Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Kalyan Banerjee: ‘ভুল হয়েছে মাফ করে দাও…’ শুনতেই সেদিন যাঁকে ‘গদ্দার’ বলেছিলেন, তাঁকেই ‘ভাই’ বলে বুকে জড়িয়ে ধরলেন কল্যাণ

Kalyan Banerjee: সেই রাজীবকেই রবিবার সকালে নিজের বাড়িতে বুকে জড়িয়ে ধরলেন কল্যাণ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ সবই জানান দিচ্ছে ছাব্বিশের নির্বাচনের সাংগঠনিক ব্লু প্রিন্টের বিষয়টি!

Kalyan Banerjee: 'ভুল হয়েছে মাফ করে দাও...' শুনতেই সেদিন যাঁকে 'গদ্দার' বলেছিলেন, তাঁকেই 'ভাই' বলে বুকে জড়িয়ে ধরলেন কল্যাণ
সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় Image Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 09, 2025 | 3:19 PM

হুগলি: যাঁর মুখে ‘হাইব্রিড নেতা’ নেতা বলে কটাক্ষ শুনতে হয়েছিল। সেই শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুয়ারেই এবার তৃণমূল নেতা রাজিব বন্দ্যোপাধ্যায়। দেখা করলেন, জড়িয়ে ধরলেন একে অপরকে! রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ সবই জানান দিচ্ছে ছাব্বিশের নির্বাচনের সাংগঠনিক ব্লু প্রিন্টের বিষয়টি!

শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত হাওড়ার ডোমজুড় বিধানসভা।  গত একুশের নির্বাচনের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী পর্যায়ে সাংসদ কল্যাণ আর ডোমজুড়ের প্রাক্তন বিধায়ক রাজীবের মধ্যেই কোন্দল রাজনৈতিক মহলে চর্চিত হয়েছে। একাধিকবার প্রকাশ্যে এসেছে কাদা ছোড়াছুড়ির নজির। রবিবার, ছুটির সকালে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িয়ে গিয়ে দেখা করলেন রাজিব। সঙ্গে ছিলেন প্রবীর ঘোষালও। কল্যাণ বললেন, “রাজীব বলল, ভুল হয়েছে, ক্ষমা করে দাও। আমি বললাম, দিদি যখন তোমায় দলে নিয়েছে, আমি কেন কিছু বলব!”

একুশের নির্বাচনের আগে দল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন রাজীব। বিজেপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করেছিলেন। কিন্তু জয় অধরাই ছিল। পরে রাজীব ফের তৃণমূলে ফেরেন। কিন্তু রাজীবকে নিয়ে কল্যাণের একাধিক মন্তব্য বারবার ইন্ধন জুগিয়েছে বিতর্কের।

রাজীব তৃণমূলে ফেরায় তাঁর বিরুদ্ধে ডোমজুড়ের একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ পোস্টারিং হয়েছে। ‘টপ টু বটাম কোরাপ্টেড’ থেকে শুরু করে ‘হাইব্রিড নেতা’, ‘‌‌আমি সব পারেতেই আছি…ভাসিয়ে দিয়ে ডিঙা’‌-এহেন শব্দবন্ধে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে একাধিকবার বিঁধতে দেখা গিয়েছে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এসবের মাঝে রাজীবের ঘরওয়াপসির জল্পনা শুরু হয়। তখনও কল্যাণকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “রাজীবের ভ্যালু ইজ় জিরো, সেটা আমরা প্রমাণ করে দেখিয়ে দিয়েছি। এরপর ওকে নিয়ে কী উপকারিতা হবে, অপকারিতা হলে সেটা ওপরের নেতা সিদ্ধান্ত নেবে। দিদি তো স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, গদ্দারদের দলে নেওয়া হবে না। সেই গদ্দারের প্যারামিটার কী, সেটাও দিদিই ঠিক করবেন!”

এসবের মাঝে রাজীব দলে ফেরেন, তবে বাংলায় খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে তিনি ছিলেন না। পরে তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ত্রিপুরায়। তারপর চব্বিশের লোকসভা ভোট যায়। তবু কিছুতেই কল্যাণ রাজীব দুই বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক মঞ্চে এক অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি।

সেই রাজীবকেই রবিবার সকালে নিজের বাড়িতে বুকে জড়িয়ে ধরলেন কল্যাণ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে রাজীব-কল্যাণ সন্ধি আক্ষরিক অর্থেই তাৎপর্যপূর্ণ।

কল্যাণের সঙ্গে দেখা করে রাজীব বললেন, “আমি দল পরিবর্তন করেছিলাম বলে দাদার অভিমান হয়েছিল। তারপর থেকে একটা দূরত্ব তৈরি হয়। আজকে যখন শ্রীরামপুরে এসেছিলাম তখন মনে হল দাদার সঙ্গে গিয়ে একটু দেখা করি। দাদা ভাইয়ের সম্পর্কের মধ্যে ভালোবাসাও থাকবে, রাগও থাকবে,অভিমানও থাকবে, অভিযোগও থাকবে।আজকে দেখা হয়ে খুব ভালো লাগল। দাদা জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গন করলেন। আমরা একই দল করি আশা করি আগামী দিনে দাদা ভাইয়ের সম্পর্ক অটুট থাকবে।”

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাজীব দলে জয়েন করেছে অনেকদিন আগেই। দিদি ওকে কিছু কিছু দায়িত্ব দিয়েছে। রাজীব আজকে এসেছিল আমার সঙ্গে দেখা করতে।বলল দাদা ভুল টুল হয়েছে। ক্ষমা টমা করো। ২০২৬ এ নির্বাচন আসছে সবাইকে নিয়ে তো চলতে হবে সবাইকে নিয়েই কাজ করতে হবে। দল কাকে কী দায়িত্ব দেবে সেটা পরের ব্যাপার।”

রাজীবকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন কল্যাণ

কল্যাণ মুখ খুললেন নিজের অভিমান নিয়েও। তিনি বললেন, “আমার সঙ্গে ওর ব্যক্তিগত কোন সমস্যা ছিল না। একটা কষ্ট ছিল, তুমি তৃণমূল থেকে  কেন চলে গেলে! দল থেকে তো কোন তোমার প্রতি অবিচার হয়নি। এটা আমার একটা অভিমানের জায়গা ছিল। একুশের নির্বাচনের ঠিক আগে চলে যাওয়াতে নিঃসন্দেহে একটা অসুবিধা হয়েছিল। আমি নিজে পরিশ্রম করে সেই জায়গা রিকভারি করেছি।”

তবে তাঁর কথায়, “ওরা ফিরে এসেছে। যারা ফিরে এসেছে তাদের দিদি গ্রহণ করেছেন, আমি কেন কিছু বলতে যাব। আমার কাছে এসেছে সম্মান দেখিয়ে, এটাই অনেক বড় কথা। সবাই ভাল করে কাজ করুক। ওরা তো আমার ছোট ভাইয়ের মতো।”