Kali Puja 2022: সন্ধে হলেই পাওয়া যেত সুগন্ধ, কানে আসত নূপূরের শব্দ! বুড়া কালীর উপরই আস্থা গ্রামবাসীদের

Kali puja: লোক মুখে শোনা যায় কয়েকশো বছর আগে বর্তমান বালুরঘাট বুড়া কালী মাতার মন্দিরের পাশ দিয়ে নাকি আত্রেয়ী নদী বইত।

Kali Puja 2022: সন্ধে হলেই পাওয়া যেত সুগন্ধ, কানে আসত নূপূরের শব্দ! বুড়া কালীর উপরই আস্থা গ্রামবাসীদের
বুড়া কালীমাতার মন্দির (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 23, 2022 | 12:51 PM

বালুরঘাট: দক্ষিণ দিনাজপুরের শতাব্দী প্রাচীন কালী পুজোর মধ্যে অন্যতম হল বালুরঘাট তহবাজার এলাকার বুড়া কালীর পুজো। এখনও সেই পুরনো রীতি রেওয়াজ মেনেই হয় বালুরঘাটের এই পুজো। তবে কাল স্রোতে ও সময়ের সঙ্গে বর্তমানে পুজোর কিছু নিময় পরিবর্তিত হয়েছে। শতাব্দীর প্রাচীন হলেও এই পুজোকে কেন্দ্র করে জেলাবাসির মনে অপরন্তু বিশ্বাস রয়েছে। কালী পুজোর দিন এই পুজোকে ঘিরে দর্শনার্থীদের ঢল চোখে পরার মতো। এছাড়াও, প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার ও শনিবার বুড়া কালীবাড়িতে পুজো দেওয়ার জন্য লম্বা লাইন পরে ভক্তদের।

লোক মুখে শোনা যায় কয়েকশো বছর আগে বর্তমান বালুরঘাট বুড়া কালী মাতার মন্দিরের পাশ দিয়ে নাকি আত্রেয়ী নদী বইত। মন্দির ও বাজারের জায়গায় ছিল ঘন জঙ্গল। শতাব্দী প্রাচীন পুজো হলেও এর সঠিক বয়স কত তা কেউ বলতে পারে না।

এক সময় আত্রেয়ী নদীর ধারে নিজে থেকেই নাকি ভেসে ওঠে বুড়া কালী মাতার বিগ্রহ বা শিলা খন্ড। এক ত্রান্তিক সেই সময় ওই বিগ্রহকে তুলে নিয়ে এসে পুজো দেন। তারপর থেকেই শুরু পুজোর। টিনের ঘেরা দিয়ে বুড়া কালী মাতার পুজো শুরু হয়। বর্তমানে বিশাল আকার মন্দিরের পুজিত হন বুড়া কালী। পুজোর দিন মায়ের মূর্তিতে সারা গায়ে সোনা থেকে রুপোর অলঙ্কারে সুসজ্জিত থাকে। পুজোকে ঘিরে পুজোর দিন কয়েক হাজার ভক্তগনের সমাগম হয় পুজো প্রাঙ্গনে।

পুজোতে এখনও পাঁঠা বলি, শোল মাছ বলি হয়। তবে জনশ্রুতি আছে আগে নাকি ২০ কিলো ওজনের শোল মাছ বলি দেওয়া হত। এই পুজোকে ঘিরে শুধুমাত্র দক্ষিণ দিনাজপুরবাসীর নয় পাশের জেলা উত্তর দিনাজপুর ও মালদা, শিলিগুড়ি থেকেও প্রচুর ভক্ত বা দর্শনার্থী আসে। বর্তমানে বুড়া কালী মন্দির থেকে অনেকটা পশ্চিমে সরে গিয়েছে আত্রেয়ী নদী।

ইতিহাস বলে, একটা সময় নাকি কলকাতার রানি রাসমণি এই মন্দিরে পুজো দিতে আসতেন। বজরায় করে এসে তিনি আত্রেয়ী নদী থেকে জল নিয়ে এসে মায়ের পুজো দিয়ে আবার ফিরে যেতেন কলকাতায়। তবে এর সত্যতা এখনও প্রমাণিত হয়নি। এই মন্দিরকে ঘিরে আরও জনশ্রুতি আছে সন্ধ্যের পর নাকি অপরূপ ফুলের সুগন্ধি পাওয়া যেত এই এলাকা থেকে। কিন্তু কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত কোনও জঙ্গল বা গাছপালা ছিল না। শোনা যেত নুপুরের আওয়াজ। সেই সব নাকি এখন গল্প মনে হয় অনেকের। তা সত্ত্বেও জেলাবাসীর অগাধ বিশ্বাস বুড়া কালীর উপর।

পুজোর দিন দর্শনার্থীদের দেওয়া হয় অন্ন ভোগ। করোনার জন্য গত দুবছর বুড়াকালি মন্দিরে ভক্তদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। তবে এই বার কোনও নিষেধাজ্ঞা না থাকায় ভিড় অনেক বেশি হবে বলে দাবি পুজ্য কমিটির।

এ বিষয়ে, পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য অমিত মহন্ত বলেন, ‘আত্রেয়ী নদীর পাশে মায়ের শিলা খন্ড ভেসে উঠেছিল৷ তা থেকেই মায়ের পুজো শুরু হয়৷ এখনো পুরনো রীতি মেনেই পুজো অনুষ্ঠিত হয়। পুজোর দিন মায়ের গোটা মূর্তিতে সোনার গহনা পরিয়ে দেওয়া হয়৷ দু’বছর লোক আসতে পারেনি পুজোতে৷ এবার ভিড় অনেক বাড়বে। বুড়া মায়ের পুজো বছরে দুবার অনুষ্ঠিত হয়। চৈত্রসংক্রান্তি ও দীপান্বিতা অমবস্যায়। তবে বড় পুজো হয় দীপান্বিতা অমবস্যায়।ট

এবিষয়ে বুড়া কালি মন্দিরের পুরোহিত রতন ভট্টাচার্য বলেন, ‘আগে যেভাবে মায়ের পুজো অনুষ্ঠিত হত, ঠিক একই ভাবে এখনো মায়ের পুজো অনুষ্ঠিত হয়। দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা মায়ের কাছে পুজো দিতে আসে৷’