Malda: আলো আঁধারের মাঝে দাঁড়িয়ে যুবকের ভিডিয়ো, মোবাইলে স্বামীর কাণ্ড দেখে শরীর ঠান্ডা হয়ে গেল বউয়ের…

Commit Suicide: তবে পুলিশ সবদিক খোলা রেখেই তদন্ত করছে। স্ত্রী পম্পা দাসকে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। 

Malda: আলো আঁধারের মাঝে দাঁড়িয়ে যুবকের ভিডিয়ো, মোবাইলে স্বামীর কাণ্ড দেখে শরীর ঠান্ডা হয়ে গেল বউয়ের...
তদন্তে পুলিশ। ডানদিকে আত্মহত্যার আগের মুহূর্তে প্রদীপ। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 29, 2022 | 7:01 PM

মালদহ: গাছের কোটরে মোবাইল ফোন রেখে শুরু হল ফেসবুক লাইভ। সবুজ গেঞ্জি পরা এক যুবক স্ক্রিনে। বাঁশের মধ্যে কাপড় ঝোলানো। আলো আঁধারিতে ভালমতো দেখা যাচ্ছে না। তবে মনে হচ্ছিল যুবক বোধহয় আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন। হলও তেমনটাই। বাঁশে ঝোলানো কাপড়ে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়লেন তিনি। তার আগে পিছনে ঘুরে একবার দেখে নিলেন, কেউ কোথাও রয়েছে কি না। পুরাতন মালদহের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের নতুনপল্লির এই ঘটনায় শনিবার পরিবারে কান্নার রোল ওঠে। বাড়িতে মা রয়েছেন, রয়েছেন স্ত্রী, এক ছেলে। সকলকে ফেলে সবজি বিক্রেতা প্রদীস দাসের (২৪) এমন কাণ্ডে হতবাক পাড়ার লোকেরাও। কিন্তু তিনি এই ঘটনা ঘটালেন তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। প্রদীপের স্ত্রীর দাবি, স্বামী নিয়মিত মদ্যপান করতেন। সারাদিন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতেন, দাবি মায়ের। প্রদীপের এমন পরিণতি এই বন্ধুদের সঙ্গে অতিরিক্ত আড্ডা, মদ্যপানের জন্যই বলে মনে করছেন পরিবারের লোকেরা। মালদহ থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। আরও একজনকে খুঁজছেন।

ধৃতরা হলেন বান্টি সাহা, অখিল সাহা। উত্তম বর্মন নামে আরও এক যুবক পলাতক। জানা গিয়েছে ধৃতেরা প্রদীপের বন্ধু। পরিবারের লোকজন মনে করছেন, এইন তিনজনের সঙ্গে মদের আসরে কিছু নিয়ে বচসা হয়েছিল প্রদীপের। সেই হতাশা থেকেই এই ঘটনা বলে মনে করছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই প্রদীপের স্ত্রী পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন বলেও খবর। এদিকে এমনও অভিযোগ শোনা যাচ্ছে, মদের আসরে বন্ধুরা প্রদীপের স্ত্রী সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেছিলেন। যা নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে গোলমালে জড়িয়ে পড়েন প্রদীপ। এরপরই এই ঘটনা।

প্রদীপের মা বলেন, “আমিও সবজির দোকান দিই। এদিন রাত ৯টা সাড়ে ৯টা নাগাদ ফিরে রান্না করে খেয়ে শুয়ে পড়ি। আমার নাতিও আমার সঙ্গে ছিল। ওকেও খাইয়ে শুইয়ে দিই। বৌমা বলল আমার সঙ্গেই নিয়ে শুতে। এরপর রাতে একাধিকবার উঠে বাথরুমে গিয়েছি। ছেলে এলে দরজার কাছে ওর জুতো থাকে। এদিন রাতে একবারও দেখিনি। সারাদিন ও বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেয়। চার পাঁচটা ছেলে একেবারে দিনভর বিরক্ত করে ছাড়ে। আমি বহুবার বলেও কাজ হয়নি। এদিন আমি ভোর ৬টা নাগাদ আবারও উঠি। তখন ছেলের জুতো দেখেছি। কিন্তু বৌমাকে জিজ্ঞাসা করায় বলল, আসেনি। এরপরই বাড়ির সামনে এসে দেখি ছেলেটা কাপড় জড়িয়ে পড়ে রয়েছে।”

অন্যদিকে প্রদীপের স্ত্রী জানান, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, নিয়মিত মদ খাওয়া নিয়ে স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য হত। বহু বলেও বন্ধুদের আড্ডা ছাড়াতে পারেননি। স্ত্রী পম্পা দাস জানান, “এদিনও ঘরে ফেরেনি। রাতে বেশ কয়েকবার ফোন করলাম, ধরল না। এরপরই আমি শুয়ে পড়ি। সকালে উঠে দেখি বাইরের ঘরে পড়ে রয়েছে। কোনও অশান্তি কিছুই হয়নি। নিয়মিত মদ খেত আর বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা। আমি ফোনে ডাকলে আজেবাজে কথা বলত। এমনও ভেবেছিলাম অন্য জায়গায় ভাড়া নিয়ে চলে যাব। কিন্তু সেটাও সম্ভব হয়নি।” পাড়ার লোকজন জানান, প্রদীপ এমনিতে খুবই মিশুকে। মিষ্টি ব্যবহার তাঁর। তাঁদের অনুমান, কোনওরকম মানসিক হতাশা কাজ করছিল। তা থেকেই এমনটা হতে পারে। তবে পুলিশ সবদিক খোলা রেখেই তদন্ত করছে। স্ত্রী পম্পা দাসকে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।