Voters list: মৃত্যু হয়েছে স্ত্রীর, ভোটার তালিকা দেখে মাথায় হাত তৃণমূল নেতার
Voters list: চুঁচুড়া শহর তৃণমূলের সভাপতি সঞ্জীব মিত্র বলেন, "আমাদের দলের বুথ সভাপতির নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ গেছে। তাঁর মৃত স্ত্রীর নাম রয়েছে তালিকায়। অনলাইনে যাঁরা এই কাজ করছেন তাঁদের জন্যই এই ধরনের সমস্যা হচ্ছে। আমরা মহকুমা শাসককে জানিয়েছি বিষয়টা।"

চুঁচুড়া: মৃত্যু হয়েছে তৃণমূল নেতার স্ত্রীর। ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদের আবেদন জানানো হয়। সেই আবেদন মেনে যাঁর নাম বাদ পড়ল, তা দেখে চক্ষু চড়কগাছ সবার। নাম বাদ পড়েছে তৃণমূল নেতারই। ভোটার তালিকায় নাম রয়ে গিয়েছে তাঁর স্ত্রীর। ঘটনাটি চুঁচুড়ার।
চুঁচুড়া পুরসভার আঠেরো নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তৃণমূলের বুথ সভাপতি জয়ন্ত খাঁ। তাঁর স্ত্রী সুষমা খাঁর মৃত্যুর পর ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদের জন্য আবেদন জানানো হয়। কিন্তু, সেই আবেদনের পর জয়ন্তর নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়ে তাঁর স্ত্রী সুষমার নাম রেখে দেওয়া হয়।
চুঁচুড়া শহর তৃণমূলের সভাপতি সঞ্জীব মিত্র বলেন, “আমাদের দলের বুথ সভাপতির নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ গেছে। তাঁর মৃত স্ত্রীর নাম রয়েছে তালিকায়। অনলাইনে যাঁরা এই কাজ করছেন তাঁদের জন্যই এই ধরনের সমস্যা হচ্ছে। আমরা মহকুমা শাসককে জানিয়েছি বিষয়টা। এরকম অনেক হয়েছে, যাঁদের যে বুথে ভোট ছিল সেই বুথ নম্বরও বদলে গিয়েছে। আমাদের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের অনেক ভোটার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে চলে গিয়েছে। অথচ তাঁরা জানেনই না। এক একটা বুথে দশটা করে ভোট এদিক ওদিক হয়ে গেলেই ভোটের ফলাফল অন্যরকম হয়ে যেতে পারে। তাই আমরা ভোটার তালিকা দেখে এইসব গন্ডগোল যেখানে হয়েছে সেগুলো ঠিক করার চেষ্টা করছি।”
গত বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূলের রাজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় জেলায় ভূতুড়ে ভোটার ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। সেই ভূত তাড়াতে নির্দেশ দেন জেলা নেতৃত্বকে। শনিবার চুঁচুড়া বিধানসভার কর্মীদের নিয়ে সেই ‘ভূত’ তাড়ানোর বৈঠক করে তৃণমূল। বৈঠকে পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, দলের জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইন, চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার-সহ তৃণমূল নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন।
সেখানে মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, দলের নির্দেশ রয়েছে প্রতিটা বিধানসভার প্রতিটা বুথের যে ভোটার তালিকা রয়েছে সেগুলো ভালো করে স্ক্রুটিনি করতে হবে। প্রকৃত ভোটারের নাম আছে কি না,ভুয়ো ভোটার ঢুকে আছে কি না সেটা দেখতে হবে। দিল্লির ভোটে দেখা গিয়েছে অনলাইন সিস্টেমের জন্য বহু ভুয়ো ভোটার ঢুকেছে। দিল্লিতে বিজেপির জয় এই ভুয়ো ভোটারের জন্য। আমরা চাই নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি করা। নির্বাচন কমিশন তত্ত্বাবধানে থাকে, কিন্তু অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার তালিকা তৈরি সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। একটা গভীর চক্রান্ত চলছে নির্বাচন কমিশনকে সামনে রেখে ভুয়ো ভোটার ঢুকিয়ে দেওয়ার, আমরা এটা প্রতিবাদ করব।”
নির্বাচন কমিশন তাদের এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছে, প্রশাসনের কর্মীরাই এর সঙ্গে যুক্ত আছেন। সেই প্রসঙ্গে স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, “রাজ্য সরকার, কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী বলে কিছু হয় না। যখন নির্বাচন আসে নির্বাচন কমিশন যাঁদের নিয়ে নেয়, তাঁরা নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইন মেনেই কাজ করেন। তখন তিনি কোথা থেকে মাইনে পাচ্ছেন, সেটা বিচার্য হয় না। যখন তিনি ভোটার তালিকায় নাম তুলবেন, যাঁদের যাঁদের নাম তুলবেন, তাঁরা নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনেই তুলবেন। ফলে কে পরিচালনা করছে এটাই ফ্যাক্টর। নির্বাচন কমিশনের নেতৃত্বে যদি ভোটার তালিকা তৈরি হয়, দায় তাহলে তাদেরই নিতে হবে। আমরাও লক্ষ্য রাখছি এবং নির্বাচন কমিশনের কাজে কী ভুল আছে যথাসময়ে রিপোর্ট দেব।”
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর হিন্দুদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “আমরা প্রত্যেকেই বিধায়ক হিসেবে শপথ নিয়েছিলাম, আমরা সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা ভাবনাকে রক্ষা করে চলব। সেটা উনি মানেন না। উনি সর্বত্র ধর্মীয় মেরুকরণ নিয়ে কথা বলতে থাকেন।”
ভোটার তালিকায় নিয়ে তৃণমূলের অভিযোগ নিয়ে বিজেপির হুগলি জেলা সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, “ভোটার তালিকা তৈরি করে কারা? রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় নাম তুলেছে কারা? এভাবে তাদের আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে রাজ্যে। নিজেদের ভোট বাক্স মজবুত করার জন্য তৃণমূলই ভূতুড়ে ভোটার তৈরি করছে।”





