তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতে দুর্নীতির অভিযোগে সরব তৃণমূলই! তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন

তৃণমূলের অভিযোগ, জলপাইগুড়ি মহকুমা শাসক ও বিডিও সাহেবের তদন্ত করার কথা ছিল। কিন্তু সেই জায়গায় এদিন তিন বিডিও অফিসের কর্মচারী কে কী করে তদন্তে পাঠানো হল?

তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতে দুর্নীতির অভিযোগে সরব তৃণমূলই! তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 04, 2021 | 9:15 PM

জলপাইগুড়ি: তৃণমূল (TMC) পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে এবার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হলেন তৃণমূল নেতৃত্বরই একাংশ! পঞ্চায়েতের বিভিন্ন কাজে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ঠিকাদারকে দিয়ে একাধিক কাজের বিল পাঠিয়েও কাজ না করে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এমন সব দুর্নীতি ও বেনিয়মের অভিযোগে যখন সরব হয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব, তখন শুক্রবার এই ঘটনার তদন্তে বিন্নাগুড়িতে আসেন ধূপগুড়ি বিডিও অফিসের ৩ কর্মী। যা নিয়ে শুরু হয় আর এক বিতর্ক।

তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন খোদ তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। এতে ফের জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে আসছে বলেই মনে করছে বিরোধীরা। এর মধ্যেই এদিন দুপুরে বিন্নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বর্তমান বোর্ড ভেঙে দিয়ে আপাতত প্রশাসক বসিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজ চালানোর দাবিতে সরব হন বিন্নাগুড়ি অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা।

সাংবাদিক বৈঠকে তাঁরা বলেন, গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক দুর্নীতি নিয়ে ইতিমধ্যে জেলা শাসক, দলের জেলা সভাপতি সহ মুখ্য সচিবের দফতরেও অভিযোগ জানানো হয়েছে। জেলা স্তর থেকে তাদের এই অভিযোগের ভিত্তিতে কোনো পদক্ষেপ না নিলেও মুখ্য সচিবের দফতর থেকে বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ আসে জেলায়। তার প্রতিলিপিও অভিযোগকারীদের কাছে আসা হয়েছে। কিন্তু এই ঘটনার তদন্তে আসেন বিডিও অফিসের তিন কর্মচারী। এরকম দুর্নীতি মামলায় তাঁরা কীভাবে তদন্ত করতে পারেন তা নিয়ে জলঘোলা  হচ্ছে।

এবিষয়ে বিন্নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের কনভেনর বিজয় প্রসাদের অভিযোগ, “কাজ না করে টাকা তুলে নেওয়া, একই কাজে দু’জন কনট্রাক্টর দিয়ে দু’বার টাকা তোলা, টেন্ডারে অনিয়ম ইত্যাদি বিষয়গুলি নিয়ে প্রমাণ-সহ অভিযোগ করা হয়েছে। আমাদের ধারণা, এর পিছনে ব্লক প্রশাসনের মদত রয়েছে। তাই আমরা উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করছি।”

প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি তথা কিষাণ খেত মজদুর তৃণমূল কংগ্রেসের বর্তমান অঞ্চল সভাপতি বর্তমান বোর্ড ভাঙার দাবীতে সরব হয়েছেন। যদিও এ বিষয়ে বিন্নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দীপক শ্যাম কোনও মন্তব্য করতে নারাজ। তবে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন।

এদিকে এবিষয়ে ধূপগুড়ির বিডিও শঙ্খদ্বীপ দাসের মন্তব্য নিয়েও শুরু হয়েছে শোরগোল। তিনি প্রথমে জানান, এই ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তাঁর অফিস থেকে কোনও তদন্তে লোক পাঠানো হয়নি। তদন্তে কারা গিয়েছেন তাঁর জানা নেই।

তিনি এও বলেন, বিন্নগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত তার অন্তর্ভুক্ত এলাকার মধ্যে পড়ে না। বানারহাট পৃথক ব্লক হয়েছে। পরে প্রায় ঘন্টা দুয়েক পর বয়ান বদল করে তিনিই জানান, “আমার ইঞ্জিনিয়র এদিন বিন্নাগুড়িতে যায় একটি রানিং কাজ পরিদর্শনে জন্য। ওখানকার লোক তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়। যেটা সঠিক না। ধূপগুড়ির বিডিওর এহেন বক্তব্য নিয়েও কিন্তু তৈরি হয়েছে বিতর্ক। কারণ, আজ যারা তদন্তে গিয়েছে তারা প্রত্যেকেই ধূপগুড়ি বিডিও অফিসের কর্মচারী বলেই দাবি তৃণমূলের।

আরও পড়ুন: ‘আমাকে প্রাণে মেরে দিত’, চোখের জলে ভাসছেন তৃণমূল নেতা, গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত মেজিয়া

তৃণমূলের অভিযোগ, জলপাইগুড়ি মহকুমা শাসক ও বিডিও সাহেবের তদন্ত করার কথা ছিল। কিন্তু সেই জায়গায় এদিন তিন বিডিও অফিসের কর্মচারী কে কী করে তদন্তে পাঠানো হল? স্বাভাবিকভাবে ঘটনা নিয়ে কিন্তু নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। তাহলে কি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে আধিকারিকের একাংশ? উঠছে প্রশ্ন।