মমতার মুখ দেখে আর ভোট হয় না, তোপ দেগে প্রচার শুরু ‘নির্দল’ নান্টুর

"অতীতে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যের ২৯৪ টি আসনে তিনিই প্রার্থী। কিন্তু তবুও তো শিলিগুড়িতে হারতে হয়েছে বাইচুং ভুটিয়াকে। আসলে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ দেখে আর ভোট হয় না।'' কটাক্ষ দলত্যাগী নান্টুর

মমতার মুখ দেখে আর ভোট হয় না, তোপ দেগে প্রচার শুরু 'নির্দল' নান্টুর
নিজস্ব ফটো
Follow Us:
| Updated on: Mar 22, 2021 | 5:13 PM

শিলিগুড়ি: “অতীতে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যের ২৯৪ টি আসনে তিনিই প্রার্থী। কিন্তু তবুও তো শিলিগুড়িতে হারতে হয়েছে বাইচুং ভুটিয়াকে। আসলে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ দেখে আর ভোট হয় না।” সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বিরুদ্ধে তোপ দেগে নির্দল প্রার্থী হিসাবে ভোট প্রচার শুরু করলেন শিলিগুড়ি বিধানসভা কমিটির সদ্য প্রাক্তন চেয়ারম্যান নান্টু পাল (Nantu Pal)। একুশের বিধানসভা ভোটে (West Bengal Assembly Election 2021) টিকিট না পেয়ে তৃণমূলত্যাগী নান্টু পাল এবার নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়ছেন। প্রার্থী হিসেবে এদিন প্রচারে বেরিয়ে তৃণমূল প্রার্থী ওমপ্রিকাশ মিশ্রকে বহিরাগত বলে তোপ দাগেন তিনি।

এদিন নান্টুর দাবি, বিদায়ী বিধায়ক সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্যকে ভোটে জিতিয়ে কোনও লাভ নেই। কারণ তিনি জিতলেও তাঁর দল ক্ষমতায় আসছে না। আর পুর প্রশাসক থেকেও শহরের বহু সমস্যা মেটাতে পারেননি তিনি। নান্টুর যুক্তি, “তাই তাঁকে জিতিয়ে লাভ কী?” কিন্তু নির্দল হিসেবে জিতলে নিজে কাকে সমর্থন করবেন? নান্টুর কথায়, “জিতে আসার পর উন্নয়নের শর্তেই তৃণমূল বা বিজেপির সরকারকে আমি সমর্থন দেব। তাই অশোক ভট্টাচার্যের বদলে মানুষ আমায় ভোট দিক।”

অন্যদিকে তৃণমূল প্রার্থী ওমপ্রকাশ মিশ্রকে ফের বহিরাগত বলে সরব হন তিনি। পাশাপাশি বিজেপি প্রার্থী শঙ্কর ঘোষ প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, “নিজের ওয়ার্ডে এর আগেও জিতেছেন শঙ্কর। কিন্তু আদ্যন্ত বামপন্থী নেতার বিজেপিতে যোগদান মানুষ পছন্দ করেনি। তাছাড়া আমি অসংখ্য গণ সংগঠনে আছি। ফলে এগিয়ে আছি আমিই।”

তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় -এর শিলিগুড়ি সফরের দিনই দল ছেড়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়ানোর ঘোষণা করেছেন নান্টু। তার পর তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্ব-সহ নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন শিলিগুড়ি বিধানসভা কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান। নির্বাচনী আবহে মমতা-সহ তৃণমূল নেতৃত্ব যখন ‘খেলা হবে’ স্লোগান দিয়ে বিরোধীদের হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন তখন তৃণমূলত্যাগী নান্টুর কটাক্ষ, “কোচ অদৃশ্য। শিলিগুড়ির খেলায়াড় থাকতেও বাইরের প্লেয়ার এনে খেলাতে চাইছেন এঁরা। আর কেউ নেতা হয়ে উঠুক তা চান না এরা। তাই নেতা তৈরির সাপ্লাই লাইন কাটতেই আমার নাম প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ দিতে চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র হয়েছে।”

প্রসঙ্গত, গোটা রাজ্যে বামেরা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হলেও শিলিগুড়িতে ছবিটা আলাদা। সেখানে নিজেদের রাজ্যপাট দখলে রেখেছেন অশোক ভট্টাচার্য। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচন বাদ দিলে শিলিগুড়িতে দাঁত ফোটাতে পারেনি তৃণমূল। ২০১৬ সালে যে বাইচুং ভুটিয়াকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল, তিনি নিজেই এবার অশোকের হয়ে প্রচারে করেছেন।

আরও পড়ুন: মমতার উপস্থিতিতেই শিলিগুড়িতে সস্ত্রীক দলত্যাগ নান্টুর, নির্দল হয়ে লড়াইয়ের ঘোষণা

এই পরিস্থিতিতে শহর থেকেই প্রার্থী নির্বাচন করতে দলনেত্রীকে অনুরোধ করেছিলেন শিলিগুড়ির তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতে দেখা যায়, সেই অনুরোধ রাখেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই শিলিগুড়ির তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ জানায়, ভোটপ্রচারে অংশগ্রহণ করবেন না তাঁরা। এবার টিকিট পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন নান্টু পাল। কিন্তু তা না হওয়ায় দলত্যাগ করেন তিনি।