Nadia Murder: ‘ওই মহিলার ফাঁসি চাই…’ চোখের সামনে মায়ের ঘৃণ্য নোংরা চেহারাটা দেখেছে, যা বলল বছর পনেরোর এই মেয়ে
Nadia Murder: স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, আজিজুলকে গত চার মাস ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিষয়টি জানানো হয়েছিল থানায়। কিন্তু পুলিশ সেভাবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেনি বলে অভিযোগ।
নদিয়া: ‘বাবাকে ওরা মেরে ফেলেছে, আমি সব কিছু দেখেছি। আমার বাবাকে যখন মেরে ফেলছিল, আমি ছিলাম, আমাকে ঘরের দরজা বন্ধ করে রেখেছিল…’ এক নাগাড়ে বছর পনেরোর মেয়েটা যখন কথাগুলো বলে যাচ্ছিল, স্তম্ভিত হয়ে যাচ্ছিলেন পড়শিরা। সে থানায় যেতে চাইছিল বারবার, কিন্তু নিরাপত্তার কথা ভেবে তাকে প্রতিবেশীরা আটকাচ্ছিলেন। সাংবাদিকদের সামনে হাউ হাউ করে কাঁদছিল মেয়েটা। কিশোরীর সাফ অভিযোগ, তার বাবাকে মেরেছে তারই মা, সঙ্গে মদত দিয়েছে মায়ের প্রেমিক। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার হরিণঘাটার মাঝেরপাড়া গ্রামে। সোমবার সন্ধ্যায় ওই কিশোরীর বাড়ির উঠোন খুঁড়েই তাঁর বাবার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তখনই কান্নায় ভেঙে পড়ে ওই কিশোরী। তার মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য। তার বাবার নাম আজিজুল মণ্ডল। তাঁরই দেহ উদ্ধার হয়েছে মাটি খুঁড়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, আজিজুলকে গত চার মাস ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিষয়টি জানানো হয়েছিল থানায়। কিন্তু পুলিশ সেভাবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেনি বলে অভিযোগ। চার মাসের ব্যবধানে কিশোরীর বক্তব্য অনুসারে খোঁজ চালিয়ে প্রতিবেশীরাই আজিজুলের দেহ তাঁরই বাড়ির উঠোন খুঁড়ে বার করেন।
এরপরই কান্নায় ভেঙে পড়ে কিশোরী। বলতে থাকে, “আমাকে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে বাবাকে মেরে ফেলেছে। বটি দিয়ে কোপ মারছিল। পুরো দুফালি হয়ে গিয়েছে। বাবার এখান থেকে রক্ত পড়ছিল, চোখ পুরো কালো হয়ে গিয়েছিল। ওখানে নিয়ে গিয়ে মাদুর জড়িয়ে রাখে। আমি আগেও পুলিশকে সব জানিয়েছিলাম। পুলিশ শুধু ঘুরে এসে দেখে যায়। আসামীকে ছেড়ে দেয়।” তিনি আরও বলেন, “আমি যদি বাড়ি যেতাম আমাকেও ওরা মেরে ফেলত। কারণ সবাইকে বলে দিয়েছিলাম। পুলিশ আমার কথা বিশ্বাস করেনি। আমি চাই ওই মহিলার ফাঁসি হোক…”
জানা যাচ্ছে, ওই কিশোরীর মায়ের নাম হামিদা বিবি। আজিজুল বাড়ির একটি ঘর ভাড়া দিয়েছিলেন। কয়েক বছর ধরে সেই ভাড়াটের সঙ্গেই বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন হামিদা। তাই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বচসা হচ্ছিল। অভিযোগ, হামিদা ও তাঁর প্রেমিক আজিজুলকে মারধর করা শুরু করেছিলেন। মাঝেমধ্যেই মারধর করা হত বলে অভিযোগ। তারপরই চার মাস আগে আচমকাই গুম হয়ে যান আজিজুল। সে সময়েও তাঁর মেয়ে এই অভিযোগ করেছিল। কিন্তু এতদিন পর প্রতিবেশীরাই মাটি খুঁড়ে আজিজুলের দেহ উদ্ধার করলে গোটা বিষয়টি ফাঁস হয়।
পুলিশ হামিদাকে আটক করেছে। তাঁর প্রেমিক সমীর ঘোষেরও খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা এখনই তদন্তের স্বার্থে কিছু বলতে চাননি।