Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Potato Crisis: ‘জমি-সোনা সব বিক্রি করে দিতে হবে!’ কেন এত ভয় পাচ্ছেন বাংলার আলুচাষিরা?

Potato Crisis: মহাজনি প্রথায় অথবা ধার দেনা করে আলু চাষ করেছেন কৃষকরা। কেউ আবার ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়ে করেছেন চাষ। আলু বীজ থেকে কীটনাশক রাসায়নিক সার, সবকিছুর লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধিতে এমনিতেই চাপ বেড়েছে চাষিদের মধ্যে।

Potato Crisis: ‘জমি-সোনা সব বিক্রি করে দিতে হবে!’ কেন এত ভয় পাচ্ছেন বাংলার আলুচাষিরা?
কী বলছেন বাংলার চাষিরা? Image Credit source: TV 9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 09, 2025 | 2:49 PM

হুগলি: কখনও অকাল বৃষ্টিতে ডুবেছে জমি, কখনও শীতের খামখেয়ালিপনা, কখনও ডিভিসির জলে সমস্যা, এই মরসুমের শুরু থেকেই বারবার কোপ পড়েছে আলু চাষে। তবে অনেক জায়গাতেই ফলন ভাল হলেও দাম পাচ্ছেন না চাষীরা। ক্ষোভ বেড়েছে আরামবাগ থেকে তারকেশ্বর, বাঁকুড়া থেকে মেদিনীপুর, রাজ্যের বড় অংশের চাষীদের মধ্যে। আলু উঠলেও দাম না পাওয়া যাওয়ায় হাহাকার পড়ে গিয়েছে চাষিদের মধ্যে। সরকার ৪৫০ টাকা (৫০ কেজি) বস্তা হিসাবে চাষিদের থেকে সহায়ক মরলে আলু কেনার কথা থাকলেও তাদের দেখা নেই। এমনটাই বলছেন চাষিরা। ফলে মাঠ থেকে তাঁরা ৭ টাকা কেজি প্রতি অর্থাৎ ৩৫০ টাকা বস্তা আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। 

‘ভাল দামের’ অপেক্ষা করেও রেহাই নেই 

এদিকে আলু পচনশীল। মাঠ থেকে আলু তুলে বিক্রি করতেই হবে অথবা হিমঘরে পাঠাতে হবে। তা ছাড়া উপায় নেই। বিক্রি করলে দাম নেই, হিমঘরে রেখে ‘ভাল দামের’ অপেক্ষা করলেও গত কয়েক বছরে বারবার সেগুড়ে বালি দেখে হতাশায় চাষিরা। অন্যদিকে সব চাষিদের আবার হিমঘরের খরচ দেওয়ার মতো সামর্থ্যও নেই। ফলে মাঠ থেকেই যা দাম পাচ্ছেন তাতেই বস্তা বস্তা আলু বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই। 

মহাজনি প্রথায় অথবা ধার দেনা করে আলু চাষ করেছেন কৃষকরা। কেউ আবার ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়ে করেছেন চাষ। আলু বীজ থেকে কীটনাশক রাসায়নিক সার, সবকিছুর লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধিতে এমনিতেই চাপ বেড়েছে চাষিদের মধ্যে। এরইমদ্যে রাসায়নিক সারেরও কালোবাজিরর অভিযোগ সমানে এসেছে বারবার। যার ফলে আলু চাষের খরচ বিগত কয়েক বছরে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে বলে মত আলু চাষিদের। 

বিঘা প্রতি খরচ কত? 

বিঘা প্রতি আলু চাষ করতে খরচ হচ্ছে ৩৩ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা। সেখানে জমির সব আলু বিক্রি করলে পাওয়া যাচ্ছে ২২ থেকে ২৪ হাজার টাকা। ফলে চাষের খরচটুকুও ঘরে উঠছে না। অন্যদিকে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার জেরে কমছে ফলনও। আরামবাগ-তারকেশ্বরের চাষিরা জানাচ্ছেন এবার বিঘা প্রতি গড়ে ৬০ থেকে ৬৫ বস্তা পর্যন্ত আলুর ফলন হয়েছে। যা আগে আরও বেশি হতো। অন্যদিকে ব্যবসায়ীদেরও সেই ভাবে মাঠে নামতে দেখা যাচ্ছে না। রাজ্যের সীমান্তগুলি বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা বাইরের রাজ্যে আলু পাঠাতে না পারায় তারাও সেইভাবে আলু কিনতে আগ্রহী নয়। আর যাঁরা কিনতে চাইছেন তাঁরা আবার চাইছেন সরকার যা দাম বেঁধে দিয়েছে তার থেকেও কম দামে আলু কিনতে। তাতেই চাপ বাড়ছে চাষিদের মধ্যে। 

এ বছর আবার গড় উৎপাদিত আলু কিনতে রাজি নয় ব্যবসায়ীরা। এ অভিযোগও করছেন অনেক চাষি। বাছাই করে বড় সাইজের আলোয় তারা কেবলমাত্র চাষিদের কাছ থেকে কিনছে। যার ফলে ছোট সাইজের আলু চাষের ঘরে থেকে যাচ্ছে। চাষিরা বলছেন অবস্থার বদলে সামগ্রিকভাবে সরকারের নজরদারি প্রয়োজন। দ্রুত পদক্ষেপ নিক সরকার। আরামবাগের এক চাষি বলছেন, “চাষের খরচ তো কোনওভাবেই উঠছে না। কী আর করব। সরকার যদি বর্ডার সিল করে দেয় সেই ভয়ে ব্যবসায়ীরাও আলু কিনতে ভয় পাচ্ছে। ধার যা আছে তা সোনা-জমি বিক্রি করেই শোধ করতে হবে। কিন্তু, শোধ তো করতেই হবে। কারণ ধার তো নিয়েছি। আর তো কোনও উপায় দেখছি না।”