আশঙ্কার নাম করোনা, এ বছরেও চাকলায় বন্ধ লোকনাথ উত্সব
Loknath Utsav: মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, করোনা সংক্রমণের কারণেই এ বছর বন্ধ থাকছে জন্মতিথি উত্সব।
উত্তর ২৪ পরগনা: করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় গত বছরের মতো এ বছরেও বন্ধ থাকছে লোকনাথের জন্মতিথি উত্সব (Loknath Utsav)। প্রতিবছরই লোকনাথের জন্মস্থান বলে খ্যাত চাকলায় জন্মাষ্টমীর বেশ কয়েকদিন আগে থেকে লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাগম হয়। ভাদ্রমাসের পয়লা থেকে জন্মাষ্টমী পর্যন্ত চলে এই উত্সব। তবে এ বার, মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, করোনা সংক্রমণের কারণেই এ বছর বন্ধ থাকছে জন্মতিথি উত্সব।
চাকলা মন্দিরের প্রধান পুরোহিত বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে প্রশাসন উৎসব বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। ভক্ত বন্ধুদের আমার অনুরোধ, বাড়িতে বসেই পুজো করুন। এ বার ওই সময়ে কাউকে মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এমনকী জন্মাষ্টমী পালনও বন্ধ থাকবে।” ভাদ্র মাস এলেই বদলে যায় চাকলার ছবি। দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ গঙ্গার জল বয়ে নিয়ে আসেন। বাগবাজার ঘাট, বাবুঘাট-সহ একাধিক জায়গা থেকে বাঁকভর্তি জল নিয়ে আসেন ভক্তরা। গত বছর করোনার প্রথম ঢেউয়ের জেরে বন্ধ ছিল মন্দিরের দরজা। এ বছর মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে কোনওভাবেই ভক্ত সমাগমে উত্সব পালন করা যাবে না। তবে নিত্যদিনের যেমন পূজার্চনা হয় সেই ভাবে চাকলাধমে পুজো করা হবে। জন্মাষ্টমীতেও নিত্য় পুজো হবে। তবে, মন্দিরে ভক্তের অনুপ্রবেশ বন্ধ রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে। ভক্তদের কাছে পৌঁছতে বিজ্ঞাপন দেওয়ারও ব্যবস্থা করেছে মন্দির কর্তৃপক্ষ।
মন্দির বন্ধ থাকার ঘোষণায় মনভার স্থানীয়দেরও। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, “প্রতিবছর ভাদ্র মাস এলেই এলাকার চেহারাটাই বদলে যায়। গত বছরও সব বন্ধ ছিল। এ বারেও বন্ধ থাকবে শুনে মন খারাপ হচ্ছে। আমাদের কাছে এটা একটা উত্সবের মতো। কত দূর থেকে লোকজন আসেন। টানা উত্সব চলে। দিনরাতের হিসেব থাকে না।” মন্দির কর্তৃপক্ষের পরিচালন সমিতির সদস্য সন্দীপকুমার পালিত বলেন, ‘‘সরকারি বিধিকে মান্যতা দিয়ে আমরা এই বছর উৎসব না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশাসনিক মহলে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগের বছরের মতো এ বারেও কোনও অতিরিক্ত আয়োজন থাকবে না। জানি, সাধারণ মানুষ এই সময়টার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। কিন্তু, সকলের সুরক্ষার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
উল্লেখ্য়, করোনা কাঁটায় বারবার মন্দিরগুলির দুয়ার বন্ধ হয়েছে। সদ্যই খুলেছে বেলুড় মঠের দরজা। অন্য়দিকে, করোনা সংক্রমণের জেরেই সেপ্টেম্বরে কৌশিকী অমাবস্যায় টানা আটদিন বন্ধ থাকতে চলেছে তারাপীঠ। দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে এ বছর শ্রাবণ মাসে বন্ধ ছিল তারকেশ্বরের দরজাও। ভক্তরা আসতে পারলেন বাঁক কাঁধে আনার নিয়ম ছিল না। অন্যদিকে, সামনেই পুজো। সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মধ্যেই করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা। ফলে পুজোর সময়ে সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতিতে কোভিড বিধি মেনে কীভাবে দুর্গাপুজো হবে তা নিয়ে যদিও এখনও কিছু স্পষ্ট নির্দেশিকা দেয়নি প্রশাসন। আরও পড়ুন: দুয়ারে জল! নৌকায় পরিষেবা দিতে আসছে সরকার