Arambag School: এমএড-বিএড যোগ্যতা সম্পন্ন ‘শিক্ষক’ পড়াচ্ছে ৫০০ টাকায়, সরকারি স্কুল নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন এলাকাবাসী
Hooghly: উল্লেখ্য, এই স্কুল থেকে এই বছর শ্রাবণী মণ্ডল ও পল্লবী মণ্ডল উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় নবম ও দশম স্থান অধিকার করেছে।
আরামবাগ: উচ্চ-মাধ্যমিক স্কুল। রয়েছে চেয়ার-টেবিল, ব্ল্যাকবোর্ড সহ নানা পড়াশোনার সামগ্রী। তবে শিক্ষক? তাঁরা কোথায়? আদতে ওই স্কুল শিক্ষক শূন্য। আর যে কজন রয়েছেন তাঁদের বেতন মাত্র ৫০০ টাকা। না চমকে যাবেন না! এই ভাবেই চলছে রাজ্যের উচ্চ-মাধ্যমিক বিশ্ববিদ্যালয়।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কড়া ইডি। শুক্রবার থেকে দফায়-দফায় চলেছে তদন্ত। উদ্ধার হয়েছে কোটি-কোটি টাকা। ঠিক তখনই হুগলির আরামবাগের একটি স্কুলে তদন্ত করতেই দেখা গেল এমএড, বিএড শিক্ষক মিলছে মাত্র ৫০০ টাকায়। জানা গিয়েছে, এই বছর উচ্চমাধ্যমিকে নবম ও দশম স্থান অধিকার করেছে ওই স্কুলেরই দুই পড়ুয়া। তাঁদের যিনি ইংরেজি পড়ান ওই শিক্ষকের বেতন মাত্র ৫০০ টাকা।
প্রায় চার বছর ধরে ইংরেজি সহ আরও কয়েকটি বিষয়ে স্থায়ী কোনও শিক্ষক নেই। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি স্কুল চালাতে স্থানীয় ভাবে চারজন অস্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করেছে। প্রত্যেকের শিক্ষকতার যোগ্যতা এমএ কারো-কারো আবার বিএড ও আছে। চারজনেরই মাসিক বেতন মাত্র ৫০০ টাকা। শুনতে খানিকটা গল্পের মত হলেও এভাবেই চলছে হুগলি ও বাঁকুড়া সীমান্তবর্তী গোঘাট ২ নম্বর ব্লকের পুখুরিয়া সুরেশ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় ।
উল্লেখ্য, এই স্কুল থেকে এই বছর শ্রাবণী মণ্ডল ও পল্লবী মণ্ডল উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় নবম ও দশম স্থান অধিকার করেছে। শাসক দলের নেতারা প্রীতিদের সংবর্ধনা জানাচ্ছেন। অথচ এই স্কুলে চরম অন্ধকারের দিকটা কেউই ভেবে দেখছেন না। যেখানে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকদের অনেকেরই বেতন লক্ষাধিক টাকা সেখানে এমএবিএড পাস করা ছেলেরা চাকরি করছে পাঁচশো টাকা মাসিক বেতনে।
শিক্ষকদের পরিচিতি
পুকুরিয়া স্কুলের শিক্ষক রয়েছেন চারজন। রাকেশ সরকার ইংরেজিতে এমএবিএড ২০১৫ সালে এমএ পাস করেও একবারও এসএসসি দেওয়ার সুযোগ পাননি। পিন্টু চৌধুরী তাঁর বিষয় মিউট্রিশন। নির্মল পাল নামে অপরজন। এই স্কুলে ভূগোল পড়ান। সুদিন খাঁড়া ফিজিক্যাল এডুকেশনের শিক্ষক। এদের প্রত্যেকেরই মাসিক বেতন ৫০০ টাকা। তাঁরা বলছেন, কয়েকশো ছেলেমেয়ে এখানে পড়াশোনা করে। এলাকায় এই স্কুলের যথেষ্ট সুনামও আছে। শিক্ষক সংখ্যা মাত্র ১২ জন হাতে গোনা। এই কজন শিক্ষক নিয়ে স্কুল চালানো সম্ভব নয়। তাঁরাও বেকার সেই কারণেই পড়াশোনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে ৫০০ টাকায় ছাত্র পড়াচ্ছেন ।
স্থানীয়রা বাসিন্দারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই স্কুলে নতুন কোনও শিক্ষকের দেখা নেই। উল্টে শিক্ষকের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এই অবস্থায় স্কুল চালানোই মুশকিল। স্থানীয় যুবকরা স্কুলে যাচ্ছে বলেই ছেলেমেয়েরা ক্লাস করতে পারছে। তা না হলে ছেলেরা স্কুলে যেত আর মিডডে মিল খেয়ে বাড়ি চলে আসত। স্কুল কর্তৃপক্ষ বলেন, ‘এই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির প্রত্যেকে রয়েছে। কাউন্সিলের নিয়ম মেনেই ওনারা পড়াচ্ছেন। বর্তমানে পাঁচজন টিচারের ঘাটতি চলছে। ওরা অস্থায়ী। সপ্তাহে দু’দিন করে এসে ওরা পড়ায়।’