‘অধীরবাবুর খাস গুন্ডা বোমা ছোড়ে, একটুর জন্য বেঁচে যাই’, বিস্ফোরক অভিযোগ তৃণমূল নেতার

এই ঘটনায়, তৃণমূলের অভিযোগ কংগ্রেসের দিকে। ঘাসফুল শিবিরের দাবি, ভোটে ভাল ফল না করতে পেরেই কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই কাজ করেছে।

'অধীরবাবুর খাস গুন্ডা বোমা ছোড়ে, একটুর জন্য বেঁচে যাই', বিস্ফোরক অভিযোগ তৃণমূল নেতার
বাঁদিকে, আক্রান্ত তৃণমূল নেতা সারজু শেখ, ডানদিকে, তাঁর গাড়ির ভাঙা কাচ; নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 08, 2021 | 11:20 PM

মুর্শিদাবাদ: ভোটের পর্ব মিটলেও জারি সন্ত্রাস। বহরমপুরে তৃণমূল নেতার গাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজির অভিযোগ উঠল কংগ্রেসের (Congress) বিরুদ্ধে। অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন তৃণমূল নেতা (TMC)।

শাসক শিবিরের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে দলীয় কাজ সেরে বাড়ি ফেরার সময়ে চুয়াপুর রোডে প্রান্তিক পাড়ায় নিজের বাড়ির সামনেই আচমকা তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে কিছু দুষ্কৃতী। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান তৃণমূল নেতা। বোমার আওয়াজে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। তখন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। আক্রান্ত তৃৃণমূল নেতা (TMC) সারজু শেখ বলেন, “আমার বাড়ি থেকে ফোন আসে। বলা হয়, বাড়িতে কিছু সমস্যা হয়েছে। আমি ছুটে আসি। দেখি, বাড়ির সামনে অন্তত পঁয়ত্রিশ জন দাঁড়িয়ে রয়েছে। হাতে অস্ত্র। তখনই আমার গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে। একটুর জন্য বেঁচে যাই আমি। অধীরবাবুর পোষা গুন্ডা নিউটন আমায় মারতে চেয়েছিল। ওদের দলের কয়েকজনের সঙ্গে আমার কিছু বিষয় নিয়ে মতবিরোধ হয়। তারপর থেকেই ওরা আমার পেছনে পড়েছে।”

বোমাবাজির ঘটনায়, তৃণমূলের অভিযোগ কংগ্রেসের দিকে। ঘাসফুল শিবিরের দাবি, ভোটে ভাল ফল না করতে পেরেই কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই কাজ করেছে। যদিও, জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, “এই নামের কোনও তৃণমূল নেতা আছে বলেই শুনিনি। যদি সত্যিই এই ঘটনা ঘটে থাকে, তবে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। পুলিশ যথাযথ তদন্ত করুক ও দোষীদের শাস্তি দিক। ইচ্ছে করে কোনও রাজনৈতিক রঙ যেন লাগানো না হয়।”

ঘটনাস্থলে উপস্থিত বহরমপুর থানার পুলিশ। তৃণমূলের তরফ থেকে বহরমপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। উল্লেখ্য়, আগামিকালই বজ্রাঘাতে মৃতদের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করতে জেলা সফরে আসছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেকের জেলা সফরের আগে এই ঘটনা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

উল্লেখ্য, জন্মলগ্ন থেকেই মালদা, মুর্শিদাবাদে বিশেষ সুবিধা করে উঠতে পারেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস। বরাবরই সেখানে বাম-কংগ্রেসের দোর্দণ্ডপ্রতাপ। মুর্শিদাবাদের ২২ টি আসনে প্রায় ৭০ শতাংশ মুসলিম ভোট। সেখানে ২২ টির মধ্যে ১৮ টি আসনে এ বার জয়ী হয় তৃণমূল। অন্যদিকে, বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটকে শূন্যহাতে ফিরিয়ে দেয় মুর্শিদাবাদ। ভোট বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি ছিল, নির্বাচন আবহে মুর্শিদাবাদের মাটিতেই জোটের শরিক দল আইএসএফ ও দলপ্রধান আব্বাস সিদ্দিকির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন অধীর। অধীর-আব্বাসের এই ‘ঠাণ্ডা লড়াইয়ের’ জের কার্যত বাংলার মানুষের কাছে জোটের ভবিষ্যৎ ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয়। বিজেপির মতো প্রতাপান্বিত শক্তির বিরোধিতা একমাত্র তৃণমূল করতে পারে এই ধারণা থেকেই কার্যত নিষ্ফলা হয় জোট। সংখ্যালঘু ভোটও যায় তৃণমূলের ঘরে। ফলে, চেনা ময়দানেই ম্যাচ হারেন অধীর এমনটাই দাবি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের।

আরও পড়ুন: ‘তৃণমূলের নামে মিথ্যা অপবাদ ও কুৎসা প্রচারের জন্য দুঃখিত’, মাইকিং করে ‘ভুল স্বীকার’ বিজেপি কর্মীদের!