‘বাংলায় কিছু হলে টুইট আর হাথরস, দিল্লির সময়ে মুখে লিউকোপাল্ট’, নিমতা কাণ্ডে শাহকে কটাক্ষ মমতার
নিমতায় 'প্রহৃত' বৃদ্ধার মৃত্যুতে (Nimta Case) অমিত শাহ (Amit Shah) টুইট করায় কটাক্ষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)।
পূর্ব মেদিনীপুর: “বাংলায় কিছু হলেই টুইট করেন অমিত শাহ। যখন দিল্লি, হাথরসের ঘটনা ঘটে, তখন কি মুখে লিউকোপ্লাস্ট লাগিয়ে বসে থাকেন?” নিমতায় ‘প্রহৃত’ বৃদ্ধার মৃত্যুতে (Nimta Case) অমিত শাহ (Amit Shah) টুইট করায় কটাক্ষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)।
নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে মমতা বলেন, “বিজেপির একজন সুইসাইড করেছিল কোচবিহারে। তাই নিয়ে মিথ্যা কথা বলে ১০ কিলোমিটার মিছিল করল। আর আমাদের যে তিনজন কর্মী মারা গেল, তার কোনও বিচার হল না। আজ অমিত শাহ, আমি জানি না যদি কোনও বোন মারাও যায়, জানি না কেন মারা গিয়েছে, কী ভাবে মারা গিয়েছে, কোনও মৃত্যুই দুঃখের। মা-বোনেদের ওপর অত্যাচার কখনও পছন্দ করি না। টুইট করে বলছে, বেঙ্গল কা ক্যায়া হাল হ্যায়! তুমহারা উত্তর প্রদেশ কা ক্যায়া হাল হ্যায়! হাথরস কা, দিল্লি কা ক্যায়া হ্যায়? তখন কি অমিত শাহ মুখে লিউকোপ্লাস্ট দিয়ে বসে থাকে!”
সোমবার ভোরে মৃত্যু হয় নিমতার পাটনা ঠাকুরতলার আশি বছরের বৃদ্ধা শোভারানি মজুমদারের। তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। একাধিক জায়গায় অভ্যন্তরীণ আঘাত। তার জেরে বৃদ্ধার শরীরের নানা অঙ্গ বিকল হয়ে যায়। এক মাসের আঘাত তিনি সহ্য করতে পারেননি। ট্রমা ছিল। তার জেরে সোমবার সকালে আরও একবার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। আর তার জেরেই মৃত্যু।
বিজেপি প্রথম থেকেই এই ঘটনায় অভিযোগ করছিল, বেপরোয়া মারধরেই মৃত্য়ু হয়েছে ওই মহিলার। আর এই ঘটনায় তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলেছিল বিজেপি নেতৃত্ব। সকালে প্রথমে বাংলায় টুইট করেন অমিত মালব্য। তিনি অভিযোগ করেন, বাংলার মেয়ে, কারোর মা, কারোর বোনের আজ মৃত্যু হল। তৃণমূলের লোকেরা নৃশংসভাবে তাঁকে মারধর করেছিল। সহানুভূতি জানিয়ে এক শব্দও ব্যয় করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পরিবারের ক্ষত কে পূরণ করবে? ”
এরপর টুইট করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। তিনি বলেন, “তৃণমূলের গুন্ডাদের হামলায় মৃত্যু হল বাংলার মহিলার।” তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে নিমতায় দেহ নিয়ে মৌন মিছিল বার করেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। স্থানীয় দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর দেহ। পরে নিমতা থানার সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি নেতা কর্মীরা। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেফতার করা না হলে আরও বড় আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
এদিকে, এ বিষয়ে মুখ খুলেছে তৃণূমল শিবিরও। সৌগত রায় বলেন, “এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।এই ঘটনা নিয়ে বিজেপি প্রথম থেকেই অনেক হইচই করছে। যে কারোর মৃত্যুই দুঃখজনক। বয়সজনিত কারণে মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। সব বিষয়ে রাজনীতি করাটা বাজে ব্যাপার।” টুইট করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনও।
The death of Shova Majumdar is a tragedy. What is totally unfortunate though is the Home Min peddling a narrative when the incident is under investigation. He heads a Police Force & multiple Central Agencies. Shouldn’t he show some respect to the investigative process of India!
— Derek O’Brien | ডেরেক ও’ব্রায়েন (@derekobrienmp) March 29, 2021
ডেরেক ও’ব্রায়েনও বলেন, “যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। কিন্তু কয়েকজন পর্যটক সেটাকে নিয়ে তৃণমূলকে কালিমালিপ্ত করতে চাইছে আর বিষয়টা নিয়ে রাজনীতি করতে চাইছে।” বিজেপিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তিনি প্রশ্ন করেন, “বিজেপি নারী নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলে! কিন্তু ওদের রেকর্ড কী বলছে?”