ভরা কোটালে ভাঙন ভাগীরথীতে, ‘ইয়াসের’ দাপটে ঘর ছেড়ে ত্রাণ শিবিরেই আশ্রয় খুঁজছে মানুষ

শান্তিপুরের গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এর আগে বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও সেই কাজ এগোয়নি। বুধবার, নদীর (Bhagirathi River) ভাঙন শুরু হওয়ার আধঘণ্টার মধ্যে প্রায় ২ বিঘার বেশি চাষ জমি নদীগর্ভে চলে যায় বলে অভিযোগ

ভরা কোটালে ভাঙন ভাগীরথীতে, 'ইয়াসের' দাপটে ঘর ছেড়ে ত্রাণ শিবিরেই আশ্রয় খুঁজছে মানুষ
ভাঙছে ভাগীরথী, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 26, 2021 | 7:23 PM

নদিয়া: ভরা কোটালের জেরে ভাঙন ধরল ভাগীরথীতে। বুধবার, একদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের (Cyclone Yaas) দাপট, অন্যদিকে, ভরা কোটালের জেরে ক্রমশ জলস্তর বাড়তে থাকে নদীতে। দুপুরের পর থেকে আচমকা নদীর পাড় ধরে কৃষি জমি ও সাধারণের যাতায়াতের রাস্তাটি ভেঙে পড়তে শুরু করে। ভাঙনের জেরে শান্তিপুরে এলাকার কয়েকটি বাড়িও বিগতদিনে নদীগর্ভে চলে যায়।

শান্তিপুরের গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এর আগে বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও সেই কাজ এগোয়নি। বুধবার, নদীর (Bhagirathi River) ভাঙন শুরু হওয়ার আধঘণ্টার মধ্যে প্রায় ২ বিঘার বেশি জমি নদীগর্ভে চলে যায় বলে অভিযোগ। প্রশাসনিক উদাসীনতার জেরে এই দুর্ভোগ এমনটাই দাবি করছেন স্থানীয়রা। এক গ্রামবাসী জানিয়েছেন, গত বছর আমফানের পরেই ভাগীরথীর ভাঙন আটকাতে বাঁধ নির্মাণের তোড়জোড় করে প্রশাসন। প্রায়  এগারো কোটি টাকা  বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু, তারপর কোনও কাজই হয়নি। বুধবার, নদীর (Bhagirathi river) পাড় ভাঙতে শুরু করলেই আর দেরি করেননি গ্রামবাসীরা। প্রাণ হাতে নিয়ে ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয় স্কুলগুলিতে। বুধবার সকাল থেকেই ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে ক্রমশই ফুলে ফেঁপে উঠছিল ভাগীরথী। আমফানের স্মৃতি মাথায় নিয়েই তাই প্রায় ৫০০ পরিবার এদিন,  নদীতীরের ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসন কোনওরকম সাহায্য করেনি। যদিও জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর,  ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় একাধিক অস্থায়ী ত্রাণ শিবির করা হয়েছে। সেখানেই সকলে আশ্রয় নিচ্ছেন। যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁদের দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

অন্যদিকে, জোয়ানিয়া গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখার অভিযোগে বিদ্যুৎ কর্মীদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা।  তাঁদের অভিযোগ,  ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ আসার তিনদিন আগে থেকেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। শুধু ঘূর্ণিঝড়ের দোহাই দিয়ে নয় নানা সময়েই জোয়ানিয়া বোয়ানিয়া-সহ পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে বিদ্যুৎ থাকে না বলে অভিযোগ। ফলে, রীতিমতো সমস্যায় পড়েন এলাকাবাসী। বারবার এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি। যদিও, জেলা বিদ্যুৎ নিগমের আধিকারিকদের দাবি, গতকাল পর্যন্ত সব গ্রামেই বিদ্যুৎ ছিল। গ্রামবাসীরা মিথ্যাই অভিযোগ করছেন। ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলা করতে বুধবারই কেবলমাত্র বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করা হয়।

মৌসম ভবন সূত্রে খবর, সকাল ৯টা নাগাদ শুরু হয় ল্যান্ডফল। কথা ছিল বেলা ১২টায় ল্যান্ডফল হওয়ার, কিন্তু আশঙ্কা বাড়িয়ে এগিয়ে এল ইয়াসের ল্যান্ডফলের সময়। ভরা কোটাল (Full Tide) নিয়ে আগেই আশঙ্কা ছিল। তা সত্যিই করেই ধামরা ও বালেশ্বরের মাঝে ল্যান্ডফল হতে শুরু করে ইয়াস। বেলা ১টার বুলেটিন অনুযায়ী, ল্যান্ডফল শেষ হয় ইয়াসের। অন্যদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরদ্বীপ, কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা, বকখালি প্রভৃতি এলাকায় একের পর এক গ্রামে প্লাবিত।

আরও পড়ুন: ‘রাজ্যে একটা অন্যধরনের প্রশাসন চলছে, আমফান থেকে শিক্ষা নিয়েছি’, ইয়াস মোকাবিলায় তোড়জোড় শুভেন্দুর