নিমতিতা বিস্ফোরণ-কাণ্ডে এনআইএ-র চার্জশিটে ‘খুশি’ নন প্রাক্তন মন্ত্রী

Nimtita Blast: তিনি স্পষ্টই জানিয়েছেন, এনআইএ যে চার্জশিট পেশ করেছে তাতে আদপেও আসল দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে। দোষীদের শাস্তি দিতে প্রয়োজনে আরও বড় আন্দোলনে নামবেন।

নিমতিতা বিস্ফোরণ-কাণ্ডে এনআইএ-র চার্জশিটে 'খুশি' নন প্রাক্তন মন্ত্রী
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 24, 2021 | 7:02 PM

মুর্শিদাবাদ: নিমতিতা বিস্ফোরণ-কাণ্ডে এনআইএ-এর তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন রাজ্যের প্রাক্তন শ্রম প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন (Jakir Hossain)। প্রাক্তন মন্ত্রীর অভিযোগ, এনআইএর চার্জশিটে যে দুজন দুষ্কৃতীর কথা উঠে এসেছে, তারা ছাড়াও আরও অনেকে ওই বিস্ফোরণ-কাণ্ডে যুক্ত। কিন্তু, সেই দুষ্কৃতীরা অন্যায়ভাবে ছাড়পত্র পেয়ে গিয়েছে  বলেই অভিযোগ প্রাক্তন মন্ত্রীর।

নিজে মন্ত্রী থাকাকালীন যদি  বিস্ফোরণ-কাণ্ডের তদন্ত এত শ্লথ গতিতে হয়, তবে সাধারণ মানুষের কী হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাকির। তিনি স্পষ্টই জানিয়েছেন, এনআইএ যে চার্জশিট পেশ করেছে তাতে আদপেও আসল দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে। দোষীদের শাস্তি দিতে প্রয়োজনে আরও বড় আন্দোলনে নামবেন। কী বলা হয়েছে এনআইএ-এর চার্জশিটে? বলা হয়েছে, বিস্ফোরণের সময় মারাত্মক আইডি ব্যবহার করা হয়েছিল। ফরেনসিক রিপোর্টে এমন তথ্য প্রমাণই হাতে এসেছে। সেই কারণেই  সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। ধৃত আব্দুল সামাদ ও সহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ইউএপিএ ১৬, ১৮, ২০ ধারা, বিস্ফোরক আইনের ৩,৪ নম্বর ধারা এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭, ৩২৬, ১২০ বি, ২০১, ধারায় চার্জশিট পেশ করে এএনআই।

প্রাক্তন মন্ত্রীর কথায়, “আমি এই চার্জশিটে খুশি নই। শুধু দুজন নয়, ওই ঘটনায় আরও অনেকে যুক্ত। জঙ্গি সংগঠন না অন্য কেউ ওই বিস্ফোরণের নেপথ্য়ে যুক্ত কি না তা জানা নেই। দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক। এটুকুই চাই। প্রয়োজনে মুখ্য়মন্ত্রীর কাছেও যাব আমরা।” প্রাক্তন মন্ত্রীর দাবি, ১৭ ফেব্রুয়ারি বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকেই তিনি গুরুতর অসুস্থ। একটানা ২৭ দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। বারবার জেলা থেকে কলকাতায় গিয়ে চিকিত্‍সা করাতে হয়েছে তাঁকে। এখনও সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি তিনি। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার এ হেন চার্জশিট পেশ করার মধ্যে কার্যত ‘গা-ছাড়া’ মনোভাব রয়েছে বলেই দাবি করেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী।

জাকির আরও জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ওই বিস্ফোরণ-কাণ্ডে ২২ জনকে ৫ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, রেলের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। ঘটনায় আহতদের চাকরির দাবি করেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী। গত, ১৭ ফেব্রুয়ারি মুর্শিদাবাদের নিমতিতা স্টেশনে বিস্ফোরণ হয়। গুরুতর জখম হন শ্রম প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। আরও ২২জন গুরুতর আহত হন। তদন্তভার হাতে নেয় এনআইএ। ঘটনায় শহিদুল ইসলাম নামে এক জনকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি এবং বেশ কিছু বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করেন তদন্তকারীরা। আরও দু’জনের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়।

ঘটনায় উঠে আসে সুতির তৃণমূল প্রার্থী ইমানি বিশ্বাসের নাম। জানা যায়, জাকির হোসেনের সঙ্গে গোষ্ঠী কোন্দল ছিল ইমানি বিশ্বাসের। এই বিস্ফোরণের নেপথ্যে সেই বিষয়টি কাজ করে থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। দুইদফায় ইমানিকে জেরাও করেন তদন্তকারীরা। কিন্তু, সে বার ইমানির জবাবে বিশেষ ‘সন্তুষ্ট’ হতে পারেননি তাঁরা। পরে, ওই বিস্ফোরণ-কাণ্ডে বাংলাদেশের জঙ্গিযোগের সম্ভাবনা থাকতে পারে বলেও অনুমান করেছিলেন তদন্তকারীরা। নিমতিতা বিস্ফোরণ কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও পড়ুন: অপসারিত শুভেন্দু! অধিকারী পুত্রের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ কাঁথি সমবায় দফতরের