Howrah News: ‘যা দিচ্ছি তা নিয়ে ছেড়ে দে কারখানা’, পুলিশের উপস্থিতিতেই ব্যবসায়ীকে হুমকির অভিযোগ বিধায়ক ঘনিষ্ঠদের
Manoj Tiwari: ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, রীতিমতো হুমকি দিয়ে মনোজ তিওয়ারি ঘনিষ্ঠ বিপ্লব দে ও পীযুষ মিশ্ররা বলেন, "যা দিচ্ছি তা নিয়ে ছেড়ে দে কারখানা।"
হাওড়া: কারখানা আর জমি নিয়ে শরিকি বিবাদ চলছিল। কিন্তু তাতে লেগে গেল রাজনীতির রঙ। ব্যবসায়ীকে হুমকির অভিযোগ উঠল শিবপুরের বিধায়ক তথা ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারির (Manoj Tiwari) ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, পুলিশ আধিকারিকের সামনেই হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল। সব দেখেও নিশ্চুপ ছিলেন বলে অভিযোগ ওই পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে।
কী ঘটেছে?
ঘটনাটি হাওড়ার শিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের। মধ্য হাওড়ার কাসুন্দিয়া এলাকার বাসিন্দা মানস রায় ও তাঁর স্ত্রী মৌমিতা রায়। শিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের কামারডাঙা এলাকায় তাঁদের পারিবারিক জমি রয়েছে। আর সেখানেই অনেক দিন ধরেই লোহার ফেব্রিকেশনের ব্যবসা তাঁদের। তবে এই জমি নিয়েই শরিকি বিবাদ ছিল। গতবছর পুজোর পর থেকেই জমি নিয়ে এই বিবাদ শুরু হয় পরিবারে।
অভিযোগ, গত ৩রা মে হঠাৎই মানসবাবুকে শিবপুরের বিধায়ক তথা ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি কদমতলায় অফিসে ডেকে পাঠানো হয়। সেই মতো সেখানে পৌঁছন মানসবাবু। অভিযোগ, মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ কয়েকজন পীযুষ মিশ্র নামে এক ব্যক্তিকে এলাকার বিধায়ক বলে পরিচয় করান। যখন এই ঘটনা ঘটছে তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন দাসনগর থানার এক পুলিশ অফিসারও বলে দাবি মানস রায়ের। ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, রীতিমতো হুমকি দিয়ে মনোজ তিওয়ারি ঘনিষ্ঠ বিপ্লব দে ও পীযুষ মিশ্ররা বলেন, “যা দিচ্ছি তা নিয়ে ছেড়ে দে কারখানা।”
এরপর বাড়ি ফিরে মনোজ রায় জানতে পারেন পীযূষ মিশ্র কোনও বিধায়ক নয়। এরপরই বেঁকে বসেন মনোজ। তিনি ওই তৃণমূল নেতাদের প্রস্তাবে রাজি নয় তা জানান তাঁদের। অভিযোগ, এরপর ফের ডেকে পাঠানো হয় মনোজবাবুকে। এরপর গত ১০ মে তিনি মুখ্য সচিব ও মুখ্যমন্ত্রীকে মেইল করে অভিযোগ জানান।
গত পরশু হাওড়া ডেপুটি কমিশনার তাদের ডেকে ঘটনাটি তদন্ত করেন।এরই মধ্যে গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার মানস রায়কে দাসনগর থানায় ডেকে পাঠানো হয়। অভিযোগ, পুলিশ তাঁর মোবাইল বন্ধ করে বেশ কয়েক ঘণ্টা বসিয়ে রাখে তাঁকে। সেই সময়ের মধ্যে তাঁদের কারখানা তালা মেরে দেয় তৃণমূল কর্মীরা। যার নেতৃত্বে ছিলেন রবিন রায় নামে ওই এলাকার তৃণমূল নেতা।
এরপর বুধবার দুপুরে ফের হাওড়া ডেপুটি কমিশনার তাঁকে ডেকে পাঠান। তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। বিকেলে কারখানার তালা ভেঙে দেন ওই ব্যবসায়ী। ঘটনাস্থলে অভিযুক্ত নেতা রবীন রায় ক্যামেরা দেখেই দৌড়ে পালিয়ে যান।
মানস রায় বলেন যে, তাঁদের শরিকি বিবাদে তৃণমূল কংগ্রেসের কিছু কর্মী যুক্ত হয়ে ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে পুলিশের সহযোগিতায়। ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী মৌমিতা রায় জানান যে তাঁরা আতঙ্কে রয়েছেন। শরিকি ঝামেলা আলোচনার মাধ্যমে অথবা আইনি পথে সমাধান হবে। কিন্তু পার্টি কেন আসবে এই প্রশ্ন তোলেন।
গোটা বিষয়টি শুনে রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় জানান, “কোনও রকম অপরাধমূলক কাজ দল বরদাস্ত করে না। কেউ জড়িত থাকলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।” যদিও, এই বিষয়ে মনোজ তিওয়ারির কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।