TMCP: অ্যাম্বুলেন্স দান করা IPS-এর মায়ের নাম মুছে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি লাগানোর অভিযোগ TMCP-র বিরুদ্ধে
Hooghly: বছর পাঁচেক আগে পাড়ার ক্লাবে অ্যাম্বুলেন্স কিনতে মায়ের স্মৃতিতে এক লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন আইপিএস আনন্দ মিশ্র।
হুগলি: ক্লাবের অ্যাম্বুলেন্স কিনতে ১ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন আইপিএস (IPS) অফিসার। তাঁর মায়ের নামও লেখা ছিল অ্যাম্বুলেন্সের গায়ে। অভিযোগ, সেই নাম মুছে, নতুন করে তৃণমূল কংগ্রেস লিখে সেই একই অ্যাম্বুলেন্সের উদ্বোধন করা হল নতুনভাবে।
বছর পাঁচেক আগে পাড়ার ক্লাবে অ্যাম্বুলেন্স কিনতে মায়ের স্মৃতিতে এক লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন আইপিএস আনন্দ মিশ্র। সেই অ্যাম্বুলেন্সে উত্তরপাড়া শহর তৃণমূল ছাত্র যুব কংগ্রেস লিখে নতুন করে উদ্বোধন হয়েছে।নারকেল ফাটিয়ে যার উদ্বোধন করেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এনিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল শুধু নাম পরিবর্তন করে এটা ওদের সংস্কৃতি। যদিও, তৃণমূলের দাবি ক্লাব চালাতে পারছিল না বলে তৃণমূল ছাত্র-যুবকে দেওয়া হয়েছে ওই অ্যাম্বুলেন্স ।
উল্লেখ্য, উত্তরপাড়া মাখলার সেবক সংঘ ক্লাব অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা চালু করে ২০১৮ সালে। উদ্দেশ্য ছিল এলাকার মানুষের পরিষেবা দেওয়া। চাঁদা তুলে কেনা হয় অ্যাম্বুলেন্স। মাখলা অঞ্চলের বাসিন্দা বর্তমানে অসমে কর্মরত আইপিএস আনন্দ মিশ্র তাঁর মা শান্তি মিশ্রর সে সময় মৃত্যু হয়। পাড়ার ক্লাবের ছেলেরা অ্যাম্বুলেন্স কিনছে জানতে পেরে তিনি এক লক্ষ টাকা দেন। অ্যাম্বুলেন্সে তাঁর মায়ের নামও লেখা হয়। সেই অ্যাম্বুলেন্স শনিবার নতুন করে উদ্বোধন করেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। অ্যাম্বুলেন্সের গায়ে শান্তি মিশ্র এবং ক্লাবের নাম তুলে দিয়ে লেখা হয় উত্তরপাড়া শহর তৃণমূল ছাত্র ও যুব কংগ্রেস।
বিরোধীদের প্রশ্ন কেন ক্লাবের অ্যাম্বুলেন্স এভাবে কোনও রাজনৈতিক দলকে দিয়ে দেওয়া হল?
ক্লাবের প্রাক্তন সম্পাদক দেবাশীস ভৌমিক জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি জানতে পারার পর উত্তরপাড়া থানায় গিয়ে জানিয়েছেন। কারণ অ্যাম্বুলেন্সটি এখনও তার নামেই রেজিষ্ট্রেশন করা। আপিএস মিশ্র তাঁর মায়ের স্মৃতিতে এক লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। মাখলা এলাকার মানুষের সুবিধার জন্য অ্যাম্বুলেন্সটি চালু করা হয়েছিল সেটা হলেই ভাল হবে।
ক্লাবের বর্তমান সদস্য সৌরভ দাসের দাবি, অ্যাম্বুলেন্স ক্লাবেই আছে। কোনও নাম পাল্টানো হয়নি। অ্যাম্বুলেন্স পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছিল। আইপিএস আনন্দ মিশ্র পাড়ার গর্ব। তাঁর মায়ের নাম অ্যাম্বুলেন্সে থাকবে। আনন্দ মিশ্রর ভাইপো রবি মিশ্র বলেন, “অ্যাম্বুলেন্সটা দেওয়া হয়েছিল এলাকার লোকেদের সুবিধার জন্য।আমরা জানতাম না যে অ্যাম্বুলেন্স অন্য জায়গায় দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার এক আত্মীয়ের পা ভেঙে গিয়েছিল তার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন ছিল কিন্তু পেলাম না। আমরা চাই অ্যাম্বুলেন্সটা যেরকম ছিল সেরকম থাকুক।”
স্থানীয় বিজেপি নেতা পঙ্কজ রায় বলেন, “তৃণমূলের একটা দীর্ঘদিনের অভ্যাস নাম পাল্টে দেওয়া। একজন আইপিএস অফিসার তাঁর মায়ের স্মৃতিতে অ্যাম্বুলেন্স কিনতে সাহায্য করলেন, আর তার নামটাই মুছে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস লিখে দেওয়া হল। এটা খুবই লজ্জার।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের হুগলি জেলা সভাপতি সম্বুদ্ধ দত্ত বলেন, “ওই ক্লাব অ্যাম্বুলেন্সটি চালাতে পারছিল না তাই আমাদের কাছে অনুরোধ করে মানুষের স্বার্থে আমরা পরিষেবা দিই। ক্লাবের কমিটি সিদ্ধান্ত আমাদের দিয়েছে। এরকম আরো দুটি ক্লাব আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের জন্য একের পর এক যেভাবে কাজ করছেন মানুষের ভরসার জায়গা তাই তৃণমূল কংগ্রেস লেখা। আমরা নতুন করে অ্যাম্বুলেন্সটাকে তৈরি করে কম খরচে মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নিয়েছি। বিজেপির কোনও কাজ নেই। মানুষ যাতে কোনও পরিষেবা না পায়, মানুষকে কীভাবে বিভ্রান্ত করা যায় এই নিয়ে সারাদিন পড়ে আছে। কারণ সামনে ভোট আসছে।”