TET Scam: স্বামী শ্রীঘরে, CBI আসার প্রহর গুনছেন তৃণমূল বিধায়কের আপ্ত সহায়কের স্ত্রী
TET Scam: তাপসের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই TV9 বাংলার প্রতিনিধি পৌঁছে যান প্রবীরের বাড়িতে। কী পরিস্থিতি সেখানকার?

তেহট্ট: কয়েক বিঘা জমি। মাঝে প্রাসাদপম বাড়ি। শ্বশুর পেশায় টোটোচালক, তাঁরও বিশাল বাড়ি। কীভাবে সম্ভব? নিয়োগ কেলেঙ্কারির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার আপ্তসহায়ক প্রবীর কয়ালের বয়ারবাঁধার বাড়িও তদন্তকারীদের স্ক্যানারে। তাপসের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্তে সীলমোহর দিয়েছে আদালত। এপ্রিলেই তদন্তে নেমে বিধায়কের তৎকালীন আপ্তসহায়ক প্রবীর কয়ালকে গ্রেফতার করেছিল রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা। তেহট্টে প্রবীরের বাড়িতে ৯ ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়ে বাড়ির দলিলও বাজেয়াপ্ত করে রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখা। এবার তাপসের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই TV9 বাংলার প্রতিনিধি পৌঁছে যান প্রবীরের বাড়িতে। কী পরিস্থিতি সেখানকার? কী বলছেন প্রবীর কয়ালের স্ত্রী? কীই বা বাসিন্দারা? কীভাবে এত প্রভাব? উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বুধবার সকালে তেহট্টের বয়ারবাঁধায় বিশাল বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন TV9 বাংলার প্রতিনিধি। ক্যামেরার এক ফ্রেমে গোটা বাড়ি বন্দি করা কার্যত অসম্ভব, এতই বহর সেই বাড়ির। নীল বাড়ির সামনের উঠোনই যতটা, মনে হবে একটা মাঠ। এটাই প্রবীর কয়ালের বাড়ি। যা আপাতত প্রবীর-হীন।
বাড়ির দরজা জানালা বন্ধই। দেখা মিলেছে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে। তবে তিনি দাবি করেন, প্রবীরের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই। তবে তাপস সাহার বিরুদ্ধে তদন্তের স্বার্থে প্রবীরের বয়ারবাঁধার এই বাড়িতেও সিবিআই আসবে বলে মনে করছেন তিনি। প্রাসাদপম বাড়ি বানানোর টাকা কোথা থেকে পেলেন প্রবীর? প্রশ্ন করা হয়েছিল পায়েলকে। উত্তর এড়িয়েছেন। তিনি তাঁর স্বামীর আয়ের ব্যাপারে খুব একটা বিশেষ কিছু জানতেন না বলে দাবি করেছেন। স্বামীকে গ্রেফতারির সময়ে তিনি বাড়িতেও ছিলেন না বলেন জানালেন। প্রবীরের স্ত্রী বলেন, “অফিসাররা এসেছিলেন, ৮-৯ঘণ্টা মতো ছিলেন বাড়িতে। আমার বাচ্চাটা অসুস্থ বলে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম। প্রবীরকে নিয়েই বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছিল। বাড়ির দলিল নিয়ে যায়, তবে সিল করে দিয়ে যাননি।” তিনি আরও বলেন, “প্রবীর কলকাতার দিকেই কোথাও থাকেন। আমার সঙ্গে যোগাযোগ নেই।” তবে কীভাবে চলছে সংসার? আয়ের লোক তো নেই। প্রবীরের স্ত্রী বলেন, “ছেলের খরচ বাবাই দেয়। ভাই ওষুধের দোকানে কাজ করে।”
প্রবীরের শ্বশুর পেশায় টোটোচালক। তাঁরও বাড়ি এলাকার মধ্যে নজরকাড়া। টোটো চালিয়ে এত বিশাল বাড়ি? প্রশ্ন থাকছেই। তাহলে কি নিয়োগ দুর্নীতির টাকা খেটেছে এখানেও, উঠছে প্রশ্ন।
বয়ারবাঁধায় প্রবীরের বিশাল দাপট ছিল। তিনি যে বিত্তশালী, তা নিজেই নাকি জাহির করে বেড়াতেন। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলছেন, “নিজেই সবাইকে বলে বেড়াতেন, আমি দেড় হাজার কোটি টাকার মালিক। তাপস সাহা যে গাড়ি ব্যবহার করেন, আমার দেওয়া, এটাও বলত। তাপস সাহা এই বাড়িতে এসেছিলেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও ব্যাপক প্রভাব খাটিয়েছিল। টাকা পয়সা খুব উড়িয়েছিল। ” এখন ওই এলাকায় শুধুই গুঞ্জন। স্ত্রী বলছেন, ‘খুবই কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরেই তদন্তে নামে রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখা। রুজু করা হয় স্বতঃপ্রণোদিত মামলাও। তেহট্ট এসডিপিওর দফতরে ১১ জন প্রতারিতের বয়ান রেকর্ড করা হয়। তার ভিত্তিতে ওই মামলায় গত বছরের এপ্রিল মাসে প্রবীর-সহ গ্রেফতার করা হয় আরও দু’জনকে। তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার আপ্তসহায়ক ছিলেন। যদিও প্রবীরের গ্রেফতারির পর বিধায়ক তাপস মণ্ডল দাবি করেছিলেন, তিনি প্রবীরকে কেবল চেনেন। আপ্তসহায়ক নন। প্রবীরের সঙ্গে তাঁর চেনা পরিচিতি শুধু বিধানসভা এলাকার বাসিন্দা হওয়ার সূত্রেই।
এখন চাকরি দেওয়ার নামে অনেকের থেকে টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে তাপসের বিরুদ্ধে।





