Uttarpara: হাতে স্যালাইনের চ্যানেল, হাসপাতালের কাছেই নর্দমায় পড়ে রোগী চেঁচাচ্ছে ‘বাঁচাও, বাঁচাও’!

Hooghly: বালির নিমতলার এলাকার বাসিন্দা প্রশান্ত মণ্ডল নামে এক যুবক হাসপাতালে ঢুকতে গিয়ে দেখেন এক জন নর্দমার পাশে পড়ে রয়েছেন।

Uttarpara: হাতে স্যালাইনের চ্যানেল, হাসপাতালের কাছেই নর্দমায় পড়ে রোগী চেঁচাচ্ছে 'বাঁচাও, বাঁচাও'!
সেই রোগী, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 11, 2021 | 11:22 PM

উত্তরপাড়া: দূর থেকে কেবল ভেসে আসছে একটাই চিত্‍কার। ‘বাঁচাও, বাঁচাও’! কোথা থেকে এমন আওয়াজ? রহস্যভেদ করতে বেশি সময় অবশ্য় লাগল না। রাস্তার ধারে নর্দমা। সেই নর্দমায় পড়ে রয়েছেন এক রোগী। হাতে স্যালাইনের চ্যানেল! পরিত্রাহী চিত্‍কার তাঁরই! চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের (Uttarpara State General Hospital)।

ঠিক কী হয়েছিল? বালির নিমতলার এলাকার বাসিন্দা প্রশান্ত মণ্ডল নামে এক যুবক হাসপাতালে ঢুকতে গিয়ে দেখেন এক জন নর্দমায় পড়ে রয়েছেন। চিত্‍কারটা আসছে সেখান থেকেই।

প্রশান্তের কথায়, ‘‘আমাদের এক পরিচিতের মৃত্যু হয়েছে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। আমরা সেই খবর পেয়ে যখন হাসপাতালে ঢুকছি তখন ‘বাঁচাও বাঁচাও’ করে চিৎকার শুনতে পাই। দেখি, হাসপাতালের পাশে নর্দমায় এক জন পড়ে রয়েছেন। তাঁর হাতে স্যালাইনের চ্যানেল। তিনি বলেন, ‘আমাকে উপর থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে।’ ওই রোগীকে তুলে নিয়ে আসি আমরা। কর্তব্যরত নার্সকে ডেকে তাঁকে আবার হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।’’

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, ওই রোগীকে ফেলে দেওয়া হয়নি। তবে তিনি কী করে হাসপাতালের বাইরে গেলেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চারিদিকেই কড়া নজরদারি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে, ওই রোগী লুকিয়ে মদ্যপানও করেছেন কয়েকবার। লিভারের অসুখেই তিনি ভর্তি হয়েছিলেন। যদিও, সেই অভিযোগ সত্যি  কি না তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে।

রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য ইন্দ্রজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘এমন ঘটনা ঘটে থাকলে তা ঠিক হয়নি। আমি ঘটনার কথা শুনে নানা জায়গায় জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছি, মাখলার বাসিন্দা যদু দাস নামে ওই ব্যক্তি পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি নিজেই বন্ডে সই করে রিলিজ নিয়ে বাড়ি চলে গিয়েছেন। হাসপাতালের প্রধান জায়গাগুলিতে সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। যাতে নজরদারি করা যায়। আমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি। কোথাও নিশ্চয়ই খামতি হয়েছে।’’

এদিকে, নিজের বাবার এমন পরিণতির কথা জানতে পেরে ওই রোগীর ছেলের মন্তব্য, ‘‘গত কাল বাবাকে ভর্তি করেছিলাম। রাত ন’টা নাগাদ খাবার দিয়ে দেখা করে আসি। আজ সকালে শুনলাম এই ঘটনা। কী করে এমন ঘটনা ঘটল তা বুঝতে পারছি না। বাবার শরীর খারাপ। তাও নার্সরা বললেন বাড়ি নিয়ে চলে যেতে। তার পর বন্ডে সই করিয়ে ছুটি দিয়ে দিল। বাবার বাম পা ফুলে গিয়েছে। শরীরের কয়েকটি জায়গাও কেটে গিয়েছে।’’ তবে নিজের বৃদ্ধ বাবার মদ্যপানের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার, উত্তরপাড়া পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটরখোকন মণ্ডল ওই রোগীর বাড়িতে যান। তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনাটা শুনেছি। তাঁকে জোর করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ। সেটা যদি হয়ে থাকে তা হলে হাসপাতাল ঠিক করেনি। আমরা গোটা বিষয়টা খতিয়ে দেখব।’’ তবে এই ঘটনায় রোগীর পরিবারের তরফে থানায় এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

আরও পড়ুন: TMC: ‘গোঁজ প্রার্থী দিলে চামড়া গুটিয়ে নেব’, হুঁশিয়ারি বনগাঁর তৃণমূল সভানেত্রীর