Darjeeling-Gangtok: লাগাতার বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দার্জিলিং-সিকিম, উত্তরের একাধিক জায়গায় নেমেছে ভূমিধস, কাদামাটির স্রোত
North Bengal Rain: গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টি হয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং ও সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকায়। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেখানে। বিশেষ করে রিম্বিক-লোধোমা ও বিজনবাড়ি এলাকায় অনেক চাষের জমি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
দার্জিলিং ও গ্যাংটক: উত্তরের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টি। ফুঁসছে তিস্তা। ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে সিকিমের বেশ কিছু জায়গাতেও। উত্তর সিকিমের একাধিক জায়গায় ভূমিধসের জেরে বিপর্যস্ত পর্যটন। বন্ধ হয়ে গিয়েছে উত্তর সিকিমের বেশ কিছু রাস্তা। পর্যটকদের উদ্ধারে হাত লাগিয়েছে ভারতীয় সেনা। গতকাল ভূমিধস কবলিত এলাকা থেকে প্রায় ৩০০ জন পর্যটককে উদ্ধার করেছেন সেনা জওয়ানরা। লাচুং ও লাচেন থেকে নামার পথে আটকে পড়েছিলেন বহু যাত্রী। একটি অস্থায়ী সাঁকো বানিয়ে তাঁদের বিপদসঙ্কুল এলাকা থেকে গ্যাংটকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
১৯টি বাসে পর্যটকদের ফেরানো হয় গ্যাংটকে
একাধিক এলাকার বিদ্যুৎ বিপর্যয় তৈরি হয়েছে সিকিমে। বিভিন্ন এলাকায় হোটেল ও হোম স্টে-গুলিতে আটকে পড়েন পর্যটকরা। ভারতীয় সেনার উদ্যোগে তাঁদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা শুরু হয়। অনেক জায়গাতেই রাস্তায় ধস নেমেছে। সেই সব জায়গায় দড়ি দিয়ে অস্থায়ী ব্যবস্থা করে, সাবধানে পর্যটকদের ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়। সিকিম সরকার প্রায় ১৯ টি বাসে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকদের গ্যাংটকে ফিরিয়ে আনে। সেনা সূত্রে খবর, উদ্ধারকাজ বর্তমানে শেষের পথেই।
নাগাড়ে বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দার্জিলিংও
গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টি হয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং ও সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকায়। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেখানে। বিশেষ করে রিম্বিক-লোধোমা ও বিজনবাড়ি এলাকায় অনেক চাষের জমি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বেশ কিছু নির্মীয়মান সেতুও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়েছে। দারাগাঁও ভঞ্জং, তিমবুরে (গুরদুম), শ্রীখোলা, নাগদা, রাম্মাম, সামানদেন, গোর্খে এবং আশপাশের অন্যান্য পাহাড়ি গ্রামগুলিতেও তুমুল বৃষ্টির জেরে ভূমিধস নেমেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা নিজে গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলেছেন। জেলা প্রশাসন ও জিটিএ-র তরফে উদ্ধারকাজে ও ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর ক্ষেত্রে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, সেই সব খোঁজখবর নিয়েছেন।
বাড়ছে জলস্তর, সতর্কতা উত্তরের একাধিক নদীতে
লাগাতার বৃষ্টির জেরে ক্রমেই ফুঁসছে তিস্তা। বাড়ছে জলস্তর। জলপাইগুড়ির দোমহনি থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত তিস্তা নদীতে জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা। জলঢাকা নদীতেও হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে। জলপাইগুড়ি থেকে শিলিগুড়ি যাওয়ার পথে আনন্দচন্দ্র কলেজের কাছে রাস্তার উপর গাছ ভেঙে পড়ে যান চলাচল সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়েছিল। বিঘ্নিত হয় বিদ্যুৎ পরিষেবাও। পরবর্তীতে বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা এসে গাছ কেটে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
ভূটানের বৃষ্টিতে চিন্তায় আলিপুরদুয়ারও
এদিকে ভূটানে নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে গাদা গাদা কাদামাটি নেমে আসছে আলিপুরদুয়ারে। জয়গাঁ বাসস্ট্যান্ড চত্বরে প্রায় এক হাঁটু কাদা। পড়শি দেশে বৃষ্টির জেরে আলিপুরদুয়ারের নদীগুলিতেও জলস্তর বাড়তে শুরু করেছে। কালজানি,ডিমা,রায়ডাক,তোর্সা,সংকোশের মতো নদীগুলির জল বাড়ছে। চিন্তা বাড়ছে আলিপুরদুয়ারের নদী চরের বাসিন্দাদের নিয়েও। যদিও পুর প্রশাসনের তরফে গোটা পরিস্থিতির উপর সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে। তবে চিন্তা কাটছে না নদী চরের বাসিন্দাদের। আলিপুরদুয়ারের ৯ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকায় জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বালাটারি যাওয়ার পথে একটি বাঁশের সাঁকোও ভেঙে গিয়েছে।