মুখ্যমন্ত্রী নন, চারবার জিতিয়েছে সিঙ্গুরের মানুষ, মমতাকে পাল্টা রবীন্দ্রনাথ
‘বেচারা মাস্টারমশাইকে কোথায় একটু পা টিপে দেবে, গায়ে তেল মালিশ করে দেবে, সিদ্ধ ভাত রেঁধে দেবে তা নয় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে গরমের মধ্যে। কষ্ট হচ্ছে না লোকটার?’ মমতা (Mamata)-র মন্তব্যে পাল্টা তোপ দাগলেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য
হুগলি: তাঁকে চারবারের বিধায়ক করেছে সিঙ্গুরের মানুষ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নন। এভাবেই তৃণমূল নেত্রীর কটাক্ষের জবাব দিলেন তৃণমূলত্যাগী সিঙ্গুরের বিজেপি প্রার্থী (BJP Candidate) রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য (Rabindranath Bhattacharjee)। বুধবার সিঙ্গুরের মাস্টারমশাইয়ের মন্তব্য, তাঁকে যে এবার প্রার্থী করা হচ্ছে না, তা আগে জানাননি তৃণমূল নেত্রী।
নন্দীগ্রামের মত বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন মমতার আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র সিঙ্গুরও। এবার নজির গড়ে নন্দীগ্রামে লড়ছেন মমতা। কিন্তু নন্দীগ্রামের ভোটের ঠিক আগে তৃণমূল নেত্রী জানান, সিঙ্গুর থেকেই লড়তে চেয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি বুধবার সিঙ্গুরের জনসভা থেকে তাঁর মুখ থেকে শোনা যায় মাস্টারমশাইয়ের নাম। বললেন, ‘আমি ভেবে পাই না, মাস্টারমশাই কী করে বিজেপির হয়ে দাঁড়ালেন?’
তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে অভিমানেই দল ছাড়েন সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। দল বদল করার পর সেই সিঙ্গুর থেকেই বিজেপি টিকিট দেয় তাঁকে। মমতার দাবি, এ ভাবে ধার করেই প্রার্থী করেছে বিজেপি। তিনি বলেন, ‘বেচারা মাস্টারমশাইকে কোথায় একটু পা টিপে দেবে, গায়ে তেল মালিশ করে দেবে, সিদ্ধ ভাত রেঁধে দেবে তা নয় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে গরমের মধ্যে। কষ্ট হচ্ছে না লোকটার?’ এই প্রেক্ষিতে মমতাকে পাল্টা তোপ দেগে রবীন্দ্রনাথ বলেন তাঁর চারবারের বিধায়ক হওয়ার পিছনে মমতার কোনও অবদান নেই।
প্রসঙ্গত, চারবারের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথকে ২০১১ সালে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে মন্ত্রী করা হয়। তবে পরে দলের সঙ্গে অনেকটাই ব্যবধান তৈরি হয়েছিল তাঁর। মন্ত্রিত্বও দেওয়া হয় না তাঁকে। এই প্রেক্ষিতে হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্নার সঙ্গে তাঁর মতবিরোধও প্রকাশ্যে আসে বার বার। একসময় দল ছাড়ার ইঙ্গিত তিনি নিজেই দিয়েছিলেন। কখনও অভিযোগ করেছিলেন, যেমন খুশি কমিটি বদল করে কাজের নেতাদের বাদ দেওয়া হচ্ছে। কখনও বলেছেন, তিনি ‘সম্মান’ পাচ্ছেন না। দলের কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগঠনের নেতা বেচারাম মান্নার নাম করেই তাঁকে বলতে শোনা যায়, স্বয়ং মমতা প্রশাসনিক সভায় বলে গিয়েছিলেন বেচারাম, মাস্টারমশাইকে সম্মান দিয়ে কাজ করো। কিন্তু তার পরেও কিছু পরিবর্তন হয়নি। এই রকম চললে আমাকেই দল ছাড়ার কথা ভাবতে হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘মাস্টারমশাইকে কোথায় একটু পা টিপে দেবে, তা নয় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে গরমের মধ্যে’
এর মধ্যে একুশের ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর দেখা যায় সিঙ্গুরে প্রার্থী করা হয়েছে বেচারাম মান্নাকে। এমনকি তাঁর হরিপালের আসন দেওয়া হয় স্ত্রী করবী মান্নাকে। আর মাস্টারমশাইকে টিকিট না দেওয়ার কারণ হিসেবে দেখানো হয় তাঁর বয়সকে। এর পর অভিমানে তৃণমূল ছাড়েন রবীন্দ্রনাথ। যোগদেন বিজেপিতে। আর গেরুয়া শিবিরে গিয়েই মিলেছে বিধানসভা ভোটে লড়ার টিকিটও। এ নিয়ে তাঁর নাম নিয়ে মমতার মন্তব্যের প্রত্যুত্তর দিলেন বিজেপি প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ।