বড় দেশে মাত্র ৫ শতাংশ প্রটেক্টেড এরিয়া। ফলে বন্যপ্রাণের লোকালয়ে ঢুকে পড়ার প্রবণতাও বাড়ছে।”

আরও পড়ুন: Digha Hotel: ভয়ঙ্কর দৃশ্য দিঘায়! দাউ দাউ করে জ্বলছে হোটেল, প্রাণ বাঁচাতে কার্নিশে ঝাঁপ পর্যটকের