Balurghat Hospital: ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে রোগীরা শুনলেন, ‘ডাক্তার চা খেতে গিয়েছেন’
Balurghat: চিকিৎসক সমস্যা নিয়ে সোমবার দুপুরে বালুরঘাট হাসপাতালে সুপারের কাছে অভিযোগ জানায় রোগী ও পরিবারের সদস্যরা।
বালুরঘাট: সপ্তাহের প্রথম দিনই বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের বহির্বিভাগে সময়মত চিকিৎসক না আসায় রোগী হয়রানির অভিযোগ। চিকিৎসক সমস্যা নিয়ে সোমবার দুপুরে হাসপাতালের সুপারের কাছে অভিযোগ জানায় রোগী ও পরিবারের সদস্যরা। শুধুমাত্র, আজ বলে নয় মাঝেমধ্যেই এমন সমস্যা দেখা দেয় বলে অভিযোগ রোগী ও তাদের পরিবার পরিজনদের। এদিন কর্তব্যরত এক চিকিৎসক চা খেতে গিয়ে প্রায় ঘণ্টা দেড়েকের জন্য গায়েব হয়ে যান। যার জন্য মূলত রোগীরা হয়রানি সম্মুখীন হন। এদিকে, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন বালুরঘাট হাসপাতালে সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগ।
প্রসঙ্গত, রবিবার ছুটির দিন হওয়ায় বালুরঘাট হাসপাতালের বহির্বিভাগ বন্ধ থাকে। তাই সোমবার সকাল থেকে এই বিভাগে বেশি ভিড় হয়। তার মধ্যে গত সপ্তাহের বেশ কয়েকটি দিন সরকারি ছুটি থাকায় হাসপাতালের বহির্বিভাগে মানুষ আসেনি বললেই চলে। কার্যত নার্সিংহোম বিহীন এই জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষ বালুরঘাট হাসপাতালের উপরেই নির্ভরশীল। এদিন সকাল থেকেই বালুরঘাট হাসপাতালের বহির্বিভাগে মানুষের ভিড় উপচে পড়ে ছিল। সকাল থেকে এই হাসপাতালে বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টারে ছিল বিরাট লাইন। চক্ষু, শল্য সহ বিভিন্ন বিভাগের বহির্বিভাগ পরিষেবা জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ভবনে থাকলেও, মেডিসিন বিভাগগুলি রয়েছে পুরনো বহির্বিভাগ ভবনেই। এই মেডিসিন বিভাগ গুলিতেই বেশি পরিমাণে মানুষ ভিড় জমায়। বহির্বিভাগের পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন বিভাগে একজন মাত্র চিকিৎসকই দায়িত্বে ছিলেন। বহির্বিভাগ খোলার নির্দিষ্ট সময় থেকে ঘন্টা খানেক পর্যন্ত এই দুই বিভাগে ঘুরে ঘুরে রোগী দেখেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক। কিন্তু বহির্বিভাগে আসা রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের অভিযোগ, এদিন ১১ টার পর থেকে চিকিৎসক গায়েব হয়ে যান। তার তার দেখা মেলেনি। ওই ঘরগুলিতে থাকা স্বাস্থ্য কর্মীদের জিজ্ঞাসা করলে তাঁরাও কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি।
এদিকে মধ্যে এক কিশোরী মাথা ঘুড়ে পরে গেলে, ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। শুরু হয় চিৎকার-চেঁচামেচি। কয়েকজন রোগী প্রতিনিধি সুপার ও সহকারী সুপারের কাছে অভিযোগ জানিয়েও আসেন। অভিযোগ ও রোগী ও তাদের আত্মীয়দের এর কথা জানতে পেরেই, দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসককে ফোন করেন হাসপাতাল সুপার।
এবিষয়ে বালুরঘাট হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে আসা অভিজিৎ সরকার, সুবীর বিশ্বাস ও অঞ্জলি শীল নট্ট বলেন, ‘অসুস্থতা নিয়ে ডাক্তার দেখাবো বলে হাসপাতালের বহির্বিভাগে এসেছিলাম। আমাদের বাইরে ডাক্তার দেখানোর সামর্থ্য নেই। কিন্তু এই হাসপাতালে এসে সকাল থেকে চরম হয়রানির মুখে পড়তে হয়েছে টিকিট কাউন্টারে যেমন ভীড়, তেমনি চিকিৎসক না থাকায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে।’
অন্যদিকে বালুরঘাট হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগ বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। এই হাসপাতালে আগে কী হয়েছে জানি না, তবে এখন থেকে রোগীদের চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি সহ্য করা হবে না। প্রতি দিন যাঁদের ডিউটি রয়েছে তাঁরা সময় মেনে কাজ করছেন কি না, তা দেখা হবে। নতুন ডিউটি রোস্টার তৈরি করা হচ্ছে। এদিন যে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, ওনাকেও সতর্ক করা হয়েছে।’