ছুটি কাটাতে বাড়ি এসে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর বানিয়ে ফেললেন মেজর

মেজর ঋত্বিকের কথায়, "সিলিন্ডার কিনতে না পেরে ভাবলাম অক্সিজেন কনসেনট্রেটর কিনব। কিন্তু এত দাম! তাই নিজেরাই কনসেনট্রেটর বানিয়ে ফেললাম।''

ছুটি কাটাতে বাড়ি এসে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর বানিয়ে ফেললেন মেজর
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 10, 2021 | 10:23 PM

হুগলি: দেশে করোনার (Corona) দ্বিতীয় ঢেউয়ে তীব্র হচ্ছে অক্সিজেনের (Oxygen) চাহিদা। সেই অক্সিজেনের প্রয়োজন মেটাতে নিজেই কনসেনট্রেটর মেশিন তৈরি করে ফেললেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক মেজর। করোনা আক্রান্তের কাছে অক্সিজেন পৌঁছে দিতে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর তৈরী সিদ্ধান্ত নিলেন মেজর ঋত্বিক পাল।

আদতে হুগলির হিন্দমোটরের বাসিন্দা। বর্তমানে পঞ্জাবে কর্মরত মেজর ঋত্বিক। কয়েকদিন আগে ছুটিতে বাড়িতে এসেছেন। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে নিজের এলাকার অক্সিজেনের সঙ্কট দেখে আর ছুটি কাটানোর মেজাজে নেই তিনি। দিনরাত এক করে মেজর অক্সিজেন জোগাড়ের চেষ্টা করে গিয়েছেন। সঙ্গে ছিলেন বন্ধু কলকাতা পুলিশের ডিজাস্টার বিভাগের কর্মী সুভাষ দেবনাথ। তাঁরা দু’জনে মিলে ঠিক করেছিলেন, কিছু অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে করোনা রোগীদের পাশে দাঁড়াবেন। কিন্তু সিলিন্ডার কিনতে গিয়েও হয়রানি। দাম শুনেই পিছিয়ে আসেন। তাই নিজেই কনসেনট্রেটর তৈরির সিদ্ধান্ত নেন মেজর। তার পর যেই ভাবা সেই কাজ।

সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার আগে ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন ঋত্বিক। সেই শিক্ষা কাজে লাগালেন অতিমারিতে। কিছু নগদ টাকা যোগাড় করে কাজে নেমে পড়েন হিন্দমোটরের এই মেজর। সঙ্গী বন্ধু অমিত দে পুরকায়স্থ। বন্ধুর একটি যন্ত্র তৈরির কারখানা রয়েছে। সেখানেই ঋত্বিক শুরু করে দেন অক্সিজেন কনসেনট্রেটর তৈরির কাজ। এক সপ্তাহ ধরে কলকাতা ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ কিনেছেন তিনি। তাই দিয়ে নিজেই তৈরি করে ফেলেন এই যন্ত্র।

মেজর ঋত্বিকের কথায়, “সিলিন্ডার কিনতে না পেরে ভাবলাম অক্সিজেন কনসেনট্রেটর কিনব। কিন্তু এত দাম! তাই নিজেরাই কনসেনট্রেটর বানিয়ে ফেললাম। এই মেশিনে বাতাস থেকে ২০ শতাংশ অক্সিজেন নিয়ে বাকি নাইট্রোজেন, কার্বন-ডাই অক্সাইড বের করে দিয়ে অক্সিজেনটাকে স্টোর করা হয়। মিনিটে দশ লিটার অক্সিজেন তৈরি করবে এই মেশিন।”

কিন্তু তাঁদের যেহেতু লাইসেন্স নেই তাই অক্সিজেন স্টোর করতে পারবেন না। এই পরিস্থিতিতে সরাসরি বিদ্যুতের সাহায্যে মেশিনটি চালিয়ে অক্সিজেন তৈরির ব্যবস্থা করেন তিনি। বাজারে এমন মেশিনের দাম কমপক্ষে হাজার আশি টাকা। তবে এখন তা পৌঁছেছে এক লাখে। মেজর ও তাঁর সহযোগীরা পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ করে এই মেশিন বানিয়ে ফেলেছেন। তাঁদের লক্ষ্য, এলাকার মানুষের যাতে অক্সিজেনের অভাব না হয়।

আরও পড়ুন: Oxygen Concentrator: করোনা আবহে অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাবে এই যন্ত্র! কেনার আগে কী কী মাথায় রাখবেন

আপাতত হিন্দমোটরের মেঘদূত ক্লাবে এই অক্সিজেন কনসেনট্রেটরটি থাকবে। যেখান থেকে একসঙ্গে তিনজন একই সময়ে অক্সিজেন পাবেন। মেজরের এহেন কাজের ভূয়সী প্রশংসা করছেন এলাকাবাসী।