‘জীব সেবাই শিব সেবা’, কাঁচরাপাড়ায় এক ফোনে খাবার, অক্সিজেন, অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন গিরি বাবা

COVID-19: আপাতত সরকারি নির্দেশে হোটেল ব্যবসা বন্ধ রয়েছে। এই সুযোগে হোটেলের অন্য কর্মচারিদের নিয়ে ' শিব সেবা'য় নেমে পড়েছেন গিরি বাবা।

'জীব সেবাই শিব সেবা', কাঁচরাপাড়ায় এক ফোনে খাবার, অক্সিজেন, অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন গিরি বাবা
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 14, 2021 | 3:06 PM

উত্তর ২৪ পরগনা: করোনার (COVID-19) প্রথম ঢেউয়েও এলাকার দুঃস্থদের আগলে রেখেছিলেন কাঁচরাপাড়ার ‘গিরি বাবা’। দ্বিতীয় ঢেউয়েও তিনিই ত্রাতা। নামটা শুনে মনে হতেই পারে, লোকটা বোধহয় সাধুসন্ত হবেন। কিন্তু একেবারেই তা নন। পেশায় হোটেল ব্যবসায়ী তিনি। পোশাকি নাম রামাশঙ্কর গিরি। তবে এ নামে খোঁজ করলে খুব কমজনই চিনতে পারেন। এলাকায় ‘গিরি বাবা’ই বেশি জনপ্রিয়। কার অক্সিজেন দরকার, কার অ্যাম্বুলেন্স দরকার, কার খাবার দরকার — ফোন করে শুধু বলতে হবে। যতটা সম্ভব বিনামূল্যে তা নিয়ে হাজির হয়ে যান গরীবের এই গিরি বাবা।

সুঠাম চেহারা। পরণে টি শার্ট, ডেনিম জিন্স। সঙ্গে মাস্ক, টুপি, গ্লাভস —করোনাকালে যা যা অত্যাবশ্যক। ঘুম থেকে উঠেই লড়াই শুরু করে দেন গিরি বাবা। কী ভাবে দুঃস্থ রোগীর বাড়িতে অক্সিজেন পৌঁছে দেবেন, কী ভাবে কোভিড আক্রান্ত রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে হাসপাতালে পৌঁছে দেবেন, কী ভাবে কোভিড আক্রান্তের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেবেন, তা নিয়ে ব্যস্ততার শেষ নেই। সব থেকে বড় কথা, এর বিনিময়ে একটি পয়সাও নেন না মানুষটি। রামাশঙ্কর গিরির কথায়, “ব্যবসা করে তো অনেক টাকাই রোজগার করেছি। তা যদি মানুষের কাজে লাগে এর থেকে আনন্দের আর কী বা হতে পারে।”

গত বছরও কোভিড এবং লকডাউনের সময় তিনি কাঁচড়াপাড়ার চার নম্বর ওয়ার্ডের একটা দুঃস্থ মানুষকেও অনাহারে থাকতে দেননি। এবারও তাঁর প্রতিজ্ঞা, কেউ যেন চিকিৎসার অভাবে না মরেন। তাই রোগীদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স, অক্সিজেন, ওষুধ, খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন কাঁচড়াপাড়ার কোভিড আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি।

আরও পড়ুন: সুগার-হাইপারটেনশন, তবু করোনাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বাড়ি ফিরলেন আটানব্বইয়ের ‘যোদ্ধা’

আপাতত সরকারি নির্দেশে হোটেল ব্যবসা বন্ধ রয়েছে। এই সুযোগে হোটেলের অন্য কর্মচারিদের নিয়ে ‘ শিব সেবা’য় নেমে পড়েছেন গিরি বাবা। লোককে জানাতে অটোয় চেপে মাইকিংও করছেন। দিচ্ছেন হেল্পলাইন নম্বর ৯৩৩০৮৩০২১৪। রামাশঙ্কর গিরি জানালেন, “বেশ কয়েকজনকে নিয়ে কোভিড ওয়ারিয়র বলে একটি টিম তৈরি করা হয়েছে। সেখানে ফোন করলে কোভিড আক্রান্তের বাড়িতে দু’বেলার হাই প্রোটিন খাবার পৌঁছে দিচ্ছি। মাঝে একদিন অক্সিজেন ছিল না। কলকাতা থেকে কিনে এনেছি। শনিবার থেকে আবার অক্সিজেনও পাওয়া যাবে। ১৫-১৬টা সিলিন্ডার রয়েছে। ফ্লো মিটার দিয়ে পরিষেবা দেব। আমরাই বাড়িতে গিয়ে তা লাগিয়ে দিয়ে আসব।