‘রাজনীতির রঙ দেখে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে’, নিশানায় রাজ্য, নির্ঘোষ দিলীপের

শনিবার, খেজুরি-সহ একাধিক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করতে এসে সরাসরি মমতা সরকারকে (Mamata Banerjee's Government) তোপ দাগেন বিজেপির (BJP) রাজ্য় সভাপতি।

'রাজনীতির রঙ দেখে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে', নিশানায় রাজ্য, নির্ঘোষ দিলীপের
খেজুরিতে দিলীপ, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 29, 2021 | 7:12 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের (Cyclone Yaas) তাণ্ডবে প্রভূত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বাংলার উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে। শনিবার, সেই সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে এলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। এদিন, খেজুরি, কাঁথি, রামনগর বিধানসভা-সহ শঙ্করপুরের একাধিক জায়গা ঘুরে দেখেন মেদিনীপুরের সাংসদ। কথা বলেন দুর্গত এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গেও। এদিন, বিজেপি নেতার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী, খেজুরি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে রামনগর বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী স্বদেশ রঞ্জন নায়ক, জেলা সাধারণ সম্পাদক সুদাম পণ্ডিত অসীম মিশ্র-সহ একাধিক নেতৃত্ব।

শনিবার, খেজুরি-সহ একাধিক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করতে এসে সরাসরি মমতা সরকারকে (Mamata Banerjee’s Government) তোপ দাগেন বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি। দিলীপবাবু এদিন বলেন, “ইয়াসের ত্রাণ নিয়েও রাজনীতি হচ্ছে। অগুনতি মানুষের ঘর ভেসে গিয়েছে। একটা বাঁধের উপর ভরসা করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। খাবার নেই, জল নেই, মুড়ি খেয়ে থাকছে। প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে, তাও রাজনীতির রঙ দেখে। ভোটের সময়ে বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলে, এখন ত্রাণ পাবে না, ওদের কাছে যাও। এইভাবে সাধারণ মানুষকে হয়রান করছে। সবেতেই রাজনীতি খুঁজে বেড়ান উনি।”

শুক্রবার মমতা-মোদীর ‘সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎ’-কে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। গতকাল, প্রধানমন্ত্রীর (Narendra Modi) রিভিউ বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রীর  দাবি প্রায় কুড়ি মিনিট অপেক্ষা করার পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। তাঁর হাতে প্রয়োজনীয় কিছু কাগজ দিয়ে চলে আসেন বলে মমতা। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে না জানিয়েই ওই বৈঠকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা থেকে শুরু করে একাধিক ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এতেই উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাল্টা বিজেপির তরফে দাবি, এইভাবে বৈঠক এড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী আসলে প্রধানমন্ত্রীকে অপমান করেছেন। শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রীর জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রায় ৩০ মিনিট অপেক্ষা করেন। বাংলার মানুষের থেকে ‘ইগো’ বড় হয়েছে তাঁর এমনটাই দাবি বিজেপির। এই প্রসঙ্গে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, “ওঁ সবসময় নিজের ইগো নিয়ে ব্যস্ত। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার কথা চিন্তা না করে নিজের রাজনীতি নিয়েই ব্যস্ত তিনি। বারবার শুভেন্দুর থেকে পালিয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন, কতদিন পালাবেন এভাবে? মানুষ আগে নাকি তাঁর রাজনীতি আগে? এটা তো নতুন নয়। বরাবরই তিনি তাই করেছেন। যেখানে যাওয়ার সেখানে যান না, যেখানে যাওয়ার নয় সেখানে চলে যান। প্রধানমন্ত্রীর পদের অমর্যাদা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর যেভাবে তিনি মুখ্যসচিবকে নিয়ে বেরিয়ে গেলেন, জানি না, মুখ্যসচিব নিজে বেরিয়ে যেতে চেয়েছেন নাকি তাঁকে একরকম বাধ্য হয়েই বেরিয়ে যেতে হল, তা জানা নেই। এর বেশি আর কিছু এ বিষয়ে বলতে চাই না।”

পাশাপাশি, দিলীপবাবু আরও বলেন, “আমাদের ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) কর্মীরা সবসময় মানুষের পাশে আছে। আমরা ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে আছি। যাঁদের বাড়িঘর নষ্ট হয়েছে, তাঁদের পুনর্বাসনের দ্রুত ব্যবস্থা করা হবে।” উল্লেখ্য, সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের মোকাবিলায় বিজেপির কর্মী-বিধায়কদের সাধারণের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই মর্মে, ভার্চুয়াল বৈঠকও করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা (J P Nadda)। ইয়াস মোকাবিলায় বঙ্গ বিজেপির তরফে একাধিক বৈঠক করেছেন দিলীপ ঘোষ। একুশের নির্বাচনে পরাজয়ের পর কার্যত সেভাবে দেখা যায়নি বিজেপি বিধায়ক-কর্মীদের। সে প্রসঙ্গে, গেরুয়া শিবিরের সাফাই ছিল, নির্বাচনে পরাজয় ঠিক মেনে নিতে পারেনি দলের কর্মীরা। তাই করোনা মোকাবিলায় ‘অ্যাক্টিভ ফর্মে’ দেখা যায়নি তাদের। তবে, ইয়াসের মোকাবিলায় যে নতুন উদ্যমে পথে নামতে হবে তা আগেই ঠিক করেছিল রাজ্য বিজেপি। বুধবার ঘূর্ণিঝড়ের দিন থেকে,  খেজুরির বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিককে কার্যত নিজের এলাকায় ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। এলাকার সমস্ত মানুষকে সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। ভগবানপুর বিধানসভার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি এবং দক্ষিণ কাঁথির বিধায়ক অরূপকুমার বিশ্বাসকেও নিজ নিজ কেন্দ্র পরিদর্শন করতে দেখা যায়।

আরও পড়ুন: ‘মুখ্যমন্ত্রীর আচরণ দেখে অবাক হয়েছি’, ইয়াস মোকাবিলায় ফের অধিকারী পুত্রের নিশানায় রাজ্য