NEET UG: শুধু ইউটিউব-এর ভরসায় সর্বভারতীয় ডাক্তারি পরীক্ষায় তাক লাগালেন ভাঙড়ের জহিরুদ্দিন
Bhangar: টিউশন নেওয়ার সামর্থ্য নেই, কোচিং নেওয়ার প্রশ্ন-ই ওঠে না। বইর পাশাপাশি শুধু ইউটিউব (YouTube) ছিল তাঁর ভরসা। আর তাতেই ভর করে সর্বভারতীয় মেডিকেল প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট ইউজি (NEET UG) -তে ১৯৪৭ র্যাঙ্ক ভাঙড়ের উত্তপ্ত পাওয়ার গ্রীড এলাকার ছেলে জহিরুদ্দিন বিশ্বাস।
ভাঙড়: প্রবল ইচ্ছাশক্তি আর সংকল্পের কাছে দারিদ্র্য কখনও যে বাধা হতে পারে না, তা আর একবার প্রমাণ করলেন ভাঙড়ের জহিরুদ্দিন। টিউশন নেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই, কোচিং নেওয়ার প্রশ্ন-ই ওঠে না। বইর পাশাপাশি শুধু ইউটিউব (YouTube) ছিল তাঁর ভরসা। আর তাতেই ভর করে সর্বভারতীয় মেডিকেল প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট ইউজি (NEET UG) -তে ১৯৪৭ র্যাঙ্ক ভাঙড়ের উত্তপ্ত পাওয়ার গ্রীড এলাকার ছেলে জহিরুদ্দিন বিশ্বাস।
কথায় বলে, অদম্য জেদ আর প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকলে যে কোন কঠিন কাজ খুব খুব সহজেই করা যায়। ইচ্ছাশক্তির জেরেই কোনরকম টিউশন ছাড়া শুধু ইউটিউব দেখে মেডিকেলে র্যাঙ্ক করা যায় সেটা দেখিয়ে দিয়েছেন ভাঙড়ের জহিরুদ্দিন বিশ্বাস।কোনওরকম কোচিং ক্লাস ছাড়াই সর্বভারতীয় ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষায় (এনইইটি) বসে ১৯৪৭ র্যাঙ্ক করেছেন এই ছেলে।এলাকার বাসিন্দারা তো বটেই ভাঙড়ের প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারাও তাঁকে কুর্নিশ জানিয়েছে। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর জহিরুদ্দিন চাইছেন কলকাতা মেডিকেল কলেজে পড়তে। যদিও আর্থিক প্রতিকূলতা বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন এই তরুণ তুর্কী।
জহিরুদ্দিনের বাবা নজরুল বিশ্বাস। পাড়ার এক প্রান্তে ছোট্ট মুদি দোকান তাঁর। আর মা তহমিনা বিশ্বাস গৃহবধূ। কার্যত দিন আনা দিন খাওয়া এই পরিবারের দুই সন্তানই মেধাবী। জাহিরুদ্দিনের দিদি বর্তমানে এমএ পড়ছেন। আর শুধু ইউটিউবে পড়াশোনা করে নিটের মতো কঠিন পরীক্ষায় র্যাঙ্ক করে তাক লাগিয়ে দিলেন বাড়ির ছোট ছেলে।
জহিরুদ্দিনের বাড়ি ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড সংলগ্ন শ্যামনগর গ্রামে। যে এলাকায় সারাবছর অশান্তি লেগেই থাকে। ছেলেকে পড়াতেই হবে। কিন্তু এ পরিবেশে সম্ভব নয়। তাই জহিরুদ্দিনকে তাঁর বাবা পাঠিয়ে দেন মুর্শিদাবাদের বসন্তপুরে একটি বেসরকারি স্কুলে। আর্থিক কষ্ট সয়ে ছেলেকে ভর্তি করেছিলেন। সেখান থেকে মাধ্যমিক পাশ করার পর হাওড়া উদয়নারাণপুরের আল -আমিন মিশনে ভর্তি হন জহিরুদ্দিন। কলেজ শেষ করে এক বছর বাড়িতে বসে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন তিনি। জহিরুদ্দিন। কিন্তু টাকা পয়সার অভাব থাকায় ইউটিউব দেখে বিভিন্ন ফ্রি কোচিং ক্লাস করতেন জহিরুদ্দিন। তাতেই মিলল সাফল্য।
জহিরুদ্দিনের এই সাফল্য প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ভাঙড় ২ ব্লকের বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায় বলেন, ‘ও যেটা করেছে সেটা দুঃসাধ্য কাজ।এজন্য আমি ওঁকে কুর্নিশ জানাই’।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এনট্রান্স টেস্ট (NEET) ইউজি-এর ফল প্রকাশিত হয়েছে। সেই নিট ইউজি পরীক্ষায় রাজ্যের মধ্যে প্রথম হলেন বাঁকুড়া জেলার বাসিন্দা সৌম্যদীপ হালদার (Soumyadwip Halder)। বাঁকুড়ার সোনামুখীর শ্যামবাজারের ছাত্র সৌম্যদীপ হালদার সেই পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম এবং সারা ভারতে ১৯ তম স্থান অধিকার করেছে। এমন খবরে খুশির হাওয়া জেলা শিক্ষা মহলে। রাজ্যের প্রান্তিক এলাকা থেকে এবার একাধিক ছেলেমেয়ে সর্বভারতীয় মেডিকেল পরীক্ষায় সাফল্য অর্জন করেছেন।