‘যাঁরা বেসুরো গাইছেন, তাড়াতাড়ি বিদায় নিন’, লকেটের নিশানায় ‘দলবদলুরা’

বুধবার, মৃত সুস্মিতা কোলের মেয়ে ও স্বামীর সঙ্গে দেখা করে জানান, কেন্দ্রীয় সরকার থেকে বরাদ্দ ২ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ অতি দ্রুত যাতে পৌঁছে দেওয়া যায় তার ব্যবস্থা করবেন। পাশাপাশি এও জানান, পাণ্ডুয়া-সহ হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকায় বজ্রাঘাতে প্রায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সকলেই যাতে ক্ষতিপূরণ পান তার ব্যবস্থা করা হবে।

'যাঁরা বেসুরো গাইছেন, তাড়াতাড়ি বিদায় নিন', লকেটের নিশানায় 'দলবদলুরা'
পরিদর্শনে লকেট, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 09, 2021 | 3:24 PM

হুগলি: বঙ্গে প্রবল বৃষ্টি ও বজ্রাঘাতে একদিনে মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের। গত ৭জুন, সোমবার এই মৃত্যুমিছিলে যোগ হয় সিঙ্গুরের নসিবপুর গ্রামের বাসিন্দা সুস্মিতা কোলের নামও। বুধবার, মৃতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee)। এদিন, মৃতার পরিবারকে কেন্দ্র বরাদ্দ ক্ষতিপূরণ দিয়ে সাহায্য করার পাশাপাশি দলের বিষয়েও মুখ খোলেন বিজেপি সাংসদ।

বুধবার, মৃত সুস্মিতা কোলের মেয়ে ও স্বামীর সঙ্গে দেখা করে জানান, কেন্দ্রীয় সরকার থেকে বরাদ্দ ২ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ অতি দ্রুত যাতে পৌঁছে দেওয়া যায় তার ব্যবস্থা করবেন। পাশাপাশি এও জানান, পাণ্ডুয়া-সহ হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকায় বজ্রাঘাতে প্রায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সকলেই যাতে ক্ষতিপূরণ পান তার ব্যবস্থা করা হবে।

বিধানসভা নির্বাচনে লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হওয়ার পর থেকেই দলের একাধিক নেতৃত্বের ‘বেসুরো’ গাওয়া চোখ এড়ায়নি রাজ্য বিজেপির। সোনালি গুহ, সরলা মূর্মূ, অমল আচার্য্যদের পদ্মত্যাগের পর এ বার বেশ কিছু হেভিওয়েট নেতৃত্বও ‘বেসুরো’ হতে শুরু করেছেন। সম্প্রতি, বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারি করার দাবি তুলতেই, প্রায় তার সঙ্গেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া রাজীব বন্দ্য়োপাধ্যায় নিজের সোশাল হ্যান্ডেলে মন্তব্য করেন, “মানুষের বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আসা নির্বাচিত সরকারের সমালোচনা ও মুখ্য়মন্ত্রীর বিরোধিতা করতে গিয়ে কথায় কথায় দিল্লি আর ৩৫৬ ধারার জুজু দেখালে বাংলার মানুষ ভাল চোখে দেখবে না।” আর রাজীবের এই মন্তব্যের জেরে কার্যত তাঁর দলবদলের জল্পনা ফের প্রবল হয়ে উঠেছে। শুধু তাই নয়, বেসুরো হয়েছেন প্রবীর ঘোষালও। বর্ষীয়ান নেতা জটু লাহিড়িও দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছেন। অন্যদিকে, রাজ্য বিজেপির বৈঠকে হিন্দিভাষী নেতাদের দাপট নিয়ে সমালোচনার সুর ঘনিয়েছে সব্যসাচী দত্তের গলাতেও। ক্ষোঙ প্রকাশ করেছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং। কার্যত, রাজ্য বিজেপির অন্দরের অন্তর্দ্বন্দ্ব ক্রমশই প্রকাশ্যে চলে আসছে। এ প্রসঙ্গেই এদিন, ‘দলবদলু’ নেতাদের নিশানা করে লকেট (Locket Chatterjee) বলেন, “যাঁরা যাঁরা বেসুরো গাইছেন, তাঁরা তাড়াতাড়ি বিদায় নিন। আমরা আগে থেকেই টের পাচ্ছিলাম যাঁরা যেতে চান। তাঁরা কোনও স্বার্থ নিয়ে এ দলে এসেছেন, স্বার্থ ফুরিয়েছে তাই বেরিয়ে যেতে চাইছেন। বিদায় হোন। আমরা নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করব। আমাদের ২ কোটি ২৮ লক্ষ মানুষ ভোট দিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের ৩৭ শতাংশ মানুষ আমাদের পাশে আছেন।”

পাশাপাশি, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rajib Banerjee) মন্তব্যের সূত্র ধরে এদিন হুগলির সাংসদ (Locket Chatterjee) বলেন, “কোনও ভয় দেখানো হচ্ছে না। জুজু দেখানো হচ্ছে না। বাংলায় সন্ত্রাসের জেরে প্রায় ১ লক্ষ মানুষ ঘরছাড়া। মহিলারা সুরক্ষিত নন। এক কাপড়ে বেরিয়ে এসেছেন তাঁরা। কেউ কেউ আবেগের বশে এই ধরনের কথা বলে ফেলছেন।” বজ্রাঘাতে মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে জেলা সফর শুরু করছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সে প্রসঙ্গে, বিজেপি নেত্রী বলেন, “ওঁরা তো সরকারে আছেন। ওঁদের আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছনো উচিত। ইয়াস মোকাবিলায় এমনিতেই ওরা বিশেষ কাজ করেনি। কেন্দ্র এ বিষয়ে অনেক তৎপর। বজ্রাঘাত নিয়ে আগাম সতর্কতা জারি করা উচিত। আমরা মৃত সুস্মিতাদেবীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। ওঁদের হাতে দ্রুত ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।” যদিও, সুস্মিতাদেবীর স্বামী বলেন, “আমাদের সঙ্গে দেখা করে বেশ কিছু কাগজপত্র দিয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেসব কোথায় জমা দিতে হবে তা বলেনি। জানিও না। কিন্তু, রাজ্য সরকারের তরফে ত্রাণ পেয়েছি। ২ লক্ষ টাকার চেকও মঙ্গলবার আমার হাতে দেওয়া হয়েছে।”

আরও পড়ুন: ‘অধীরবাবুর খাস গুন্ডা বোমা ছোড়ে, একটুর জন্য বেঁচে যাই’, বিস্ফোরক অভিযোগ তৃণমূল নেতার