WB Panchayat Election 2023: ‘যে রাজ্যে ভোটের দিন ১৭ জন মারা যান, সেখানে আমাদের আঘাতকে কিছু মনেই করি না’

দীপ্সিতার মা দীপিকা ধর বলেছেন, "আমাকে ধাক্কা দেওয়া শুরু করল। আমার ফোনটা পড়ে গেল। ফোনটা মাড়িয়ে দিল। এক জন পুরুষ আমাকে চড় মারল। হাত ধরে আমাকে টানতে শুরু করল। সেন্ট্রাল ফোর্স, পুলিশ নীরব দর্শক হয়েছিল সেখানে।"

WB Panchayat Election 2023: ‘যে রাজ্যে ভোটের দিন ১৭ জন মারা যান, সেখানে আমাদের আঘাতকে কিছু মনেই করি না’
দীপিকা ধর ও দীপ্সিতা ধর
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 08, 2023 | 9:05 PM

বালি: পঞ্চায়েত ভোটের দিন নিজের স্কুলেই মার খেলেন যুব সিপিএম নেত্রী দীপ্সিতা ধর। ছাপ্পা ভোট রুখতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন দীপ্সিতার মা তথা হাওড়ার ৪১ নম্বর জেলা পরিষদের প্রার্থী দীপিকা ধর। এর পর দুজনেই কথা বলেছেন টিভি৯ বাংলার প্রতিনিধির সঙ্গে।

দীপিকা ধর-

আজ সকালে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছি। সকাল থেকেই ভোট পণ্ড করার চেষ্টা চলেছে। মানুষের অসম্ভব উৎসাহ ছিল। আমি যেহেতু জেলা পরিষদের প্রার্থী সব অঞ্চলে বুথে ঘোরার দায়িত্ব ছিল আমার। কোথাও কোনও অসুবিধা হচ্ছিল কি না তা দেখতে হচ্ছিল আমাকে। আমাদের এখানে নিশ্চিন্দা গার্লস স্কুল রয়েছে। সেখানে সকাল থেকেই শুরু করেছে কী ভাবে স্কুলের ভোট বানচাল করা যায়। দলে দলে বাইরে থেকে লোকজন এসেছে। ভিড় করেছে সেখানে। আমি একটা ভিডিয়ো পেয়ে প্রিসাইডিং অফিসারকে দেখাই। আমাকে বলে আর হবে না। সেখান থেকে আমি হিন্দি স্কুলে আসি। সেই স্কুলে যখন দাঁড়াই, দেখি ভিতরে ভীষণ গোলমাল চলছে। আমাদের এজেন্টদের বেরিয়ে যেতে বলছে। সেখানে যে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল, তাদের বললাম। এর পরই আমাকে বাধা দেয়। আমাকে ধাক্কা দেওয়া শুরু করল। আমার ফোনটা পড়ে গেল। ফোনটা মাড়িয়ে দিল। এক জন পুরুষ আমাকে চড় মারল। হাত ধরে আমাকে টানতে শুরু করল। সেন্ট্রাল ফোর্স, পুলিশ নীরব দর্শক হয়েছিল সেখানে। কোনও সাহায্য করেনি আমাকে। আমার এজেন্ট আমাকে বাইকে করে নিয়ে গিয়েছিল। তাঁকে ফেলে বেধড়ক মারধর করে। আমি গিয়ে আটকাই। তাঁর মুখে, চোখে, বুকে ঘুষি মারে। মার খাওয়ার পরও আমরা বুথ আঁকড়ে থেকেছি। কিন্তু মানুষ ভোট দিতে চাইছে। অসম্ভব উৎসাহ রয়েছে।

দীপ্সিতা ধর-

এর আগে যখন আমি পঞ্চায়েত ভোট দিয়েছি, তখন আমি মা-বাবার সঙ্গে আসতাম। কোনও দিন ভাবতে পারিনি আমার এই এলাকায়, আমার ছোটবেলার স্কুলে কেউ ভোট দিতে এসেছে বলে তাঁকে মারধর করা হচ্ছে, এরকম অভিজ্ঞতা ছিল না। এখানে দেখছি বাইরে থেকে লোক এসে ঢুকছে। আমি আমার পরিচিতি ব্যবহার করে আইসি, মিডিয়ার বন্ধুদের জানাচ্ছিলাম। এতে ওদের ছাপ্পা মারার প্রক্রিয়ায় সমস্যা হচ্ছিল। সেটা আটকাতে আমাকে ওখান থেকে সরানোর চেষ্টা করে। আমার সঙ্গে যে প্রার্থী ও এজেন্ট ছিল তাদের প্রথমে মারা শুরু করে। এটা ৩০-৪০ জনের একটা দল ছিল। এক জন নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তবে আশার কথা মার খেয়েও প্রার্থী ও এজেন্টরা কেউ সরে যাননি। এক জন হাসপাতালে গিয়েছেন। বাকি সকলে আবার ভিতরে ফিরে গিয়েছেন। বুথ বাঁচিয়েছেন। মানুষ দেখছেন। এ ধরনের হিংসা তাঁরা পছন্দ করেন না। যে রাজ্যে ভোটের দিন ১৭ জন মারা যায়, সেখানে আমার মায়ের চশমা ভেঙেছে, আমার হাতে লেগেছে। এটা আমরা কিছু মনেই করছি না।